চুমু খেলে কী হয় ?
ভালোবাসার অন্যতম বহিঃপ্রকাশ হলো চুম্বন বা চুমু। মানুষ তার সবচেয়ে প্রিয়জনকে চুমুর মাধ্যমে ভালোবাসার জানান দেন। প্রিয় মানুষকে জড়িয়ে ধরা বা চুমু খাওয়ার অভ্যাস আমাদের ভালোথাকার ওপরেও প্রভাব ফেলে। মানসিকভাবে শান্তি দিতে কাজ করে এটি। বিশেষজ্ঞরাও এমনটাই বলছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, চুমু খেলে তা হৃদস্পন্দনের হার বৃদ্ধি করে। যে কারণে নিয়মিত চুমু খেলে আমাদের হৃদযন্ত্র ভালো থাকে এবং বেশি কাজ করে। চুমু খাওয়ার সময় মানুষের পালস রেট প্রতি মিনিটে প্রায় ১১০ থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই রেট থাকে ৭২। নিউ ইয়র্কের একজন সেলিব্রিটি ডেন্টিস্ট জেফ গোলুব ইভান্স চুমু খাওয়ার নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে কথা বলেছেন। তার আলোচনায় অনেক অজানা তথ্যও উঠে এসেছে।
জেফ গোলুব ইভান্সজানিয়েছেন, গাঢ়ভাবে চুমু খাওয়ার ফলে প্রতি মিনিটে আমাদের ক্যালোরি ১২ শক্তি ব্যয় হয়। আবার কিছু গবেষক জানিয়েছেন, প্রতিদিন তিনটি গভীর চুমু খেলে (গড়ে ২০ সেকেন্ড) আমাদের শরীরের আধ কেজি ওজন ঝরে! যদিও এর সত্যতা এখনও প্রতিষ্ঠিত নয় তবে এই তথ্য সত্যিই বিস্ময় জাগানোর মতো।
চুমু খাওয়ার সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় আমাদের ফুসফুসকেও। এসময় প্রতি মিনিটে ৬০ বার শ্বাস নেওয়া হয়। তবে সাধারণত মানুষের শ্বাসগ্রহণের হার প্রতি মিনিটে ২০ বার। এ কারণেই গবেষকেরা বলছেন, নিয়মিত চুমু খাওয়ার ফলে হার্ট ও ফুসফুস ভালো থাকে। প্রিয় মানুষকে জড়িয়ে ধরলে বা চুমু খেলে তা স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে। চুমু খাওয়ার সময় মানুষের শরীরে লাভ হরমোন অক্সিটোসিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে মনের ভেতরে আনন্দের ভাব চলে আসে। যে কারণে চুমু খেলে মানুষ মানসিকভাবেও স্বস্তি লাভ করে।
চুমু খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাঢ়ভাবে চুমু খেলে প্রতি ১০ সেকেন্ডে ৮০ মিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ৮ কোটি ব্যাকটেরিয়া একজনের শরীর থেকে অপ জনের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এর কারণ হলো মানুষের শরীরের প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন অণুজীব থাকে। এর মধ্যে কিছু উপকারী আবার কিছু ক্ষতিকর। মানুষের খাদ্যাভ্যাস, জেনেটিক স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা বোধ ইত্যাদির ওপরে তার মুখের ভেতরের স্বাস্থ্য নির্ভর করে।
যেকোনো মানুষের মুখের ভেতরে প্রায় ৭০০ প্রকারের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যে কারণে নিবিড়ভাবে চুমু খাওয়ার সময় সেসব ব্যাকটেরিয়ার আদান-প্রদান হয়। কিন্তু তার সবগুলোই কি ক্ষতিকর? তা অবশ্য নয়। এর মধ্যে অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া নীরিহ ধরনের। তারা শরীরের কোনো ক্ষতি করে না, বরং নানা উপকারে লাড়ে। কিছু ব্যাকটেরিয়া আবার বিপাকে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ রোধ করে। মাড়ি সংক্রান্ত রোগ, হার্পিস, মেনিনজাইটিস, সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বর ইত্যাদির ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া চুমুর মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তাই সতর্ক ও পরিচ্ছন্ন থাকবেন।
কিন্তু লাগামছাড়া প্যারাসিটামল খাওয়া মোটেই ভালো কথা নয়। এই ওষুধ খাবার বিষয়ে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। না হলে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে। ডেঙ্গু আবহে জ্বর হলেই প্যারাসিটামল খাওয়ার আগে কেন সতর্ক থাকবেন?
জ্বর কমাতে চিকিৎসকেরাও প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করেন, জেনে নিন তাদের পরামর্শ ছাড়া ঘন ঘন প্যারাসিটামল খেলে শরীরের ঠিক কী কী ক্ষতি হতে পারে। বেশি প্যারাসিটামল খেলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে প্যারাসিটামল খেতে থাকলে লিভারের ওপর তার প্রভাব পড়ে। ঘন হলুদ রঙের প্রস্রাব, হলুদ চোখ, তলপেটে তীব্র যন্ত্রণা— লিভার খারাপ হওয়ার উপসর্গ হতে পারে। ঘন ঘন প্যারাসিটামল খেলে অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। হাতে পায়ে র্যাশ, শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে প্যারাসিটামল খেলে অ্যানিমিয়া হতে পারে। এর ফলে শরীরে রক্ত কণিকার উৎপাদন ব্যাহত হয়। শরীরে ভিতর পর্যাপ্ত মাত্রায় অক্সিজেন চলাচল করতে পারে না। তাই শরীর ক্লান্ত থাকে সব সময়।
ভারতীয় চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, এমনিতে প্যারাসিটামল খুব নিরাপদ ওষুধ। শরীরের ওজন বুঝে দিনে ৩ থেকে ৪ গ্রামের বেশি প্যারসিটামল খাওয়া কখনওই উচিত নয়। ডেঙ্গু হয়ে শরীরে পানির ঘাটতি হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব পড়ে। অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। এরই মাঝে অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খেলে লিভারের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। দেহের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী, ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, ৬০ কেজি ওজন হলে ৬০০ মিলিগ্রামের ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। দিনে ৬ ঘণ্টা অন্তর অন্তর প্যারাসিটামল খাওয়া নিরাপদ।
No comments