স্কুল পালিয়ে রবীন্দ্রনাথ হননি, হয়েছেন শাহরিয়ার সোহাগ
শাহরিয়ার সোহাগ বাংলা ভাষায় লেখালেখি করে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে তিনি বেশ পরিচিত নাম। খুব অল্প বয়সেই লেখালেখি শুরু করে এখন পর্যন্ত তার প্রকাশিত বই ১১ টি। যার প্রায় সবগুলোই পেয়েছে পাঠপ্রিয়তা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই মন্দার পৃথিবীতে হাতেগোনা যে কজন লেখক মনে প্রানে লেখালেখি চর্চা করেন, পুরোদস্তুর লেখক বলতে আমরা যেমনটা বুঝি, শাহরিয়ার সোহাগ তাদেরই একজন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস অসমাপ্ত বন্ধুত্ব বেশ পাঠকীয়তা পায়। প্রথম বইয়য়ের এমন সাফল্যে লেখা এবং পাঠকদের প্রতি যেন তার দায়বদ্ধতা আরো বেড়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতাই চেনা বন্ধু অচেনা পথ, হলুদ বাতির হাসি, লং জার্নি, লেখিকা, প্রিয়ন্তিকা লিভ টুগেদার, চুড়িহাট্টা মোড়, প্রাক্তন উপন্যাস এবং কাব্যগ্রন্থ আমার শহরে তোমার গল্প, আবিদা প্রকাশিত হয়। পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ২০১৯ সালে স্মরণকালের যে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনা হয়েছিল তারই ছায়া অবলম্বনে একটি ট্রাজেডি উপন্যাস লেখেন শাহরিয়ার সোহাগ। চুড়িহাট্টা মোড় নামের এই উপন্যাসটি তার পূর্বের সব লেখাকেই ছাড়িয়ে যায়। প্রেমিকা থেকে জীবনসঙ্গিনী হওয়া মানুষটার নামে তার কাব্যগ্রন্থ আবিদা পেয়েছে পাঠক প্রিয়তা। ব্যক্তিগত এই লেখালেখি ছাড়াও চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন গবেষণা, জীবনী এবং টিভির নাটক লিখে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই লেখক। টিভি নাটক লেখার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন বেশ কিছু নাটককে। সুযোগ পেলে এখনো অভিনয় করেন মঞ্চনাটকে। লেখার এই মানুষটি ছবি তুলতেও বেশ পটু। তার তোলা অনেকগুলো ছবি দর্শপ্রিয়তা পেয়েছে, রাতারাতি ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। স্কুল জীবনে গল্প কবিতা লেখার প্রয়োজনে স্কুল পালিয়েছেন বহু। ক্লাসে স্যার পড়িয়েছেন স্কুল পালালে রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না। স্কুল পালিয়ে লেখালেখির যে শুরুটা করেছিলেন স্কুল জীবনে, তারই ধারাবাহিকতাই আজকে তিনি হয়ে উঠেছেন শাহরিয়ার সোহাগ।
যশোর জেলার একটি উপজেলা শহর চৌগাছা। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে চৌগাছা উত্তররণ সিনেমা হলের সামনে ভাড়া বাসাতে জন্ম হয় শাহরিয়ার সোহাগের। মা রাশিদা খাতুন স্থানীয় কয়ারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে শাহরিয়ার সোহাগ ছোট। জন্মের পর থেকেই বাবা এবং মায়ের ভূমিকা তে থাকা মা রাশিদা খাতুন ই তার লেখালেখির অনুপ্রেরণা। নিজেকে লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তার মা-ই তাকে সহযোগিতা করেছেন সব সময়। হাতে গোণা কিছু বন্ধু দিয়েছেন উৎসাহ। স্কুল, কলেজের কোনো শিক্ষকের থেকে উৎসাহ পাননি। তবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সময়ের শিক্ষকগুলো তার ব্যতিক্রম। উৎসাহ দিয়েছেন, এমনকি উৎসাহ দিতে বইমেলাতেও গিয়েছেন। ঢাকা কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তার লেখা লিখিতে।
ব্যক্তি জীবনে শাহরিয়ার সোহাগ বিবাহিত। তার সহধর্মিনী ডা. আবিদা সুলতানা একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত আছেন। সেই সাথে বিভিন্ন রোগ নিয়ে সচেতনতা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বেশ সরব। এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে স্বাস্থ্য পরামর্শ বিষয়ক তার প্রথম বই আসুন সুস্থ থাকি।
আজ ১৭ সেপ্টেম্বর লেখক, নাট্যকার, আলোকচিত্রী শাহরিয়ার সোহাগের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন শাহরিয়ার সোহাগ। ঢাকা ভয়েজ পরিবারের পক্ষ্য থেকে আপনাকে শুভেচ্ছা, আগামির জন্য শুভকামনা।
No comments