সোনিয়ার সঙ্গে জড়ানোর পরই আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে : তানিয়া
কণ্ঠশিল্পী এসআই টুটুল ও অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদকে শোবিজে আদর্শ ও সুখী দম্পতি হিসেবে বলা হতো। ১৯৯৯ সালের ১৯ জুলাই তাদের বিয়ে হয়। এ সংসারে পাঁচ সন্তান রয়েছে। তারা হলেন— অনয়, শ্রেয়াস ও আরশ। আর আয়াত ও সামিয়াকে দত্তক নিয়েছেন তারা।
দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে কোনো ঝামেলা ছাড়াই চলছিল টুটুল-তানিয়ার সংসার জীবন। তবে হঠাৎ ছন্দপতন।
শোনা যায়, বিচ্ছেদের আগে প্রায় পাঁচ বছর ধরেই দুজনে আলাদা বসবাস করছিলেন। এরপরই বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা।
এরপর গত বছর দ্বিতীয় বিয়ে করেন টুটুল। নতুন স্ত্রীর নাম শারমিন সিরাজ সোনিয়া।
যদিও তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে সেভাবেই দুজনের কেউ তেমন কিছু জানাননি এতোদিন। এবার মুখ খুললেন তানিয়া আহমেদ। জানালেন, সংসারটা টিকে থাকুক এই চেষ্টা তিনি সবসময় করেছেন। কিন্তু শেষ অব্দি আর টিকে থাকেনি।
উভয়ের মধ্যে মতের অমিল, বোঝাপড়া না হওয়ায় ক্রমেই দূরত্ব দূরত্ব বাড়ছিল। পরে তো এসআই টুটুল তাকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তানিয়া আহমেদ বলেন, ‘বাস্তব জীবনে আবেগটা অন্য রকম। প্র্যাকটিক্যাল লাইফে এটা কঠিন। এটা যখন জীবনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে, তখন মনে হয়েছে একটু একটু করে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো একটা জায়গায় গিয়ে মেলেনি। মানুষ বলবে তানিয়া আপা এমনিতেই আপনার একটা পাস্ট লাইফ ছিল। এখন আবার কেন। সাধারণত মেয়েরা এই সাহসই করে না। কিন্তু লাভ হয়নি।’
টুটুলের সঙ্গে সংসার করার সময়েই তানিয়া বুঝতে পারেন তাদের মধ্যে মিথ্যা কিছু একটা দাঁড়িয়েছে। তানিয়া বলেন, ‘প্রতিনিয়ত যে মানুষটার সঙ্গে আমার সমস্যা চলছে, একসময় মনে হয়েছে দুজনের মধ্যে মনের মিল না থাকার চেয়ে মনে হয় সত্য ভাষণটাই জরুরি দরকার।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শারমিন সিরাজ সোনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ানোর পর টুটুল আর তানিয়ার সম্পর্কের ফাটল ধরে। তখন এসআই টুটুল যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। সেই সময় তানিয়া চেষ্টা করেও টুটুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বুঝতে পারেন, টুটুল তাকে ব্লক করে রেখেছেন। তারপরও একের পর এক তিনি এসএমএস দিয়েছেন। পরে তার কাছে মনে হয়েছে টুটুল তাকে ছাড়া থাকতে চায়। তার মতোই তাকে থাকতে দেওয়া দরকার। সেই সময়ই তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেন, তাদের সম্পর্ক হয়তো আর থাকছে না।
তানিয়া বলেন, ‘যেদিন মনে হয়েছে টুটুল আমার আমার সঙ্গে থাকতেই চায় না, সেদিনই আমি টুটুলকে সবকিছু থেকে ব্লক করে দিই। আমাদের সন্তানেরা সেখানে আছে। এখন আমার বাচ্চারাই ফোন দেয়। তাদের সঙ্গে কথা হয়। আমি চাই না বাচ্চারা অসম্মান করা শিখুক। তাদের বাবাকে অসম্মান করুক চাই না। তবে এই ব্লক আর কোনো দিন খুলব না। আমি যে টুটুলকে বিয়ে করেছিলাম সেই টুটুলকেই চেয়েছি, এসআই টুটুলকে চাইনি।’
তানিয়ার মতে তারকাখ্যাতি পাওয়ার পর একটু একটু করে বদলে যেতে থাকেন টুটুল। একটা সময়ে সে বদলে যাওয়া অপরিচিত হয়ে মানুষের মতো হয়ে উঠেন যেন। তাই এসআই টুটুল নয়, আগের শুধু টুটুলকে চাইতেন তানিয়া। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে মান–অভিমান চলত।
তানিয়া বলেন, ‘টুটুল আমার ওপর খেপে গিয়েছিল। ও আমাকে বলত, “আমার সাকসেস তোমার সহ্য হচ্ছে না।” তার সাকসেস নাকি আমার সহ্য হচ্ছে না। ও আমার ভালোবাসার জায়গাটা বুঝতেই পারল না। আমি জীবনে একটা উইশ পাইলে বলতাম, তুমি সেই আগের টুটুল হয়ে যাও।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তানিয়াকে ডিভোর্সের আট মাস পর শারমিনকে বিয়ে করেন টুটুল। সেই সময় টুটুল গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘তানিয়ার সঙ্গে আমি পাঁচ বছর আলাদা ছিলাম। গত বছর আমাদের অফিশিয়াল ডিভোর্স হয়।’
No comments