চাটমোহর শাহী মসজিদ
চাটমোহর শাহী মসজিদ
চাটমোহর শাহী মসজিদ বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ। চাটমোহর উপজেলা হতে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে অবস্থিত। এটি বাংলাদের একটি প্রত্নতত্ত্বিক স্থান। এক সময়ে মসজিদটি ধবংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। ১৯৮০’র দশকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে সম্পুর্ণরূপে নির্মাণ করে। বর্তমানে এটি একটি সংরক্ষিত ইমারত। মসজিদটিতে একটি তুঘরা লিপিতে উৎকীর্ণ একটি ফারসি শিলালিপি ছিলো। বর্তমানে শিলালিপিটি রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
ইতিহাস বলে পাবনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চাটমোহর
একদা ছিলো মোঘল-পাঠানদের অবাধ বিচরণভূমি।
আর সে সময়ে ১৫৮১ খৃষ্টাব্দে মাসুম খাঁ কাবলি নামের সম্রাট আকবর এর পাঁচহাজারী এক
সেনাপতি একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এটিই আজকের চাটমোহর শাহী মসজিদ। বইপত্রে যা এখনো
মাসুম খাঁ কাবলির মসজিদ বলেই উল্লেখ।
মসজিদটির ভেতরে দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত, প্রস্থ ১৫ হাত। ক্ষুদ্র পাতলা নকশা খচিত লাল
জাফরী ইটে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদের দেয়ালটি সাড়ে চার হাত প্রশস্থ। তিন
গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির সামনে ইদারার গায়ে কালেমা তাইয়েবা লিখিত একখন্ড কালো
পাথর এখনো প্রোথিত।
সম্রাট আকবরের একজন সেনাধ্যক্ষ মাসুম খাঁ কাবুলী এই মসজিদটি
তৈরী করেন। মসজিদটি’র উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট।
এর উপরি ভাগে তিনটি গম্বুজ এবং সম্মুখ ভাগে তিনটি খিলান আকৃতির গেট রয়েছে ও
পশ্চিমপাশে এ রকম খিলান আকৃতির আরো দুইটি গেট আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে মেহরাবের চারদিকে
ইটের কারুকার্য লক্ষণীয়। এমসজিদের অভ্যন্তরে ছোট ছোট চারটি কুলুঙ্গী রয়েছে।
মসজিদের বাইরে এবং ভেতরে দেয়ালগাত্রে জাফরী ইটের সুন্দর কারুকার্য দেখা যায়।
অনেকের মতে, এই
খিলান পরিকল্পনার মূলে আছে প্রাচীন পারস্যের সাসনীয় স্থাপত্যের প্রভাব। শাসনীয়
আমলে ইরানে এ রকম খিলান তৈরীর কৌশল উদ্ভব হয়েছিল। মাসুম খাঁ কাবুলী নির্মিত
মসজিদটি’র ভেতরে একটি কালো বর্ণের
ফলক ছিল (এটি রাজশাহী বরেন্দ্র
মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে)। ফলকে খোদাইকৃত পার্সী
অক্ষরে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাসলিপিবদ্ধ আছে। মসজিদের সামনে ইঁদারার মধ্যে কলেমা তৈয়বের
শিলালিপি দেখা যায়। পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বাজারের কেন্দ্রস্থলে এই মসজিদ
অবস্থিত।
No comments