চার্লিঃ এ যেনো হিমুর প্রতিচ্ছবি
২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর মার্টিন প্রাক্কাত পরিচালিত এবং দুলকার সালমান অভিনীত চার্লি সিনেমাটি মুক্তি পায়। চমৎকার চিত্রনাট্যের এই সিনেমাটি ভারতের বক্স অফিসে ৪ সপ্তাহে ৪২ কোটি টাকা আয় করে।
গ্রাফিক
ডিজাইনার তেসা একজন ভবঘুরে স্বভাবের মেয়ে যে কিনা বিয়ে
না করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে একটি আশ্রয় নেয়। সে যেই ঘরে
উঠে সেখানে আগে বসবাস করা কোনো শিল্পীর আকা ছবি নানা ছবি পায় এবং একটি কার্টুন বুক পায়। কার্টুন বুকের গল্পটা তার এতটাই মনে ধরে যে সে ওই
বইয়ের শিল্পীকে খুজার চেষ্টা করে যার নাম চার্লি। সেও একজন ভবঘুরে। এমনকি তথ্য প্রযুক্তির যুগে তার কাছে কোনো মোবাইল ফোনও নেই। তার খোজ করতে এতিম খানার বাচ্চারা, বেলজিয়াম থেকে পর্যটক এবং নানা জায়গা থেকে মানুষ আসে। চার্লিকে খুজতে তেসা শহরের ওলিগলি পার হয়ে পাহাড় পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছে।
চার্লি
শুধু তেসা আর চার্লির গল্প
নয়। চার্লি যেনো পুরোটাই মানব অনুভূতি নিয়ে তৈরি। প্রেমিকের দ্বারা প্রতারিত হওয়া মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া এক পরাজিত ডাক্তারের
গল্প, কৌশরের ভালোবাসা হারিয়ে অবিবাহিত থেকে জীবন পার করা বুড়ো কুঞ্জাপ্পার গল্প, পরিবারের জন্য সংগ্রাম করে যাওয়া মাতাইয়ের গল্প, এইডস আক্রান্ত মারিয়ার মাঝসমুদ্রে গিয়ে জলপরী দেখার গল্প। জাদুকরের মতো তাদের প্রত্যেকের জীবনে এসে চার্লি নিজের জীবনটা তাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়ে সবার মুখে হাসি ফুটানোর গল্প বলেছে এই সিনেমা। অগোছালো
চার্লি কখনো জুতা ছাড়াই শহর পাড়ি দিচ্ছে, কখনো বা উষ্ক-খুস্ক
মলিন চেহারার যত্নটা নিতেও ভুলে যায়। সে শুধু মানুষের
মাঝে সুখ মিলিয়ে দিয়েই শান্তি পায়। এই সিনেমার চমৎকার
দিক হলো এর সিনেমাটোগ্রাফি বিশেষ
করে চোখ জুড়ানো লোকেশন যেমন মাঝসমুদ্রের জলের কলকল শব্দের সাথে চার্লির তারা গুনা এবং এইডস আক্রান্ত মারিয়ার মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে জীবনকে উপভোগ করার যেই দৃশ্য তা হয়তো আনন্দে
আপনার চোখে অশ্রু এনে দিতে পারে। ১ ঘন্টা ৩০
মিনিটের এই ড্রামা-রোমান্টিক
ঘরনার সিনেমা আপনাকে চরিত্রের ভিতর ডুবিয়ে রাখতে বাধ্য করবে।
লিখেছেন ঃ সাদ ধ্রুব
No comments