ছোট ভাই কি বড় ভাইয়ের আগে বিয়ে করতে পারবে?
পরিণত বয়সে পৌঁছালে বিয়ে করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য আছে, তারা যেন বিয়ে করে নেয়। কারণ, বিয়ে দৃষ্টিকে অবনত এবং লজ্জাস্থানকে সুরক্ষিত রাখে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘বান্দা যখন বিয়ে করে, তখন সে তার অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ করে নেয়। অতএব তাকে বাকি অর্ধেক দ্বীনের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা উচিত। (বায়হাকি) আরেক হাদিসে বিয়ের প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশকারীকে নিজ অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয় বলেছেন মহানবী (সা)। (বুখারি)
বিয়ের উপযুক্ত ছেলেমেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করা অভিভাবকদের অন্যতম কর্তব্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা নিঃসঙ্গ (অর্থাৎ অবিবাহিত নারী-পুরুষ) এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ ও বিয়ের উপযুক্ত, তাদের বিয়ে দাও।’ (সুরা নুর: ৩২)
হাদিস শরিফে রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘যার সন্তান হয়েছে, সে তার জন্য একটি সুন্দর নাম রাখবে এবং তাকে জ্ঞান ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেবে। এরপর যখন সে পরিণত বয়সে পৌঁছাবে, তখন তাকে বিয়ে করিয়ে দেবে। অন্যথায় বিয়ে করতে না পেরে সন্তান যদি কোনো পাপ করে, বাবাকেও সেই পাপের দায় নিতে হবে।’ (বায়হাকি)
এসব আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায়, সন্তান বিয়ের উপযুক্ত হলে এবং সংসার চালানোর মতো সামর্থ্য থাকলে তাকে অন্য কোনো অজুহাতে বিয়ে করতে বাধা দেওয়া উচিত নয়। এখনো বোনের বিয়ে হয়নি, বড় ভাই এখনো বিয়ে করেনি, কারও বিয়ের জন্য এসব বাধা মনে করা ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ইসলাম কোথাও বিয়ের জন্য ভাইবোনের বয়সের ধারাবাহিকতা রক্ষার কথা বলেনি। বরং পরিণত বয়স ও সামর্থ্য হলেই বিয়ে করিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। সুতরাং আপনার পরিবারের অবস্থান এ ক্ষেত্রে ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত। ভদ্রতা ও শিষ্টাচার বজায় রেখে তাঁদের সামনে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে বিষয়টি তুলে ধরলে আশা করি তাঁরা বুঝবেন।
তবে শরিয়তে অনুমতি আছে বলে মা-বাবার অমতে গিয়ে হুট করে বিয়ে করে ফেলাও ঠিক হবে না। এতে তাঁরা কষ্ট পাবেন। আর মা-বাবাকে কষ্ট দেওয়া ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ।
No comments