Adsterra

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও পুষ্টি || লিখেছেন ডা. আবিদা সুলতানা

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও পুষ্টি  || লিখেছেন ডা. আবিদা সুলতানা ||

মহিলারা সাধারণত দুইভাবে ডায়াবেটিসে ভোগেন। এক
. গর্ভ  সঞ্চারের আগে থেকেই ডায়াবেটিস, দুই. গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস। 

 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণত সন্তান জন্মদানের পর সেরে যায়। এদের পরবর্তীতে মায়ের টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা  অনেক গুণ বেড়ে যায়।

গর্ভকালীন সময়ে মায়ের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলে তা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। 

 

সকালে খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৬.১ লিটার( ১১০ মিলিগ্রাম বা ডেসিলিটার) তার চেয়ে বেশি অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘন্টা পরে ৭.৮ মিলিমোল/লিটার  (১৪০ মিলিগ্রাম/ ডেসিলিটারবা তার চেয়ে বেশি হলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হিসেবে শনাক্ত করা হয়।  এই পদ্ধতিকে বলা হয় OGTT (Oral Glucose Tolerance Test)

 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের চিকিৎসা 

 

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে খুব শক্ত ভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কেননা শক্ত নিয়ন্ত্রণ না হলে অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করে। এজন্য প্রথমে রোগীকে একটি খাদ্য তালিকা দেওয়া হয়।

গর্ভকালীন ডায়বেটিসের আক্রান্ত মায়েদের এমন খাবার দিতে হবে যা তাদের রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রিত রাখে। খাবারের পুষ্টিগুণের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। মাকে  নিয়মমাফিক খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে। এই সময় অল্প অল্প করে বারবার খেতে দিতে হবে।

এমন খাদ্য বাছাই করতে হবে যাতে চর্বির পরিমাণ কম ও বেশি আঁশযুক্ত। শর্করার উত্তম উৎস যেমন:- ভাত, দানাদার শস্য, ফলমূল ইত্যাদি গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। গর্ভবতী মায়েদের ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন:- দুধ, বাদাম, লালশাক, পালং শাক, কচু শাক কচুর লতি, মলা-ঢেলা মাছ সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার প্রদান করতে হবে। 

যদি হাঁটতে কোনো নিষেধ না থাকে তবে রোগীকে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। অনেকে মনে করেন গর্ভকালীন হাঁটাহাঁটি করা যায় না।কিন্তু যদি কোন জটিলতা না থাকে তবে সে আধা ঘন্টা হাঁটতে পারবে। এর মাধ্যমে শরীর গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত হয়। রক্ত গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং তাতেও যদি না হয় তখন তাকে ইনসুলিন দেওয়া হয়। এ সময় মুখে খাবার কোনো ওষুধ দেওয়া হয় না। যাদের গর্ভসঞ্চারের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করেন; তাদের ক্ষেত্রে গর্ভসঞ্চার হয়েছে বোঝার সাথে সাথে মুখে খাওয়ার ওষুধ বন্ধ করে  ইনসুলিন ব্যবহার শুরু করতে হবে। 

এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্ট এর ফলোআপে থাকতে হবে। আর গাইনোকোলজিস্ট যদি একা না পারে, তবে অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা  ডায়াবেটোলজিস্টের কাছে রোগীকে যেতে হবে।  জন্মের পরপরই এবং প্রতি এক ঘণ্টা পরপর বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত।

কারণ বুকের দুধ বাচ্চার রক্তের গ্লুকোজের সঠিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে গ্লুকোজ কম থাকার দরুন যেসব সমস্যা হয় তা থেকে বাঁচায়। এছাড়া জন্মের পরবর্তী সময়ের স্তন্যদান করলে মায়ের শরীর ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।


Dr. Abida Sultana


শেয়ার করে অন্যকে পয়রার সুযোগ করে দিন


 ডাঃ আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক বই আসুন সুস্থ থাকি 

No comments

Powered by Blogger.