বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম
বায়তুল মোকাররম। বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ। মসজিদটি রাজধানী
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত। আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি প্রথম ঢাকাতে
বিপুল ধারণক্ষমতাসহ একটি বৃহত্তর মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেন।
১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মুকাররম মসজিদ
সোসাইটি’ গঠনের
মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। পুরান ঢাকা ও নতুন ঢাকার
মিলনস্থলে মসজিদটির জন্য ৮.৩০ একর জায়গা অধিগ্রহণ
করা হয়। স্থানটি নগরীর প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র থেকেও ছিল নিকটবর্তী। সেই সময়
মসজিদের অবস্থানে একটি বড় পুকুর ছিল। যা 'পল্টন
পুকুর' নামে
পরিচিত ছিল। পুকুরটি ভরাট করে ২৭ জানুয়ারি ১৯৬০ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রপতি আইয়ুব
খান মসজিদের কাজের উদ্ভোধন করেন।
পরবর্তীতে সিন্ধুর বিশিষ্ট স্থপতি আব্দুল হুসেন থারিয়ানিকে
মসজিদ কমপ্লেক্সটির নকশার জন্য নিযুক্ত করা হয়। পুরো কমপ্লেক্স নকশার মধ্যে দোকান, অফিস, গ্রন্থাগার
ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। ২৫ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে প্রথমবারের
জন্য এখানে নামাজ পড়া হয়। ১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এর
স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। তৎকালীন পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ
বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ
গৃহীত হয়। মসজিদে একসাথে ত্রিশ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। ধারণক্ষমতার
দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম মসজিদ। তবে মসজিদটিতে জুমার নামাজ ছাড়াও
বিশেষত রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায়, বাংলাদেশ সরকার মসজিদের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে
উন্নিত করে।
১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই
মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। বর্তমানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদটি আটতলা।
নিচতলায় রয়েছে বিপণিবিতান ও একটি বৃহত্তর অত্যাধুনিক সুসজ্জিত মার্কেট
কমপ্লেক্স। দোতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত প্রতি তলায় নামাজ পড়া হয়।
২০০৮ সালে সৌদি সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি সম্প্রসারিত করা
হয়। বর্তমানে এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এ
মসজিদের শোভাবর্ধন এবং উন্নয়নের কাজ এখনও অব্যাহত রয়েছে।
প্রতি শুক্রবারে দূরদুরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে এই মসজিদে
জুম্মার নামাজ আদায় করতে। অনেক দেশি-বিদেশি
পর্যটক বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ দর্শন করতে আসে প্রতিদিন।
No comments