Adsterra

পৃথিবীর ৪র্থ বৃহত্তম দেশ চীন

পৃথিবীর ৪র্থ বৃহত্তম দেশ চীন, ঢাকা ভয়েজ, dhaka voice,;

কয়েক হাজার বছরের ধারাবাহিক ইতিহাসে চৈনিক সভ্যতা পৃথিবীর আদিম সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই কারণে চৈনিক সভ্যতাকে মানব সভ্যতার অন্যতম সুতিকাগার বলা হয়। চীন এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। চীনের স্থলভাগের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার।  পৃথিবীর ৪র্থ বৃহত্তম দেশ চীন। 

উত্তর-দক্ষিণে চীন মোহো অঞ্চলের উত্তরের হেইলুংচিয়াং নদীর কেন্দ্রস্থল দক্ষিণে নানশা দ্বীপপুঞ্জের চেনমু-আনসা পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের সর্বদক্ষিণ আর সর্বউত্তর প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫৫০০ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে চীন পূর্বের হেইলুংচিয়াং নদী আর উসুলিচিয়াং নদীর সঙ্গমস্থল অর্থাৎ ১৩৫.০৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে পশ্চিমে পামির মালভূমি অর্থাৎ ৭৩.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশটির পূর্ব আর পশ্চিম প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার।

চীনের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,৮০০ কিলোমিটার। চীনের পূর্ব দিকে উত্তর কোরিয়া, উত্তর দিকে মঙ্গোলিয়া, উত্তর-পূর্ব দিকে রাশিয়া, উত্তর-পশ্চিম দিকে কাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তাজিকিস্তান, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান , ভারত, নেপাল, ও ভুটান, দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার, লাওস ও ভিয়েতনাম। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চীনের সমুদ্র সীমানা রয়েছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটি শাসন করে। বেইজিং শহর দেশটির রাজধানী।

"রেন্মিন্বি" গণচীনের সরকারি মুদ্রার নাম। ইয়ান হচ্ছে রেন্মিন্বির মৌলিক একক, তবে সাধারণত চীনা মুদ্রা নির্দেশেও এটি ব্যবহৃত হয়। বিশেষত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেন্মিন্বি বুঝাতে "চীনা ইউয়ান" ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ১০ জি সমান এক ইয়ান এবং এক জি স্মনা ১০ ফেন । চীনের পিপলস ব্যাংক শুধু ইয়ান জারি করার ক্ষমতা রাখে।

চীনের প্রধান শিল্পসমূহ শিল্পৎপাদিত পণ্য, খনিজ, লোহা, ইস্পাত, এলুমেনিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ, মোটর গাড়ি, রাসায়নিক উপাদান ও পণ্য, টয়লেট্রিজ, খেলনা, প্লাস্টিকজাত দ্রব্য, কার্পাস, যন্ত্রপাতি, উৎপাদন উপকরণ, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রি, যাহাজ, ভারি যন্ত্রপাতি, কৃষি উপকরন ইত্যাদি।

ঝউ রাজবংশের (১০৪৬ থেকে ২৫৬ খ্রিস্টপূর্ব) আমলে চীনের সংস্কৃতি, সাহিত্য ও দর্শনের প্রভূত উন্নতি হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতাব্দী থেকে ঝউ শাসকরা নানা রকম অভ্যন্তরিন ও বাইরের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে শুরু করে এবং এক সময় বিভিন্ন ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা শরৎবসন্তপর্ব (Spring and Autumn period) থেকে শুরু হয় এবং আন্তঃরাজ্য যুদ্ধাবস্থা’ (Warring States period) এর সময়ে পূর্নরূপ লাভ করে। এই সময়কালটি ছিল চীনের ইতিহাসের অন্যতম ব্যর্থ রাষ্ট্রীয় শাসনামলএই ব্যর্থ রাষ্ট্রীয় শাসনামলের সর্বশেষ সময়টি ছিল ১৯২৭ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের সময়।

বহু রাজ্য ও যুদ্ধবাজ নেতাদের শাসনামলে চৈনিক রাজবংশগুলো বর্তমান চীনের অংশবিশেষ শাসন করত। যার সীমানা বর্তমান জিংজিয়ান এবং তিব্বত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কিন শি হুয়াং বিভিন্ন যুদ্ধরত রাজ্যগুলোকে একত্রিত করে কীন বংশের একটি ক্ষুদ্র সাম্রাজ্য” (হুয়াংডি) প্রতিষ্ঠা করে, চৈনিক সাম্রাজ্যের ইতিহাসে সূচনা করেন। পরবর্তী রাজবংশগুলো শাসনব্যবস্থায় একটি জনপ্রশাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল যা ক্রমে তৎকালিন চীনের বিশাল এলাকায় চৈনিক সম্রাটের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে ভূমিকা রাখে। চীনের সর্বশেষ সাম্রাজ্য ছিল কিং সাম্রাজ্য (১৬৪৪ থেকে ১৯১২), যার উচ্ছেদের পর ১৯১২ সালে রিপাবলিক অব চায়না, এবং ১৯৪৯ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৯৭ সালে চীন ব্রিটেনের কাছ থেকে হংকং এর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়, তবে অঞ্চলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখেছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষে এসে পর্তুগাল মাকাওকে চীনের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ১৯৯৯ সালে অঞ্চলটি চীনের কাছে হস্তান্তর করে; মাকাওকেও বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হয়।

প্রচলিত চৈনিক ইতিহাসে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক ঐক্য এবং অনৈক্যের চিত্র দেখা যায়, আরও দেখা যায় যে স্তেপ জাতি দ্বারা চীন শাসিত হবার ইতিহাস। পরবর্তীকালে যারা চৈনিক হান জাতির জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে গেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব, অভিবাসন, বৈদেশিক বাণিজ্য ও চুক্তি ইত্যাদি আধুনিক চীনের সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা পালন করেছে;চিনে প্রথম বারুদের ব্যবহার হয়েছিল।

চীনের সর্বশেষ সাম্রাজ্য ছিল কিং সাম্রাজ্য (১৬৪৪ থেকে ১৯১২), যার উচ্ছেদের পর ১৯১২ সালে রিপাবলিক অব চায়না, এবং ১৯৪৯ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হয়।

গণপ্রজাতান্ত্রিক চিনের রাজনীতি একটি একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক কাঠামোয় সংঘটিত হয়। গণচীনের বর্তমান সংবিধানটি ১৯৫৪ সালে প্রথম গৃহীত হয় এবং এতে দেশের শাসনব্যবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। দেশের ৭ কোটিরও বেশি লোক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৯৮০-র দশকের অর্থনৈতিক সংস্কারের পর থেকে চীনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে এবং স্থানীয় সরকারের নেতাদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।

চীনের মৌলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাটি গণ কংগ্রেস ব্যবস্থা নামে পরিচিত। গণকংগ্রেস ব্যবস্থা পাশ্চাত্য দেশগুলোর মত নির্বাহী, আইনপ্রণয়ন ও বিচার- এই তিন ক্ষমতা পৃথকীকরণ ব্যবস্থা নয়। চীনের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় গণ কংগ্রেস চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ সংস্থা। গণ কংগ্রেসের স্থানীয় পর্যায়ের সদস্যরা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। গণকংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চীনের গণ-আদালত নামের বিচার ব্যবস্থাকেও নিয়ন্ত্রণ করে।

চীন বর্তমানে বিশ্বের ২য় সামরিক শক্তি হলেও ১৯৬২-র চীন-ভারত যুদ্ধ ছাড়া অপর কোনো উল্লেখযোগ্য বৃহৎ আকারের যুদ্ধে জড়িত হয়নি

চীন একটি নদীবহুল দেশ। চীনের ১৫০০টিরও বেশি নদীর অববাহিকার আয়তন ১০০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি। চীনের নদীগুলিকে অভ্যন্তরীণ নদী ও বহির্গামী নদী---এই দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়। সমুদ্রে প্রবাহিত হওয়া বহির্গামী নদীগুলোর অববাহিকার আয়তন চীনের স্থলভাগের মোট আয়তনের ৬৪%। ছাংচিয়াং নদী, হুয়াংহো নদী, হেইলুংচিয়াং নদী, চুচিয়াং নদী, লিয়াও হো নদী, হাইহো নদী, হুয়াইহো নদী, ইত্যাদি নদী পূর্ব দিকে প্রশান্ত মহাসাগরে পতিত হয়েছে। তিব্বতের ইয়ালুচাংবু চিয়াং নদী পূর্ব দিক থেকে সীমান্ত পার হয়ে দক্ষিণ দিকে ভারত মহাসাগরে প্রবাহিত হয়েছে।

চীন একটি পর্বতময় দেশ। এর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে চীনের ৩৩% উঁচু পর্বত, ২৬% মালভূমি, ১৯% অববাহিকা, ১২% সমতলভূমি এবং প্রায় ১০% ক্ষুদ্র পাহাড়।কয়েক মিলিয়ন বছর আগে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি সৃষ্টি হয়। আকাশ থেকে দেখলে মনে হবে চীনের ভূভাগ সিঁড়ির মতো পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে। সমুদ্র সমতল থেকে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি বলে মালভূমিটি "বিশ্বের ছাদ" নামে পরিচিত; এটি চীনের ভূমিরূপের প্রথম সিঁড়ি গঠন করেছে। মালভূমিটিতে অবস্থিত হিমালয়ের অন্যতম প্রধান পর্বতশৃঙ্গ চুমোলাংমা শৃঙ্গের উচ্চতা ৮৮৪৮.১৩ মিটার।চীনের বৃহত্তম পর্বতমালাগুলির মধ্যে হিমালয় পর্বতমালা, খুনলুনশান পর্বতমালা, থিয়েনশান পর্বতমালা, থাংকুলাশান পর্বতমালা, ছিনলিন পর্বতমালা, বৃহত্তর সিংআনলিন পর্বতমালা, থাইহাংশান পর্বতমালা, ছিলিয়েনশান পর্বতমালা এবং হাংতুয়ানশান পর্বতমালা উল্লেখযোগ্য।

পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠী চীনে বাস করে। এদের মধ্যে ৯২% জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। এছাড়াও চীনে আরো ৫৫ জাতিগোষ্ঠীর লোক বসবাস করে। চীনের সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাগুলি চৈনিক-তিব্বতি ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও চীনা ভাষার ভেতরে একাধিক প্রধান দল আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাদলগুলি হল ম্যান্ডারিন চীনা ভাষা ।

উইঘুর হচ্ছে পৃথিবীর সর্বাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ চীনের সর্ববৃহৎ নৃতাত্ত্বিকগোষ্ঠী। চীনের পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ প্রদেশ ও ফসল উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র জিংজিয়াংয়ে এদের বাস। এলাকাটি বিপুল তেল ও খনিজসম্পদে পূর্ণ। ১৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার (বাংলাদেশের প্রায় ১২ গুণ)। বাহ্যিকভাবে এরা স্বাধীন হলেও সত্যিকার অর্থে তারা পরাধীন। অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা চীনা সরকারের নির্যাতনের জাঁতাকলে পিষ্ট। আরাকানের মতো সেখানেও মুসলমানরা নিজ দেশে, বাপ-দাদার ভিটায় পরদেশিতে পরিণত হয়েছে। উইঘুরদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগুলো সমূলে ধ্বংস করার জন্য চীনা সরকার ক্রমাগত পদক্ষেপ নিচ্ছে।ধারণা করা হয়, হিজরি প্রথম শতকে সাহাবায়ে কেরামের সোনালি যুগেই চীনে রোপণ করা হয় ইসলামের বীজ। দশম শতাব্দীতে ব্যাপক হারে এ অঞ্চলের মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে। অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকে মুসলমানদের পরিমাণ।

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন দেশের নাম চীন। এখানে যেমন রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপত্য, তেমনই রয়েছে আকাশচুম্বি দালান। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য দেশটির দরজা সবসময় খোলা। চীনের সেরা জায়গাগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-

চীনে ভ্রমণের কথা উঠলেই আমাদের চোখের সামনে সবার আগে ভেসে উঠে চীনের মহাপ্রাচীরদ্যা গ্রেট ওয়াল অফ চায়নাএটি বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাচীর এবং চীনের প্রতীক। প্রাচীরটি চীনের পূর্ব উপকূল থেকে পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার। গড়ে এর উচ্চতা প্রায় ৬ থেকে ৮ মিটার এবং কিছু কিছু জায়গায় প্রায় ১৬ মিটার পর্যন্ত। চীনের এই প্রাচীরটি বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি। প্রাচীন যাযাবর জাতি, বিশেষত, যাযাবর মঙ্গোলিয়ানদের থেকে বাঁচানোর জন্য চীনা সম্রাটরা এই প্রাচীর নির্মাণ করেন। চীনে ভ্রমণে গেলে অবশ্যই দেখতে ভুলবেন না এই প্রাচীন আত্মরক্ষামূলক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শনটি।

চীনের আরেকটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান হল বেইজিং এর নিষিদ্ধ নগরী । একসময় এই নগরীতে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ ছিল, তাই এর নাম হয় নিষিদ্ধ নগরী। এখানে চীনের প্রাচীন স্থাপত্যবিদদের দ্বারা নির্মিত এই প্রাসাদটিতে চার হাজারেরও বেশি সুসজ্জিত কামরারয়েছে। এসব কামরাগুলিতে লাল এবং হলুদ রংয়ের কারুকার্য রয়েছে। এই প্রাসাদের ছাদ সোনা দিয়ে তৈরি। এটি ইম্পেরিয়াল প্যালেসনামেও পরিচিত। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জটিল প্রাসাদ। কথিত আছে এখানে ৯৮০টি ভবন ও ৯৯৯৯ টি কক্ষ আছে! মিং এবং কিং সম্রাটদের থেকে শুরু করে ১৯১২ সালে চীনের শেষ সম্রাট পুই পর্যন্ত এই প্রাসাদই ছিল সম্রাটদের বাসস্থান। বর্তমানে এই প্রাসাদটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

চীনের গ্রামাঞ্চলের দিকে অবস্থিত লি নদী বিখ্যাত। এর ক্রিস্টাল ক্লিয়ার পানি, শহরের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে বয়ে যাওয়া এবং নদী পাশের চমৎকার পাহাড়ের জন্য। গুইলিনে অবস্থিত এই লি নদী শিল্পীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বলা হয়ে থাকে, লি নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে চীনের চিত্রশিল্পীগণ এবং কবিগণ তাদের শিল্পকর্মের প্রেরণা পেয়ে থাকেন। ৮৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের লি নদীটির গুইলীং এবং ইয়াংসু এর মধ্যবর্তী স্থানটি সবচেয়ে বেশি সুন্দর।

দ্য ট্যারাকোটা আর্মি, ১৯৭৪ সালে সাংহাই প্রদেশের সিয়ান শহরের প্রান্তদেশে সেখানকার কৃষকেরা খনন কাজের মাধ্যমে যে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি উন্মোচিত করে তা নিঃসন্দেহে চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার দ্য ট্যারাকোটা আর্মি। প্রায় ২০০ বছর ভূগর্ভস্থ ছিল এই টেরাকোটা আর্মি। এটি চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াং এর সমাধি মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত। আসলে এই টেরাকোটা আর্মি জীবন্ত কোন সেনাবাহিনী নয়। সম্রাট কিন শি হুয়াং এর মৃত্যুর পর স্থানীয় লিনথং জেলার কৃষকেরা সম্রাটের সম্মানার্থে এসব পোড়ামাটির সৈন্যবাহিনী তৈরি করে। এখানে মানুষের মত দেখতে ৮০০০ টি সৈন্য মূর্তি আছে যেগুলো লম্বায়ও প্রায় মানুষের মত। সৈন্যর পাশাপাশি আরো রয়েছে ৫২০ টি ঘোড়া, ১০০ টির মত রথ এবং বেশকিছু বেসামরিক লোকজন। পোড়ামাটির এই সৈন্যবাহিনীতে সামরিক পদমর্যাদার স্বরূপ সাজানো হয়েছে। এক কথায় বলা যায়, প্রাচীন সামরিক বাহিনী যেভাবে সুসজ্জিত থাকতো, কৃষকদের তৈরি মূর্তিগুলোতে সেই রূপ দেয়া হয়েছেক।

সাংহাই চীনের আরেকটি অসম্ভব সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র।

বিশ্বের ষষ্ঠতম সুউচ্চ দালান ওরিয়েন্টাল পার্ল রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন এই শহরে অবস্থিত। দালানটি হুয়াংপু নদীর তীরে অবস্থিত। সাংহাই শহর বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ শহর। শহরটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা হলো সাংহাই ডিজনিল্যান্ড। এছাড়া শহরটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে যেতে হবে ইয়াংপু ও ন্যানপু সেতুতে।

শহরটি চীনের সানজি প্রদেশের রাজধানী। চীনের প্রাচীন চারটি রাজধানীর মধ্যে অন্যতম। এই শহরে দর্শনীয় স্থান হিসেবে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। এই জাদুঘরে রয়েছে ৫০০ ঘোড়াসহ ১৩০ টি যুদ্ধের ঘোড়ার গাড়ি। উল্লেখ্য, কিন সাম্রাজ্যের সম্রাট কিন শি বিশ্বাস করতেন এগুলো তাকে পরকালে স্বস্তি দেবে!

কুয়াং চো চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের রাজধানী। শহরটি সমুদ্রবন্দর এবং শিল্প ও বাণিজ্যকেন্দ্রের জন্য পরিচিত। উল্লেখযোগ্য জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্য ক্যানটন টাওয়ার, সানইয়াট সেন মেমোরিয়েট হল, জেনহাই টাওয়ার।

চীনের কুংতুং প্রদেশের আরেকটি শহর। এই শহরের দক্ষিণে রয়েছে শেনচেন নদী ও পশ্চিমে রয়েছে পার্ল নদী। নদীর আশেপাশে ঘুরলে চঞ্চল মন স্থির হয়। এছাড়া কুয়ানাইন পর্বত, হুয়েন সেতু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।

সৌন্দর্যমণ্ডিত চীনের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আরো আছে রেইনবো মাউন্টেইন, লাসায় অবস্থিত পোতালা প্রাসাদ, সাংহাই এর দ্যা বান্ড, ভিক্টোরিয়া হারবার, হুয়াংশান এর হলুদ পাহাড় (মাউন্ট হুয়াং), হংজ়ৌ এর ওয়েস্ট লেক, লেশান জায়ান্ট বুদ্ধ, হানি টেরেস, লংমেন গুহা, ইয়ুংগ্যাং গুহা ইত্যাদি।

 

 

No comments

Powered by Blogger.