Adsterra

হুমায়ুন ফরিদী, বাংলাদেশের অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র

ঢাকা ভয়েজ  dhaka voice; বাংলাদেশের অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হুমায়ুন ফরিদী


বাংলাদেশের অভিনয় জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ও কিংবদন্তি হুমায়ুন ফরিদী।হাসিখুশি এই ব্যাক্তিটিকে যেকোন চরিত্রে বেশ মানাতো।কখনো গরীব এর বেশ,কখনো উচ্চবিত্তের,কখনো রিকশাচালক কখনো পুলিশ,কখনো চুর আবার কখনো ভিলেন।কোন চরিত্রেই তার কমতি ছিলনা।পানি যেমন যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে,হুমায়ুম ফরিদীও ঠিক সেই ধরণের মানুষ ছিলেন, যখন যে চরিত্রে অভিনয় করতে বলা হতো সে সেই চরিত্রটাকেই নিজের মতো করে অভিনয় করে ফুটিয়ে তুলতো।তার অভিনয়ে সেই সাদাকালো টিভির যোগ থেকে এখন পর্যন্ত সকল দর্শক পলকহীনভাবে তাকিয়ে থাকে।তার অভিনয়ে ছিল এক অনন্য জাদু।


হুমায়ুন ফরিদী ব্যাক্তিগত তথ্য

  • জন্ম : ২৯ মে ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায়
  • মৃত্যু : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১২ সালে ঢাকার ধানমন্ডিতে
  • পিতা :  এটিএম নূরুল ইসলাম
  • মাতা : বেগম ফরিদা ইসলাম
  • জাতীয়তা :  বাংলাদেশী
  • নাগরিকত্ব : বাংলাদেশ
  • পেশা : অভিনয়
  • কর্মজীবন :  ১৯৮১-২০১২
  • শিক্ষা :  অর্থনীতি,জাবি
  • দাম্পত্যসঙ্গী : মিনু(১ম) ও সুবর্ণা মোস্তফা(২য়)
  • সন্তান : ১জন,শারারাত ইসলাম দেবযানী(মেয়ে)
  • পুরষ্কার : জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার ও একুশে পদক(মরণোত্তর)



সংক্ষিপ্ত বিবরণ হুমায়ুন ফরিদী

হুমায়ুন ফরিদীর বাবা এটিএম নূরুল ইসলাম এবং মা বেগম ফরিদা ইসলাম। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে হুমায়ুম ফরিদী ছিলেন দ্বিতীয়। তার জন্ম হয় ২৯ মে ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায়। ১৯৬৫ সালে বাবার চাকরির সুবাধে মাদারিপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। আর সেখান থেকেই তার প্রথম অভিনয় জীবন শুরু। মাদারিপুর থেকেই নাট্য জীবনে প্রবেশ করেন। তার নাট্যাঙ্গনের গুরু ছিলেন বাশার মাহমুদ। হুমায়ুন ফরিদী তার গুরুর “শিল্পী নাট্যগোষ্ঠী”নামের এক সংগঠনে যুক্ত হয় এবং কল্যান মিত্রের “ত্রিরত্ন” নাটকে “রত্ন” চরিত্রে অভিনয় করেন। ”রত্ন” চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম দর্শকদের সামনে অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।



এইচএসসি পরীক্ষার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব-রাসায়নিক বিভাগে(স্নাতক) ভর্তি হন। কিন্তু তখন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। তিনিও সব বাদ দিয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে যুদ্ধ শেষে তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নাট্য উৎসব হয়।সেই নাট্যোৎসব এর অন্যতম সংগঠক ছিলেন হুমায়ুন ফরিদী। এই উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যোঙ্গনের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন।তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন। এর পর থেকে একের পর এক কাজ করে যেতেই থাকে এবং তার অভিনয়ে মুগ্ধ হয় দর্শকরা। ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থাতে বিশিষ্ট নাট্যকারসেলিম আল দীনের সাথে সম্পর্ক ছিল তার।


দাম্পত্য জীবনঃ হুমায়ুন ফরিদী ১৯৮০ সালে মিনুকে বিয়ে করেন। এবং সেই সংসারে তার একমাত্র কন্যা শারারাত দেবযানী জন্ম নেয়। ১৯৮৪ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এবং একই সালে তিনি অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে সুবর্ণা মোস্তফার সাথেও বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।


মৃত্যুঃ রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণে তাকে একবার ঢাকা মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন। বাসায় ফেরার পর ১৩ই ফেব্রুয়ারী তিনি বাথরুমে গিয়েছিলেন শরীর দূর্বল থাকায় মাথা ঘুরিয়ে তিনি বাথরুমে পড়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। সেই আঘাতেই তার মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুকালে হুমায়ুন আহমেদ এর বয়স ছিল ৬০ বছর।


হুমায়ুন ফরিদী পুরষ্কার ও সম্মাননা

মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন। .২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার হুমায়ুন ফরিদীকে দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা “একুশে পদকে” ভূষিত করেন(মরণোত্তর)। নাট্যোঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ৪০ বছর ফুর্তিতে হুমায়ুন আহমেদকে সম্মাননা প্রদান করেন। কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে আজীবন স্মরণে রাখবেন বাঙ্গালী।

No comments

Powered by Blogger.