Adsterra

পাস মার্ক ৩৩ নম্বরে কেন?

পাস মার্ক ৩৩ নম্বরে কেন ঢাকা ভয়েজ, dhaka voice,

আমরা সবাই জানি, পরীক্ষায় ৩৩ নম্বর পেলেই সে সাবজেক্টে পাশ করিয়ে দেয়া হয়।  কিন্তু আপনাদের মনে কি একবারও একটি প্রশ্ন জেগে ওঠে নাপাস মার্ক কেনই বা ৩৩ নম্বরে হবে৩০, ৩২, ৩৫ বা ৪০ এ নয় কেন? আসুন আজ এমন একটি অদ্ভুত  প্রশ্নের উত্তর বের করব।

ক্লাস পরীক্ষায়, বার্ষিক পরীক্ষায়, কিংবা বিশেষ করে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করতে হলে ৩৩ নম্বর পেতেই হবে।  বত্রিশ পেলেই ফেল বলে গণ্য করা হয়।  আমাদের উপমহাদেশের কিছু কিছু রাষ্ট্রে যেমন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থায় শতবর্ষ ধরে এমনই এক নিয়ম চালু রয়েছে।

আপনারা জানেন কি ম্যাট্রিক পরীক্ষার প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছিল?

১৮৫৮ সালে উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা চালু করা হয়। এখানে একটি মজা তথ্য জানিয়ে রাখি, তৎকালীন সময়ে এসএসসি বা মেট্রিক পরীক্ষাকে ম্যাট্রিকুলেশন বলা হত। ১৮ শতকে ব্রিটেনের স্থানীয় ছাত্রদের জন্য  পাসের নম্বর ছিল ৬৫।  কিন্তু উপমহাদেশে ছাত্রদের জন্য পাস নম্বর কত নির্ধারণ হবে তা নিয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ  দ্বিধা-দ্বন্ধে পড়ে যায়। 

বিভিন্ন তথ্যসূত্র মতে, ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে মূলত সে সময়ে ইংরেজ সমাজে একটি ভুল বিশ্বাস প্রচলিত ছিল। The people of sub- continent are half as in intelligence and skill as compare to the british.  বাংলা পরিভাষায় বোঝায়বুদ্ধি ও দক্ষতায় উপমহাদেশের মানুষ ইংরেজদের তুলনায় অর্ধেক 

আপনারা জেনে অবাক হবেন ঠিক এরূপ একটি ভ্রান্ত ও মনগড়া ধারণা থেকে ব্রিটিশরা উপমহাদেশে ছাত্রদের জন্য পাস মার্কের একটি শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়। যা কিনা তাদের দেশের পাস মার্ক শতাংশ অর্ধেক। অর্থাৎ পাশ মার্ক ৩২.৫। মূলত এর ধারাবাহিকতা তখনকার সময়  ম্যাট্রিকুলেশন  এর পাস নম্বর ৬৫ এর অর্ধেক বা ৩২.৫ নির্ধারণ করা হয়।

আপনাদের আরেকটি তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি, ১৮৫৮ সাল থেকে ১৮৬০ সাল পাস নম্বর ৩২.৫ ছিল। পরবর্তীতে ১৮৬১ সালে গণনা করার সুবিধার্থে পাস মার্ক ৩২.৫ থেকে বৃদ্ধি করে ৩৩ করা হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত পাস মার্ক ৩৩ নম্বর হিসেবেই চলে আসছে আমাদের এই উপমহাদেশের রাষ্ট্র গুলোতে। যদিও আমরা  উপমহাদেশীয় শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশকারীদের চেয়ে কম বুদ্ধিদীপ্ত বা কম তীক্ষ্ণ ছিলাম না। উল্টো আমাদের সাহিত্যের সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার, ব্যবসা-বাণিজ্য দক্ষতা এবং সভ্যতার উচ্চবান দেখে  তারা আমাদের উপমহাদেশে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য প্রলুব্ধ  হয়েছিল। অবশেষে আমরা আমাদের অদম্য  আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছে এবং তাদের শোষণ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পেরেছি। কিন্তু ১৫০ বছর আগে সমাপ্তে ঘটনা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শৃংখল থেকে আমরা আমাদের মনকে মুক্ত করতে পারিনি ।  তাই খুব আশ্চর্যের বিষয় হলো আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্রিটিশ কর্তৃক গঠিত ৩৩ নম্বরে উত্তীর্ণ হওয়ার নিয়ম দীর্ঘ ১৫০ বছর পরেও বদলায়নি।

No comments

Powered by Blogger.