Adsterra

রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক || মুক্তিযুদ্ধে বিদেশির অবদান

রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক || মুক্তিযুদ্ধে বিদেশির অবদান


পাহাড় পর্বত আর সবুজে ঘেরা নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি ছোট্ট একটি দেশ- ভুটান। হিমালয়ের প্রাণ জুড়ানো শীতল জলধারা সেখানকার মানুষের মন থেকে মুছে দিয়েছে সকল পঙ্কিলতা। সহজ সরল জীবনে অভ্যস্ত ভুটানের মানুষজন ভীষণ শান্তিপ্রিয়। একাত্তরে এই শান্তিপ্রিয় মানুষেরা আমাদের শান্তির জন্য পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। ভূটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরীহ অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন এবং অর্থনৈতিক ও সার্বিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেনমুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা(মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। 

       জিগমে দর্জি ওয়াংচুক ২ মে ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বহির্বিশ্বের সঙ্গে ভূটানের যোগাযোগ স্থাপন করেন। ভুটানের আধুনিকীকরণ শুরু করেন এবং গণতন্ত্রায়ণের দিকে প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তরুণ বয়সে তিনি তাঁর পিতার রাজকীয় আলাদতে শিষ্টাচার এবং নেতৃত্ব দিতে শিখেন। মহামান্য সম্রাট রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক আশি কেসাং চোদেন ওয়াংচুককে ১৯৫১ সালে বিয়ে করেন। ১৯৫২ সালে তাঁর পিতা মারা যাওয়ায় তিনি ভুটানের সম্রাট হন। তাঁর রাজ্যভিষেক ২৭ অক্টোবর ১৯৫২ সালে পুনাখা ডিজংএ অনুষ্ঠিত হয়।

      তাঁর ২০ বছরের রাজত্বকালে ভুটানের সমাজের মৌলিক পুনরাভিযোজন শুরু হয়। জিগমে দর্জি ওয়াংচুক সমাজ ও সরকার পুনর্গঠন করেছিলেন। তিনি এক প্রশংসনীয় উপায়ে ভুটানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সুসংহত করেনতাঁর রাজত্বকালে ভারত ভুটানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রধান উৎস হয়ে উঠে। 

     মহামান্য সম্রাটের প্রথম এবং প্রধানতম অগ্রাধিকার ছিল ভারতের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক অব্যাহত রাখার জন্য। দ্বিতীয় অগ্রাধিকার ছিল অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্ক রাখার। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন। ভারতের পর ভুটান প্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীনতা স্বীকৃতি দিয়েছিল। তিনি ১৯৭১ সালে জাতিসংঘে যোগদানের জন্য ভুটানকে সক্রিয় করেন। ভুটান জাতিসংঘের ১২৫ তম সদস্য হয়। ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশেই এই অকৃত্রিম সুহৃদ মৃত্যুবরণ করেন।  

 

No comments

Powered by Blogger.