Adsterra

ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভারত কেন আর রাখঢাক করছে না?

ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভারত কেন আর রাখঢাক করছে না? ঢাকা ভয়েজ,  dhaka voice;

গত শনিবার ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যরা ৯ শতাধিক মানুষকে হত্যা এবং বহুজনকে জিম্মি করে। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার নিন্দা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে লেখেন, ‘ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে ভারত ইসরায়েলের পাশে রয়েছে।’ পরদিন এক্সে বিজেপি লিখেছে, ‘গতকাল ইসরায়েল একটি কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার মুখোমুখি হয়েছে। যেভাবে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বাইকে টার্গেট করা হয়েছিল। ইসরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং তাদের সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দিয়েছে।’ 


ভারত স্পষ্ট করেই হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেছে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকার এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রসঙ্গ সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছে। বিপরীতে বিরোধী দল কংগ্রেস, এ হামলার নিন্দা জানালেও হামাসের নাম উল্লেখ করেনি। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের দাবিগুলোকে ইসরায়েলের বৈধ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে কেবলমাত্র আলোচনার মধ্যে দিয়েই সমাধান করা উচিত বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে। 


মূলত কংগ্রেসের অবস্থানই ইসরায়েল নিয়ে ভারতের এত দিনের কৌশলগত অবস্থানের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভারত কিছুটা ইসরায়েলের দিকে ঝুঁকে থাকলেও কৌশলগত কারণে সব সময় ভারসাম্য রক্ষা করে চলার চেষ্টা করেছে। এমনকি বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলেও এমন অবস্থানই ছিল। প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী নিজেও ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষেও ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন। 


কিন্তু নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার আর কোনো রাখঢাক করছে না। পর্যবেক্ষকেরা বলেন, দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলিম হওয়ার কারণেই ভোটের রাজনীতিতে সব সময় ফিলিস্তিন–ইসরায়েল ইস্যুতে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে ভারত। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির বিজেপি যেভাবে রাজনীতির মেরুকরণ করেছে, মুসলিম বিদ্বেষী প্রোপাগান্ডা এবং সরকারি পদক্ষেপ যেভাবে ভারতকে ধর্মীয় বিভক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে সেটি ফিলিস্তিন–ইসরায়েল ইস্যুতে আবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। 


ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলায় ভারতের মানুষের মধ্যে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তাতে একপক্ষ সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। আর আরেক পক্ষ ফিলিস্তিনিদের অধিকারের আর লড়াইয়ের প্রশ্ন তুলছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে চোখ রাখলে বোঝাই যাচ্ছে, এই দুটি পক্ষের ধর্মীয় পরিচয় এক দশকের বেশি সময় ধরে ভারতে যা ঘটছে তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। 



No comments

Powered by Blogger.