রোহিঙ্গা আসার ৬ বছর : অনিশ্চিত প্রত্যাবাসন, মুখ ফিরিয়েছে দাতারা
৬ বছরেও কাটলো না রোহিঙ্গা সংকট। বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিলেও, কথা রাখেনি মিয়ানমার সরকার। এদিকে গত ৬ বছরে কক্সবাজারে রোহিঙ্গার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দুই লাখ। অথচ, বৈশ্বিক সাহায্যের পাশাপাশি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগও কমে গেছে।
পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি এবং প্রিয়জনের লাশ পেছনে ফেলে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাড়ি জমায় দেশটির রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট শুরু হয় শরণার্থীদের সেই ঢল। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নেয় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে। এই তথ্য জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা- ইউএনএইচসিআর এর। অবশ্য আগে থেকেই ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নিচ্ছে ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু। ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৯ লাখ ৬১ হাজার ৭২৯। তবে, বাংলাদেশের হিসাব বলছে, অনিবন্ধিতসহ মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এরমধ্যে ৩০ হাজার আছে ভাসানচরে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছিলো মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও সই হয়েছিলো। ২০১৯ সালে দুই দফা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও, মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতিতে রোহিঙ্গাদের আস্থার সঙ্কটে, ভেস্তে যায় সেই চেষ্টাও ।
চীনের নেতৃত্ব প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ আশা করেছিল, ২০২১ সালের শেষের দিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। মিয়ানমারের গড়িমসিতে সেই পরিকল্পনাও আলোর মুখ দেখেনি।
করোনা মহামারী আসার পরই, রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ কমে যায়। তাদের সহায়তায় ২০২৩ সালে ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আবেদন করে মানবিক সংস্থাগুলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে মাত্র ৩০ শতাংশ পাওয়া গেছে।
No comments