Adsterra

এক ডলারে গ্রিনল্যান্ডের কাছে একটি শহর বেচে দিয়ে এখন কেন আফসোস করছে যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice , এক ডলারে গ্রিনল্যান্ডের কাছে একটি শহর বেচে দিয়ে এখন কেন আফসোস করছে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিনল্যান্ড, ধূলসেনা ঘাঁটি, সি জিনপিং

সোভিয়েত ইউনিয়নকে যুক্তরাষ্ট্র এতই সমীহ করতো যে উত্তর মেরুর মহাসাগর পাড়ি দিয়ে রুশরা তাদের দেশে হামলা করবে। এই সতর্কতায় মেরু অঞ্চল ঘিরে রেইডার বুষ্টার বসিয়েছিল। এই কাজে গ্রিনল্যান্ডে আস্ত শহরই বানিয়ে ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। 

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রেইডার আর সামরিক সরঞ্জাম সহ আস্ত একটা শহর গ্রিনল্যান্ড বাসীর কাছে মাত্র এক ডলারে বেঁচে দিয়েছিল দেশটি। তখন যুক্তরাষ্ট্র কি জানতো যে এই দখল ছেড়ে দেওয়া কত বড় ভুল হলো। 

মানুষের তৈরি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পরিস্থিতি বদলে দিচ্ছে। উনিশশো পঁচাশি সালে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তরসীমা আর রাশিয়ার দিকে পূর্ব সাইবেরিয়ান সাগর টানা বরফে ঢাকা ছিল। 

দুই হাজার বাইশ সালে এসে এই বরফের চাদর টিকে আছে শুধু গ্রিন ল্যান্ড সংলগ্ন উত্তর মেরুতে। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তরসীমা আর রাশিয়ার সীমায় আর কোন বরফ নেই। জাহাজ চলাচলের নতুন জলপথ খুলে গেছে। জ্বালানি তেল, গ্যাস, মূল্যবান, খনিজ আর ধাতুর লোভে সবাই সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে। 

মেরুয়া অঞ্চল ঘিরে রাশিয়ার অনেকগুলো সামরিক ঘাটি আছে দেশটির সীমায়। তারাও মহাসাগরটি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। উত্তর মেরুতে নজরদারি চালাতে আইস ব্রেকার শিপ বানাতে ও কিনতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আল্টিক সাগরের সঙ্গে সীমা নেই যে চীনের সেই চীনও বন্ধু রাশিয়ার হাত ধরে এই সাগরে চলে এসেছে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে। 

সিল্ক রোড তৈরির জন্য নডিক অঞ্চলে দশ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে দেশটি। উত্তর মেরু থেকে লাভ তুলতে গিয়ে সবার নজর পড়েছে গ্রীনল্যান্ডের এর ওপর। এত বছর দেশটি নিয়ে কারো আগ্রহ জাগেনি। 

এখন জেগেছে। দেশটির প্রায় পুরোটাই আর্থিক সার্কেলের ভেতরে। অনেক আগে যুক্তরাষ্ট্র এর গুরুত্ব বুঝে ছিল। তাই দেশটিতে ডেনমার্কের উপনিবেশ স্থাপনকারীদের দিয়ে সেখানকার ইনইট আদিবাসীদের উচ্ছেদ করিয়ে মার্কিনীরা বিমানঘাঁটি স্থাপন করেছিল। 

উদ্দেশ্য ছিলো সভিয়েত ইউনিয়নের ওপর গোয়েন্দাগিরি করা। সেখানে কিছুকাল মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রও রাখা ছিল। অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের জন্য গ্রীনল্যান্ডের বড় বিমানবন্দর দরকার ছিল। পৃথিবীর আর কোন দেশ যখন গ্রিন্যান্ডের এই খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছিল না তখন রাজি হয় চীন। 

এইটা দেখে যুক্তরাষ্ট্রের মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। দেশটি ডেনমার্ক কে পাঠায় বাগরাদীতে। এখন ডেনমার্ক গ্রিন্যান্ডের বিমানবন্দর প্রকল্পের দুই তৃতীয়াংশের তহবিল যোগাচ্ছে। 

গ্রিনল্যান্ডে বিমানবন্দরের কাজ পেল না চীন। কিন্তু হাল ছাড়েনি সি জিনপিং এর দেশ। মেরু অঞ্চলের দেশটিতে বিরল খনিজ ধাতু উত্তোলনের প্রোজেক্ট শুরু করেছে। স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার চিপ আর ইলেকট্রনিক গাড়ির মতো সর্বাধুনিক সব প্রযুক্তি ঐসব ধাতু ছাড়া অচল। 

এসব খনিজ উত্তোলন আর প্রক্রিয়াজাতকরণে চীনের দখল একচেটিয়া বলা যায়। এর জন্য গ্রিন্যান্ড চীনের কাছে বিশাল এক সুযোগ। এই সুযোগ উত্তর মেরুতে নিজের অবস্থান সৃষ্টির জন্য। 

গ্রিনল্যান্ডের একেবারে উত্তরে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারী সীসা আর দস্তার খনির দখল ছেড়ে দিতে চাইলে সুযোগটি নিতে চেয়েছিল চীন। তবে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়ান পার্টিকে ছশো পঞ্চাশ মিলিয়ন ডলার দিয়ছে যুক্তরাষ্ট্র, আবার গ্রীনল্যান্ডের ধূলসেনা ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রীয়তার শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। 

এভাবে উত্তর মেরুর দিকে চীনের এগিয়ে যাওয়া ঠেকানোর মার্কিন চেষ্টা। কতদিন চলবে? নাকি এখানে রাশিয়াই চীনের একমাত্র ভরসা।


No comments

Powered by Blogger.