Adsterra

আধুনিক পারমাণবিক বোমার শক্তি লিটল বয় এর থেকে ৮০ গুণ

আধুনিক পারমাণবিক বোমার শক্তি লিটল বয় এর থেকে ৮০ গুণ, নঢাকা ভয়েজ, dhaka voice,;

পারমাণবিক হামলার হুমকি দিচ্ছে রাশিয়া, কম যায় না প্রতিপক্ষ আমেরিকা। এই দুই দেশের কাছেই আছে বিশ্বের নব্বই শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্র। হুমকি ধামকি, হামলা, পাল্টা হামলা কথা নিয়ে চলছে বিস্তর আলাপ। সেই আলাপ পাশে তুলে রেখে চলুন আমরা আরেকটু এগিয়ে কল্পনায় চলে যাই।

বর্তমানে পৃথিবীর কোনো স্থানে পারমাণবিক হামলা হলে সেটা কতটা ভয়াবহ হবে? এ হামলা সেখানকার মানুষ কতটা অনুভব করবে? নাকি কিছু বুঝে উঠার আগেই সব শেষ? কি ঘটতে পারে সে সময়? সেটা দেখার মত কি কেউ থাকবে?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমিয়া ও নাগাসিকার শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীর ইতিহাসে মানুষ মারার জন্য এই অস্ত্রের ব্যবহার আজ পর্যন্ত ঐ প্রথম ঐ শেষ। হিরোশিমায় ব্যবহৃত লিটল বয় নামক এটম বোমাটি শক্তি ছিল ১৫ কিলো টন টিএনটির সমান। কিন্তু আজকের সবচেয়ে পারমানবিক বোমাটি লিটল বয় এর ৮০ গুণ বেশি। এমন বিস্ফোরণের আশেপাশে কেউ যদি থেকে থাকে বেঁচে গেলেও জীবনের বাকি দিনগুলো মৃত্যুর প্রহর গুণবেন তিনি।

প্রথমেই বিস্ফোরণে তৈরি হওয়া ব্লাস্ট ওয়েভ চিরচেনা চারপাশ সব মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিবে। ভেঙে পড়বে উচু উঁচু সব ভবন। মানুষজন উড়ে যাবে টিস্যু পেপারের মতো। নিমিষেই সব ছাইয়ের মত উড়বে। চোখ ঝলসানো তীব্র আলোর সঙ্গে গায়ে আছড়ে পড়বে তাপ আর তেজস্ক্রিয়তা। বিস্ফোরণ স্থলে এ গ্যাসে তৈরি আগুনের গোলা, এর ভিতরে সব কিছু বাষ্পীভূত করে ফেলবে। এই ছাই আর বাষ্প তৈরি কবে দানবীয় ক্লাউড।

নিজেকে বাঁচানোর জন্য হাতে আছে মাত্র কয়েক সেকেন্ড, কি করণীয় তখন?

নিউক্লিয়ার এক্সপেশনে সৃষ্ট তীব্র আলোতেই ত্বক পুড়ে যাবে। জাপানের সেই বিভীষিকায় পঞ্চাশ শতাংশ মৃত্যুর কারণ ছিল এই আলোর ঝলকানি। ওই আলো চোখে পড়লেই অন্ধ হয়ে যাবে মানুষ। এই ঘটনা দিনে ঘটলে ফ্ল্যাশ ব্লাইন্ড থাকবে দুই মিনিট। কিন্তু রাতে এই বিস্ফোরণ দেখলে ভুগতে হবে আরো লম্বা সময়।

এর মধ্যেই নিরাপদ জায়গায় সরে না গেলে বাঁচার আর কোনো আশা নেই। সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে নিউক্লিয়ার ফায়ার বল আকাশের সমান বড় আর উঁচু হয়ে উঠবে। ব্লাস্টার ওয়েভে সেখানকার মানুষ সহ, তার পায়ের নিচের মাটি ও পুড়ে যাবে। তারপর ধেয়ে আসবে থার্মাল রেডিয়েশনের ধাক্কা। তারপরে রইবে বোমা থেকে সৃষ্ট থার্মাল রেডিশনের প্রায় পুরোটাই ছড়িয়ে পড়বে চারপাশে। বিস্ফোরণ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে থাকলেও এতে মুহুর্তেউ চামড়ায় তৈরি হবে ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন। ফার্স্ট ডিগ্রি বার্নেও চলার শক্তি হারাবে লোকজন।

বিস্ফোরণের এক মিনিটের মধ্যেই গামা আর নিউট্রন রেডিয়েশনে আক্রান্ত হবে সব মানুষ সবকিছু। ব্লাস্ট ওয়েভ আর হিট ওয়েভ থেকে বাঁচতে পারলেও এই তেজস্ক্রিয়তা থেকে বাঁচতে পারবেনা কেউ। পুরো পরিবেশ রেডিও এক্টিভি হয়ে উঠবে। তীব্র তেজস্ক্রিয়তায় মস্তিষ্ক অচল হয়ে যাবে শরীরে দেখা দিবে ক্যান্সার। রক্তের শ্বেত কণিকা কমে গিয়ে সেখানে তৈরি করবে সংক্রমণের তীব্র ঝুঁকি। এরপরেও যদি কেউ বেঁচে থাকে বা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকে বিস্ফোরণ স্থল থেকে, তাহলে কয়েক মিনিট সময় পাওয়া যাবে। দৌড়ে কংক্রিটের তৈরি চার দেয়ালে ভেতরে লুকাতে হবে অন্তত ২৪ ঘন্টার জন্য। কোনো কিছুই না ভেবে শরীরের পোশাক খুলে ফেলতে হবে তৎক্ষণাৎ। কারণ তাতে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ লেগে গেছে। পোশাক খুলে ফেলে সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করে নেয়ায় তখনকার কাজ। হয়তো বিদ্যুৎ থাকবে না সে সময়। থাকলে ও এসি বন্ধ রাখতে হবে যাতে বাইরে বাতাস ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। বাকিটা সময় এবং পরিস্থিতির হাতে।

 

No comments

Powered by Blogger.