সত্যিই কি মানুষ চাঁদে গিয়েছিল?
১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে মানুষ পা রাখে যা বিজ্ঞানে বড় এক অর্জন। মানব সভ্যতায় বিশাল এক সাফল্য হিসেবেও দাবি অভিযান সংশ্লিষ্টদের।
কিন্তু
অভিযানের পর থেকে নানা রকম যুক্তি ও প্রশ্ন তুলে অনেকেরই দাবি, চাঁদে
মানুষ যায়নি। এটি সম্পূর্ণ সাজানো একটি নাটক।
আক
৫৩ বছর আগে চন্দ্রাভিযান এর পেছনে নানা তর্ক, বিতর্ক এবং পক্ষে বিপক্ষের
পর যুক্তি প্রমাণ নিয়ে বলা হলো-
১৯৭৬
সালে জার্নালিস্ট বিল কেসিং এর লেখা "উইথএভার উইন টু দ্যা মুন" লেখার
মাধ্যমে। তিনি কাজ করতে নাসার একটি ঠিকাদার কোম্পানির জনসংযোগ বিভাগে। তার বইয়ের
মূল বিষয় ছিল 'মানুষ কখনো চাঁদে যায়নি, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আসলে
তিন হাজার কোটি ডলারের প্রতারণা করা হয়েছে।'
এদিকে
এ অভিযানকে অবিশ্বাস করে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে, 'চাঁদে তো বাতাস নেই তাহলে
সেখানে তোলা ছবিতে মার্কিন পতাকা উড়ছে কি করে?'
শুধু
তাই নয়,
তারা আরেকটি প্রশ্ন তুলেছেন 'প্রকাশিত ছবিতে
চাঁদের আকাশে তাঁরামন্ডল কেন দেখা যাচ্ছে না?'
ইয়োর্ক
ইউনিভার্সিটির জোত্যিবিজ্ঞানী পল ডেলিনির মতে, "বাতাস না থাকায়
পতাকাটি দাঁড়ানোর স্ট্যান্ডের সাথে একটি অনুভুমিক স্ট্রিট ব্যবহার করে ঝুলানো
হয়েছে। যার দরুন এটুকু কুচকে থাকার ফলে ছবিটি দেখে মনে হয় পতাকাটি উড়ছে। তবে
সত্যি যদি পতাকাটি বাতাসে উড়তো তাহলে অন্য সব ছবিতে তা একই ভাবে কুঁচকানো থাকতো
না। আর এই অভিযানের ঠিক তিন মাস আগে নাসার ইঞ্জিনিয়ার জ্যাকিংস লার পতাকাটির জন্য
এই বিশেষ কাঠামোর ডিজাইনটি তৈরি করেছিলেন।
এদিকে
রজিস্টার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির এস্ট্রোফিজিক্স এর অধ্যাপক ব্রায়ান কোভারলিনের
মতে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সূর্যের আলোর প্রতিফলিত হয়। যার ফলে ছবির উজ্জ্বলতা ছিল বেশ
। আর
এই উজ্জ্বল আলোর কারণে পেছনের আকাশের তাঁরা ছবিতে ম্লান হয়ে গেছে। এছাড়া সেখানে
ব্যবহৃত ক্যামেরার এক্সপোজার ও সার্টার স্প্রিড এমন ভাবে সেট করা ছিল যে চাঁদের
মাটির কাছাকাছি নানা জিনিসের ছবি খুব সহজে তোলা যায়।
আরেকটি
প্রচলিত যুক্তি ছিল,
পৃথিবীকে ঘিরে যেয়ে ভ্যান অ্যালেন বেল্ট নামক তেজস্ক্রিয়তার
পরিমণ্ডল রয়েছে তাতে নভোচারীদের মারা যাওয়ার কথা, কিন্তু তারা
কিভাবে চাঁদে গেলেন?
এই
তেজস্ক্রিয় ভ্যান অ্যালেন নিয়ে বলেছেন, এ্যাপোলো-১১ নবযানটি এমন
ভাবে তৈরি করা হয়েছিল যা ক্রুদের তেজস্ক্রিয়তা থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। এছাড়া ক্রু
যারা ছিলেন তারা চাঁদে যাওয়ার সময় তারা ভ্যান অ্যালেনে ছিলেন মাত্র ২ ঘন্টা আর
এই ভ্যান অ্যালেনের যে দুই অঞ্চলে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ সবথেকে বেশি সেখানে তারা
অবস্থান করেছেন পাঁচ মিনিটের ও সময় ফলে। তাদের উপর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব একে বারে
পড়ে নি।
অভিযানকে
ঘিরে আরেকটি প্রশ্ন উঠেছে,
অর্ধশত বছর আগে মানুষ চাঁদে যদি গিয়েই থাকে তাহলে এরপর আর যায়নি
কেন?
এই
প্রসঙ্গে জানা গেছে এখন পর্যন্ত ছয়টি অভিযানে ১২ জন নভোচারী চাঁদে হেঁটেছেন। তারা
চাঁদের যথেষ্ট নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পরবর্তীতে প্রযুক্তি আরও উন্নতি হওয়ায়
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মনুষ্যবিহীন নভোযান চাঁদে বাহিনী প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে
পেরেছেন। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাঠানোর প্রয়োজন আর পড়েনি।
২০০৯
সাল থেকে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করা একটি নভোযান চাঁদের বেশ কিছু ছবি তুলেছিল। ছবিতে
দেখা গেছে চাঁদের মাটিতে অ্যাপেলো-১১ নভোযান নামার স্পষ্ট ছাপ। দেখা গেছে
যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা এবং সেখানে পড়ে থাকা লুনার মডিউলের কিছু অংশ। আর এই সব
প্রমাণই বুঝিয়ে দেয় যে চাঁদে সত্যি একসময় মানুষ গিয়েছিল।
No comments