Adsterra

পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম দেশ কানাডা

পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম দেশ কানাডা ।। Canada is the 2nd largest country in the world


কানাডা উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে অবস্থিত একটি দেশ। আয়তনের দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। দেশটি উত্তর আমেরিকার প্রায় ৪১ শতাংশ অঞ্চল নিয়ে গঠিত। কানাডার আয়তন ৯৯ লাখ ৮০ হাজার বর্গ কিলোমিটার (৩৮ লাখ ৫০ হাজার বর্গ মাইল)।

কানাডার রাজধানী অটোয়া এবং এ দেশের তিনটি বৃহত্তম মেট্রোপলিটন এলাকা হলো টরন্টো, মনট্রিল ও ভ্যানকুভার।কানাডার তেরোটি প্রদেশ ও অঞ্চলের মধ্যে আটটির সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত রয়েছে। শুধুমাত্র দুটি (আলবার্টা ও সাসকাচেওয়ান) ভূমি পরিবেষ্টিত। অবশিষ্ট আটটি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চলের সীমান্তে রয়েছে তিনটি মহাসাগর। এ দেশের পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তরে আর্কটিক মহাসাগর এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর। উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাংশে যে প্রাচীন শিলা গঠিত ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি অবস্থান করছে তাকে কানাডীয় শিল্ড অঞ্চল বলা হয়। বিরাট এই অঞ্চলটি কানাডার উত্তরাংশে হাডসন উপসাগরকে বেষ্টন করে রয়েছে। পৃথিবীর মোট ১১টি শিল্ড অঞ্চলের মধ্যে এটি বৃহত্তম। শিল্ডকথার অর্থ বর্ম বা ঢাল, তবে এ ক্ষেত্রে এর অর্থ শক্ত পাথুরে তরঙ্গায়িত ভূমিরূপ। অপর নাম- লরেন্সীয় মালভূমি।

কানাডানামটি সম্ভবত এসেছে সেন্ট লরেন্স ইরোকোয়াইয়ান শব্দ কানাটাথেকে, যার অর্থ জেলেদের ক্ষুদ্র গ্রাম। ইউরোপীদের উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে পদার্পর্ণের সূত্রে, ইউরোপীয় ঔপনিবেশীকরণের আগে বর্তমান কানাডায় হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠী বাস করতো। ১৫শ শতকের শুরুতে ইংরেজ ও ফরাসিরা আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলে পৌঁছেছিল। এরপর উত্তর আমেরিকা জুড়ে এদের বসতি গড়ে উঠে। শুরু থেকেই বর্তমান কানাডার সেন্ট লরেন্স নদী থেকে গ্রেইট অঞ্চল পর্যন্ত ফরাসিরা বিশাল বসতি গড়ে তোলে। এই কারণে, এক সময় কানাডীয় ফরাসি উপনিবেশকে বলা হতো 'নব্য ফ্রান্স'

আধিপত্যের সংঘাতে ১৭৬৬ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ফরাসি ও ইংরেজদের মধ্যে যুদ্ধ হয়। বেশ কিছু গুরুত্ভবপূর্ণ যুদ্ধে ফরাসির পরাজাতি হলে, উত্তর আমেরিকার সাত বছরের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলস্বরূপ ১৭৬৩ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ ফরাসিদের হাতে ছেড়ে দেয়। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে "উচ্চ কানাডা" এবং "নিম্ন কানাডা" নামক দুটি ইংরেজ উপনিবেশে বিভক্ত হয়ে যায়। ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে মৈত্রতার চুক্তির মাধ্যমে চারটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে গঠিত হয় কানাডা নামক রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে জারিকৃত কানাডা চুক্তি অনুসারে, দশটি প্রদেশ এবং তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত কানাডা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আইনগত রাজ্যতন্ত্রের সূচনা হয়। এর ফলে আরো প্রদেশ এবং অঞ্চল সংযোজনের পথ সুগম হয় এবং ইংল্যান্ড থেকে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এই সময় 'কানাডা' নামটি সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৩১ সালের ওয়েস্টমিনস্টার সংবিধির মাধে ই বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসন লক্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং ১৯৮২ সালে কানাডা অ্যাক্ট প্রণীত হয়। আর এর ফলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ওপর কানাডার আইনগত নির্ভরতার অবসান ঘটে। এই সূত্রে ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি ছুটি 'ডোমিনিয়ান ডে' কে পরিবর্তন করে 'কানাডা ডে' করা হয়। কানাডার বর্তমান সংবিধান ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দেই রচিত হয়।

কানাডা একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে সম্পূর্ণ সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল, কানাডার রাজত্বে রানির ভূমিকা ব্রিটিশ রাজতন্ত্র বা অন্য কোন কমনওয়েলথ রাজ্যের রাজার ভূমিকা থেকে আলাদা ছিল। কানাডীয় সংশোধনী কার্যকর করার পাশাপাশি সংবিধান আইন,১৯৮২ কানাডার অধিকার ও স্বাধীনতা সনদ কার্যকর করে।

কানাডা এমন এক ফেডারেশন যাতে সংসদীয় গণতন্ত্রভিত্তিক সরকারব্যবস্থা এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্র উভয়ই প্রচলিত। কানাডার সরকার দুই ভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকার। প্রশাসনিক অঞ্চলগুলোর তুলনায় প্রদেশগুলোতে স্বায়ত্তশাসনের পরিমাণ বেশি। দশটি প্রদেশের মধ্যে রয়েছে ওন্টারিও, কিউবেক, নোভা স্কোটিয়া, নিউ ব্রুন্সউইক, মানিটোবা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, প্রিন্স এডোয়ার্ড আইল্যান্ড, সাসকাটচেওয়ান, আলবারটা এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড ও লাবরাডর। তিনটি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ইউকোন, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিজ ও নুনাভাট। কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। গভর্নর জেনারেল জুলি পায়েত্তে এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডা দ্বিভাষিক এবং বহুকৃষ্টির দেশ। ইংরেজি ও ফরাসি দুটোই এ দেশের সরকারি ভাষা। কানাডার পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট : ৩৩৮ সদস্যের হাউজ অব কমন্স এবং ১০৫ সদস্যের সিনেট। এ দেশের প্রাদেশিক পার্লামেন্টগুলো হাউজ অব কমন্সের মতো এককক্ষবিশিষ্ট। কানাডা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর অন্যতম সদস্য। সরকারি স্বচ্ছতা, নাগরিক স্বাধীনতা, জীবনযাত্রার মান, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও শিক্ষার আন্তর্জাতিক পরিমাপে কানাডা বিশ্বে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। এই দেশটি বিশ্বের জাতিগতভাবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় এবং বহুসাংস্কৃতিক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য বহু দেশ থেকে বড়-আকারের অভিবাসনের ফলে দেশটিতে এই বৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার দীর্ঘ ও জটিল সম্পর্ক এ দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।

প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সু-উন্নত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের কারণে কানাডা বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও ধনী দেশ। কানাডার মুদ্রার নাম কানাডীয় ডলার। কানাডা বেশ কয়েকটি প্রধান আন্তর্জাতিক ও আন্তঃসরকারি প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের সদস্য। যেমন জাতিসংঘ, ন্যাটো, জি৭, গ্রুপ অব টেন, জি২০, উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরাম, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) ও জি৮ গ্রুপের সদস্য। অন্যান্য উন্নতদেশগুলোর মতো কানাডার অর্থনীতির বেশির ভাগ সেবামূলক শিল্প নিয়ে গঠিত।কাঠ ও খনিজ তেল আহরণ শিল্প কানাডার প্রধানতম দুইটি ভারী শিল্প। এছাড়া দক্ষিণ ওন্টারিও-কে কেন্দ্র করে একটি উৎপাদন শিল্পব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এগুলির মধ্যে মোটরযান উৎপাদন শিল্প প্রধানতম।

কানাডার রাষ্ট্রীয় ভাষা ইংরেজি ও ফরাসি। কানাডার কেবেক (Quebec) প্রদেশে ফরাসি ভাষা প্রাদেশিক সরকারি ভাষা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাধারণত ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি ও ফরাসি ভাষা ছাড়া এছাড়াও প্রচলিত আছে তিনটি জার্মান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভাষা− হাটারীয়, মেনোনীয়, এবং পেনসিলভেনীয়। এছাড়া প্রায় দেড় লক্ষ আদিবাসী ৭০টিরও বেশি আমেরিকান আদিবাসী ভাষায় কথা বলে। এই স্থানীয় ভাষাগুলির মধ্যে ব্ল্যাকফুট, চিপেউইয়ান, ক্রে, ডাকোটা, এস্কিমো, ওজিবওয়া উল্লেখযোগ্য। এখানকার স্থানীয় প্রধান প্রধান ভাষাপরিবারের মধ্যে আছে আলগোংকিন, আথাবাস্কান, এস্কিমো-আলেউট, ইরোকোইয়ান, সিউয়ান এবং ওয়াকাশান ভাষাপরিবার।

কানাডা হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শীতলতম দেশ। দেশটিতে ছয়টি সময় অঞ্চল বিদ্যমান রয়েছে। এই দেশের জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালে হালকা ভ্যাপসা ঠান্ডা, ভিজা কুয়াশা (কিছু সময়ে গরম রৌদ্রসম্পন্ন), শীতকালে ভীষণ ঠান্ডা, বরফাচ্ছান্ন, শুষ্ক এবং তুষারাপাত থাকে। দেশটিতে প্রতিদিন আর্কটিক বরফাচ্ছন্নের দ্বারা শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। দেশটিতে রাশিয়ার জলবায়ুর মত শৈত্যপূর্ণ এবং হিমশীতল। এই দেশে বছরে ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন থাকে।

কানাডার বিভিন্ন শহরে প্রতিবছর হাজার হাজার দর্শনার্থী বেড়াতে আসেন কানাড়ার রূপে মুগ্ধ হয়ে।

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য কানাডা একটি পছন্দের জায়গা। কানাডার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু স্থান হলো :

 

টরন্টো - কানাডার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী শহর টরন্টোঅর্থনৈতিকভাবে কানাডার সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রদেশ অন্টারিও-র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর বলে এটি দেশটির আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র। টরন্টো শহরটি অন্টারিও হ্রদের উত্তর-পশ্চিম তীরে অবস্থিত। নগরকেন্দ্রেই সেন্ট জেমস অ্যাংলিকান ক্যাথিড্রাল এবং সেন্ট মাইকেল রোমান ক্যাথলিক ক্যাথিড্রাল দুইটি ধর্মীয় স্থাপনা উল্লেখ করার মতো। শহরটি চলচ্চিত্র নির্মাণ, টেলিভিশনের জন্য অনুষ্ঠান প্রযোজনা এবং সংবাদ সম্প্রচারের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যম টরন্টো শহরেই অবস্থান নিয়েছে। টরন্টোতে থাকা বহু জাদুঘর, নাট্যশালা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সেবাগুলো পর্যটকদের কাছে শহরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। শহরকেন্দ্রের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে আর্ট গ্যালারি অফ অন্টারিও, রয়াল অন্টারিও মিউজিয়াম, হকি হল অফ ফেম এবং দ্য বেল লাইটবক্স, যেখানে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান কার্যালয়টি অবস্থিত। টরন্টো শহরে সবুজ উদ্যানেরও অভাব নেই; কুইন্স পার্ক ছাড়াও এখানে আছে ৪০০ একর আয়তনবিশিষ্ট হাই পার্ক, যার ভেতরে হাঁটার পথ, খেলাধুলার জায়গা এবং একটি চিড়িয়াখানাও আছে।

 

ভ্যানকুভার - কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে তথা কানাডার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত একটি শহর ভ্যানকুভারএটি জর্জিয়া প্রণালীর তীরে, কোস্ট পর্বতমালার পাদদেশে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সীমান্ত থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। ১৯৮৬ সালের বিশ্বমেলার পর থেকে পর্যটকদের জন্য শহরটি আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। নিউইয়র্ক ও লসঅ্যাঞ্জেলেসের পরেই ভ্যানকুভার উত্তর আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র শিল্পশহর। ভ্যানকুভারকে উত্তরের হলিউডনামেও ডাকা হয়। ভ্যানকুভার শহরটি ব্রিটিশ নাবিক ও ক্যাপ্টেন জর্জ ভ্যানকুভারের নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ভ্যানকুভারে কানাডার সর্ববৃহৎ বন্দরটি অবস্থিত।

 

হুইসলার - কানাডার সমুদ্র পার্শবর্তী একটি শহর হুইসলারএটি হুয়াই ৯৯নামেও পরিচিত। কানাডায় দর্শনার্থী প্রিয় শহরগুলোর মধ্যে এর অবস্থান দ্বিতীয়। এখানে ভ্রমণপিঁপাসুদের জন্য রয়েছে বরফময় পাহাড়, স্নোবর্ডিং, কল্পকাহিনী যুক্ত গ্রাম, বিখ্যাত সব রিসোর্ট। যা পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, কিংবা ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে বেড়াতে এলে অন্যরকম মুহূর্ত তৈরি হয়। গ্রীষ্মের ছুটিতে অসংখ্য মানুষ এখানে বেড়াতে যান। যেসব দর্শনার্থীরা শীতকালীন আবহাওয়া ভালোবাসে তাদের জন্য এটি উপযুক্ত জায়গা।

 

কুইবেক - ফরাসি কানাডিয়ান সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হলো কুইবেকশহর। শহরটি উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে পুরানো বসতিগুলোর মধ্যে একটি এবং কানাডার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর এখানে হাজার হাজার দর্শনার্থী ঘুরতে আসে। এখানে রয়েছে পুরানো কুইবাক অধিবাসীদের কবরস্থান, ১৭ শতকের ঘর-বাড়ি, গীর্জা, ক্যাফে, বিস্ট্রোস, ম্যানিকিউরেটেড স্কোয়ার এবং চটিউ ফ্রন্টেন্যাকের মতো ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। তাছাড়া এটি ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।

 

টোফিনো - কানাডার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি জেলা টোফিনোগ্রীষ্মকালে এটি দর্শনার্থীদের জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যারা মাছ ধরতে পছন্দ করে, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পছন্দ করে, ক্যাম্প করে সারারাত মজা করতে ভালোবাসে, সব মিলিয়ে যারা প্রকৃতি পছন্দ করে তাদের জন্য স্থানটি জনপ্রিয়। এছাড়াও এখানে সমুদ্র সৈকত ও বিভিন্ন পার্ক রয়েছে। যা দর্শনার্থীদের বারবার এখানে নিয়ে আসে।

ভিক্টোরিয়া - কানাডার আরেকটি দর্শনার্থী প্রিয় শহর ভিক্টোরিয়াএটি গার্ডেন সিটিনামেও পরিচিত। শহরটি পূর্বের বহু ইতিহাসের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ। ব্রিট্রিশ কলম্বিয়ার সংসদভবন এখানে আসা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। তাছাড়া এখানে রয়েছে বাটচার্ট গার্ডেন ও গোল্ডস্ট্রিম প্রোভিনশিয়াল পার্ক। শীতকালে এখানকার সমুদ্র সৈকতও দর্শনার্থীদের সমাগমে জমজমাট হয়ে ওঠে।

মন্ট্রিয়ল - কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও কুইবেক প্রদেশের বৃহত্তম শহর মন্ট্রিয়লএটির মূল নাম ভিলা মারি বা মেরির শহর। শহরটির বর্তমান নামটি এসেছে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পর্বতচূড়া মন্ট-রয়্যাল থেকে, যা শহরের কাছে অবস্থিত আইল্যান্ড অফ মন্ট্রিয়ল থেকে দেওয়া হয়েছে। শহরটি খাবার, গ্যালারি, জাদুঘর এবং বিস্ময়কর সব স্থাপনার জন্য বিখ্যাত। এই শহরে পাসপোর্ট না থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। সব মিলিয়ে শহরটি কানাডায় ঘুরতে আসা মানুষের কাছে জনপ্রিয়।

অটোয়া - কানাডার রাজধানী অটোয়াজনসংখ্যার বিচারে অটোয়া দেশটির চতুর্থ হত্তম নগরী। শহরটি পাবলিক পার্ক, জাদুঘর ও ভিক্টোরিয়ান যুগের স্থাপনার জন্য বিখ্যাত। শহরটির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে পার্লামেন্ট হিল, যেখানে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল গ্যালারী অবস্থিত। তাছাড়া এখানকার বরফশীতল আবহাওয়া ও গ্রীষ্মকালে নৌকায় করে ট্রি-লাইন রাউডাউ খালে ঘুরে বেড়ানো দর্শনার্থীদের কাছে ভীষণ প্রিয়।

লেক লুইস, আলবার্টা - বনফ ন্যাশনাল পার্কে আলপাইন শিখরের পাদদেশে অবস্থিত, লেক লুইস সহজেই কানাডার অন্যতম সুন্দর আকর্ষণ। স্ফটিক-নীল জল এবং অত্যাশ্চর্য ভিস্তাসের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য প্রচুর পর্যটকদের ধাক্কা দেওয়া ভাল। গ্রীষ্মে একটি শান্ত গন্ডোলা যাত্রা এবং শীতের মাসগুলিতে আইস স্কেটিং বুকিং সহ হ্রদে প্রচুর কাজ রয়েছে। লেক লুইসের নিকটবর্তী রিসর্ট গ্রামটি কানাডার সর্বোচ্চ জনসংখ্যা 1,540 মিটার (5,052 ফুট)।

• 'নহান্নি জাতীয় উদ্যান রিজার্ভ, উত্তর পশ্চিম অঞ্চল '

১৯৭৮ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য মর্যাদা দেওয়া এটি বিশ্বের প্রথম স্থান। এটি অবাক হওয়ার কিছু নেই - উত্তর পশ্চিম অঞ্চলগুলির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এই রিজার্ভটি মূল উত্তর প্রান্তরের ৩০,০০০ বর্গকিলোমিটারের বৈশিষ্ট্যযুক্ত। পার্কটি ম্যাকেনজি পর্বতমালার প্রাকৃতিক অঞ্চলকে সুরক্ষিত করে এবং নাহনি নদীতে রয়েছে, যা পাহাড়ের উপত্যকাগুলি এবং গিরিখাতগুলি দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীর দুরন্ত বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে সালফার হট স্প্রিংস এবং ভার্জিনিয়া জলপ্রপাত, নায়াগ্রা জলপ্রপাতের চেয়ে দ্বিগুণ খাড়া এবং একটি খুব সুন্দর এক সহজেই অন্তর্ভুক্ত কানাডার জলপ্রপাত। পার্কটিতে নেকড়ে, কাঠের মাংসের ক্যারিবিউ, পাহাড়ী ছাগল এবং কালো ভাল্লুক সহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী রয়েছে।

কানাডার বিভিন্ন অঞ্চল বিভিন্ন ডেজার্টে বিশেষজ্ঞ। কানাডিয়ান সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেয় এমন সমস্ত ডেজার্টের মধ্যে অন্যতম খাবার হচ্ছে - মাখন তারাতারা ,ন্যানাইমো বার, ব্লুবেরি গ্রান্ট, ফ্ল্যাপার পাই, ফ্ল্যাপার পাই, সাসকাটুন বেরি পাই ,পাউডিং চোমেউর, মিষ্টি ব্যানক ইত্যাদি।

কানাডার উন্নত জীবনধারা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা ব্যবস্থা, দর্শনীয় স্থান ইত্যাদির কারণে কানাডা অনেকের স্বপ্নের শহর।

No comments

Powered by Blogger.