ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ড
ভারতের
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তারই দুই দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারান আজ থেকে ৩৪
বছর আগে। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর। স্বর্ণ মন্দিরে সেরা অপারেশনের বদলা নিয়েছিল তারা
প্রধানমন্ত্রীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করার মধ্যে দিয়ে।
কেমন ছিল সেই
দিনটি? কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, বিভিন্ন বই পড়ে তারই
একটি বিবরণ তুলে ধরেছেন বিবিসির হিন্দি বিভাগের রেহান ফজল।
ওড়িশার রাজধানী
ভুবনেশ্বর শহরের সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর বেশ কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তবে বেশিরভাগ
স্মৃতিই আনন্দের নয়।এই শহরেই তার বাবা জওহরলাল নেহরু প্রথমবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে
পড়েছিলেন। তারপরেই ১৯৬৪ সালের মে মাসে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৬৭ সালের
নির্বাচনী প্রচারে এই শহরেই ইন্দিরা গান্ধীর দিকে একটা পাথর ছোঁড়া হয়েছিল, যাতে তার নাক ফেটে
গিয়েছিল।সেই ভুবনেশ্বর শহরেই ১৯৮৪ সালের ৩০শে অক্টোবর জীবনের শেষ ভাষণটা
দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। প্রতিটা ভাষণের মতোই ওই ভাষণও লিখে দিয়েছিলেন মিসেস
গান্ধীর মিডিয়া উপদেষ্টা এইচ ওয়াই শারদা প্রসাদ। কিন্তু ভাষণ দিতে দিতে হঠাৎই
লেখা বয়ান থেকে সরে গিয়ে নিজের মতো বলতে শুরু করেন ইন্দিরা। তার বলার ধরনও
পাল্টে গিয়েছিল সেদিন।
তিনি বলেছিলেন, "আমি আজ এখানে
রয়েছি। কাল নাও থাকতে পারি। এটা নিয়ে ভাবি না যে আমি থাকলাম কী না। অনেকদিন
বেঁচেছি। আর আমার গর্ব আছে যে আমি পুরো জীবনটাই দেশের মানুষের সেবায় কাজে লাগাতে
পেরেছি বলে। আর শেষ নিশ্বাসটা নেওয়া পর্যন্ত আমি সেটাই করে যাব। আর যেদিন মরে যাব,
আমার রক্তের প্রতিটা ফোঁটা ভারতকে আরও মজবুত করার কাজে লাগবে।"
কখনও কখনও
বোধহয় শব্দের মাধ্যমেই নিয়তি ভবিষ্যতের একটা ইশারা দিয়ে দেয়।
ভাষণের শেষে যখন
মিসেস গান্ধী রাজ্যপালের আবাস রাজভবনে ফিরেছেন, তখন রাজ্যপাল বিশ্বম্ভরনাথ পান্ডে তাকে
বলেছিলেন, "একটা রক্তাক্ত মৃত্যুর কথা বলে আপনি আমাকে
ভয় পাইয়ে দিয়েছেন।"
"আমি যা বলেছি, তা নিজের মনের কথা। এটা আমি বিশ্বাস
করি," জবাব দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।
সেই রাতেই
দিল্লি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। খুব ক্লান্ত ছিলেন। সারা রাত প্রায় ঘুমান নি।
পাশের ঘরে
সোনিয়া গান্ধী ঘুমচ্ছিলেন। ভোর প্রায় চারটে নাগাদ শরীরটা খারাপ লাগছিল সোনিয়ার।
বাথরুমের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানে ওষুধও রাখা থাকত।সোনিয়া গান্ধী নিজের বই 'রাজীব'- এ লিখেছেন, "উনিও আমার পেছন পেছন বাথরুমে চলে
এসেছিলেন। ওষুধটা খুঁজে দিয়ে বলেছিলেন, শরীর বেশী খারাপ
লাগলে যেন একটা আওয়াজ দিই। উনি জেগেই আছেন।"
সকাল সাড়ে
সাতটার মধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।কালো পাড় দেওয়া একটা গেরুয়া
রঙের শাড়ি পড়েছিলেন মিসেস গান্ধী সেদিন। দিনের প্রথম অ্যাপয়েন্টমেন্টটা ছিল
পিটার উস্তিনভের সঙ্গে। তিনি ইন্দিরা
গান্ধীর ওপরে একটা তথ্যচিত্র বানাচ্ছিলেন সেই সময়ে। আগের দিন ওড়িশা সফরের সময়েও
তিনি শুটিং করেছিলেন। দুপুরে মিসেস গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল ব্রিটেনের
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জেমস ক্যালিঘান আর মিজোরামের এক নেতার সঙ্গে।
সন্ধেবেলায়
ব্রিটেনের রাজকুমারী অ্যানের সম্মানে একটা ডিনার দেওয়ার কথা ছিল মিসেস
গান্ধীর।তৈরি হয়েই ব্রেকফাস্ট টেবিলে এসেছিলেন তিনি। দুটো পাউরুটি টোস্ট, কিছুটা সিরিয়াল,
মুসাম্বির জুস আর ডিম ছিল সেদিনের ব্রেকফাস্টে।
জলখাবারের পরেই
মেকআপ ম্যান তার মুখে সামান্য পাউডার আর ব্লাশন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তখনই হাজির হন
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার কে পি মাথুর।
রোজ ওই সময়েই
মিসেস গান্ধীকে পরীক্ষা করতে যেতেন তিনি। ভেতরে ডেকে নিয়েছিলেন ডাক্তার মাথুরকে।
হাসতে হাসতে বলেছিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগান কী রকম অতিরিক্ত মেকআপ
করেন, যখন ৮০ বছর বয়সেও তার মাথার বেশির ভাগ চুল কালোই রয়েছে। ঘড়িতে যখন ন'টা বেজে দশ মিনিট, ইন্দিরা গান্ধী বাইরে বের হলেন।
বেশ রোদ ঝলমলে দিনটা।তবুও রোদ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করতে সেপাই নারায়ণ সিং
একটা কালো ছাতা নিয়ে পাশে পাশে হাঁটছিলেন।কয়েক পা পেছনেই ছিলেন ব্যক্তিগত সচিব
আর কে ধাওয়ান আর তারও পেছনে ছিলেন ব্যক্তিগত পরিচারক নাথু রাম। সকলের পেছনে
আসছিলেন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অফিসার সাব ইন্সপেক্টর রামেশ্বর দয়াল।
ঠিক সেই সময়েই
সামনে দিয়ে এক কর্মচারী হাতে একটা চায়ের সেট নিয়ে পেরিয়ে গিয়েছিলেন। ওই
চায়ের সেটে তথ্যচিত্র নির্মাতা পিটার উস্তিনভকে চা দেওয়া হয়েছিল। ওই কর্মচারীকে
ডেকে ইন্দিরা বলেছিলেন মি. উস্তিনভের জন্য যেন অন্য আরেকটা চায়ের সেট বার করা
হয়।বাসভবনের লাগোয়া দপ্তর ছিল আকবর রোডে। দুটি ভবনের মধ্যে যাতায়াতের একটা
রাস্তা ছিল।
সেই গেটের সামনে
পৌঁছে ইন্দিরা গান্ধী তার সচিব আর কে ধাওয়ানের সঙ্গে কথা বলছিলেন। মি. ধাওয়ান
তাকে বলছিলেন যে ইন্দিরার নির্দেশ মতো ইয়েমেন সফররত রাষ্ট্রপতি গিয়ানী জৈল সিংকে
জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি সন্ধ্যে সাতটার মধ্যেই দিল্লি চলে আসেন। পালাম
বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে রিসিভ করে সময় মতো যাতে রাজকুমারী অ্যানের ভোজসভায়
পৌঁছাতে পারেন ইন্দিরা, সেই জন্যই ওই নির্দেশ।
হঠাৎই পাশে
দাঁড়ানো নিরাপত্তাকর্মী বিয়ন্ত সিং রিভলবার বার করে ইন্দিরা গান্ধীর দিকে গুলি
চালায়!
প্রথম গুলিটা
পেটে লেগেছিল। ইন্দিরা গান্ধী ডান হাতটা ওপরে তুলেছিলেন গুলি থেকে বাঁচতে। তখন
একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে বিয়ন্ত সিং আরও দুবার গুলি চালায়। সে-দুটো
গুলি তার বুকে আর কোমরে লাগে।ওই জায়গার ঠিক পাঁচ ফুট দূরে নিজের টমসন অটোমেটিক
কার্বাইন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল সতবন্ত সিং।
ইন্দিরা
গান্ধীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখে সতবন্ত বোধহয় কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিল। স্থাণুর
মতো দাঁড়িয়ে ছিল। তখনই বিয়ন্ত চিৎকার করে সতবন্তকে বলে 'গুলি চালাও।' সতবন্ত সঙ্গে সঙ্গে নিজের কার্বাইন থেকে চেম্বারে থাকা ২৫টা গুলিই ইন্দিরা
গান্ধীর শরীরে গেঁথে দিয়েছিল।
বিয়ন্ত সিং
প্রথম গুলিটা চালানোর পরে প্রায় ২৫ সেকেন্ড কেটে গিয়েছিল ততক্ষণে।
নিরাপত্তা
কর্মীরা ওই সময়টায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেখান নি, এতটাই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন সবাই। তারপরে
সতবন্ত সিং গুলি চালাতে শুরু করতেই একদম পিছনে থাকা নিরাপত্তা অফিসার রামেশ্বর
দয়াল দৌড়ে এগিয়ে আসেন। সতবন্ত তখন একনাগাড়ে গুলি চালিয়ে যাচ্ছেন। মি. দয়ালের
উরু আর পায়েও গুলি লাগে। সেখানেই পড়ে যান তিনি।
ইন্দিরা গান্ধীর
আশপাশে থাকা অন্য কর্মচারীরা ততক্ষণে একে অন্যকে চিৎকার করে নির্দেশ দিচ্ছেন। ওদিকে
এক নম্বর আকবর রোডের ভবন থেকে পুলিশ অফিসার দিনেশ কুমার ভাট এগিয়ে আসছিলেন শোরগোল
শুনে।
বিয়ন্ত সিং আর
সতবন্ত সিং তখনই নিজেদের অস্ত্র মাটিতে ফেলে দিয়েছে। বিয়ন্ত বলেছিল, "আমাদের যা করার
ছিল, সেটা করেছি। এবার তোমাদের যা করার করো।"ইন্দিরার
আরেক কর্মচারী নারায়ণ সিং সামনে লাফিয়ে পড়ে বিয়ন্ত সিংকে মাটিতে ফেলে দেন।
পাশের গার্ডরুম
থেকে বেরিয়ে আসা ভারত তিব্বত সীমান্ত পুলিশ বা আই টি বি পির কয়েকজন সদস্য দৌড়ে
এগিয়ে এসে সতবন্ত সিংকেও ঘিরে ফেলে।
সবসময়ে একটা
অ্যাম্বুলেন্স রাখা থাকত ওখানে। ঘটনাচক্রে সেদিনই অ্যাম্বুলেন্সের চালক কাজে আসেন
নি। ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা মাখনলাল ফোতেদার চিৎকার করে গাড়ি বার করতে
নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মাটিতে পড়ে
থাকা ইন্দিরাকে ধরাধরি করে সাদা অ্যাম্বাসেডর গাড়ির পিছনের আসনে রাখেন আর কে
ধাওয়ান আর নিরাপত্তা কর্মী দিনেশ ভাট। সামনের আসনে, ড্রাইভারের পাশে চেপে বসে পড়েন মি.
ধাওয়ান আর মি. ফোতেদার।
গাড়ি যেই চলতে শুরু
করেছে, সোনিয়া গান্ধী খালি পায়ে, ড্রেসিং গাউন পরে 'মাম্মি, মাম্মি' বলে চিৎকার
করতে করতে দৌড়ে আসেন। ইন্দিরা গান্ধীকে ওই অবস্থায় দেখে সোনিয়া গান্ধীও গাড়ির
পিছনের আসনে বসে পড়েন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল ইন্দিরা গান্ধীর শরীর। সোনিয়া তার
মাথাটা নিজের কোলে তুলে নেন।
খুব জোরে
গাড়িটা 'এইমস'
বা অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সের দিকে এগোতে
থাকে। চার কিলোমিটার রাস্তা কয়েক মিনিটের মধ্যেই পেরিয়ে যায়। সোনিয়া গান্ধীর
ড্রেসিং গাউনটা ততক্ষণে ইন্দিরা গান্ধীর রক্তে পুরো ভিজে গেছে।
ওই গাড়িটা এইমস
এ ঢুকেছিল নয়টা ৩২ মিনিটে।
ইন্দিরা গান্ধীর
রক্তের গ্রুপ ছিল "ও নেগেটিভ"। ওই গ্রুপের যথেষ্ট রক্ত মজুত ছিল
হাসপাতালে।
কিন্তু সফদরজং
রোডের বাসভবন থেকে কেউ ফোন করে হাসপাতালে খবরও দেয় নি যে ইন্দিরা গান্ধীকে গুরুতর
আহত অবস্থায় এইমস এ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জরুরী বিভাগের দরজা খুলে গাড়ি থেকে
ইন্দিরা গান্ধীকে নামাতে মিনিট তিনেক সময় লেগেছিল। কিন্তু সেখানে তখন কোনও
স্ট্রেচার নেই। কোনও রকমে একটা স্ট্রেচার যোগাড় করা গিয়েছিল। গাড়ি থেকে তাকে
নামানোর সময়ে ওই অবস্থা দেখে সেখানে হাজির ডাক্তাররা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ফোন করে
সিনিয়র কার্ডিয়োলজিস্টদের খবর দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডাক্তার
গুলেরিয়া, ডাক্তার এম এম কাপুর আর ডাক্তার এস বালারাম ওখানে পৌঁছে যান। ইসিজি করা
হয়েছিল, কিন্তু তার নাড়ীর স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না। চোখ
স্থির হয়ে গিয়েছিল। বোঝাই যাচ্ছিল যে মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে।একজন চিকিৎসক মুখের
ভেতর দিয়ে একটা নল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন যাতে ফুসফুস পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে
পারে। মস্তিষ্কটা চালু রাখা সবথেকে প্রয়োজন ছিল তখন।
৮০ বোতল রক্ত
দেওয়া হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীকে। শরীরে যে পরিমাণ রক্ত থাকে, এটা ছিল তার প্রায় ৫
গুণ।
ডাক্তার
গুলেরিয়া বলছেন, "আমি তো দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম যে উনি আর নেই। কিন্তু নিশ্চিত হওয়ার জন্য
ইসিজি করতে হয়েছিল। তারপরে আমি ওখানে হাজির স্বাস্থ্যমন্ত্রী শঙ্করানন্দকে
জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এখন কী করণীয়? ঘোষণা
করে দেব আমরা যে উনি মৃত? তিনি না বলেছিলেন। তখন আমরা মিসেস
গান্ধীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাই।"
চিকিৎসকরা 'হার্ট এন্ড লাং মেশিন'
লাগিয়েছিলেন ইন্দিরার শরীরে। ধীরে ধীরে তার শরীরে রক্তের তাপমাত্রা
৩৭ ডিগ্রি থেকে কমে ৩১ ডিগ্রি হয়ে গেল।তিনি যে আর নেই, সেটা
সকলেই বুঝতে পারছিল, কিন্তু তবুও 'এইমস'এর আটতলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। চিকিৎসকেরা
দেখেছিলেন যে যকৃতের ডানদিকের অংশটা গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। বৃহদান্ত্রের
বাইরের অংশটা ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্রান্ত্রেরও। ফুসফুসের একদিকে
গুলি লেগেছিল আর পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল গুলির আঘাতে। তবে হৃৎপিণ্ডতে কোনও
ক্ষতি হয় নি।
দেহরক্ষীদের
গুলিতে ছিন্নভিন্ন হওয়ার প্রায় চার ঘণ্টা পর, দুপুর দুটো ২৩ মিনিটে ইন্দিরা গান্ধীকে মৃত
ঘোষণা করা হয়েছিল।
কিন্তু সরকারি
প্রচারমাধ্যমে সেই ঘোষণা করা হয়েছিল সন্ধ্যা ছ'টার সময়ে।
ইন্দিরা গান্ধীর
জীবনীকার ইন্দর মালহোত্রা বলছেন, গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে মিসেস
গান্ধীর ওপরে এরকম একটা হামলা হতে পারে। তারা সুপারিশ পাঠিয়েছিল যে
প্রধানমন্ত্রীর আবাস থেকে সব শিখ নিরাপত্তা কর্মীদের যেন সরিয়ে নেওয়া হয়।কিন্তু
সেই ফাইল যখন ইন্দিরা গান্ধীর টেবিলে পৌঁছায়, তখন ভীষণ রেগে
গিয়ে তিনি নোট লিখেছিলেন, "আরন্ট উই সেকুলার?"
অর্থাৎ, "আমরা না ধর্মনিরপেক্ষ দেশ?"
এরপরে ঠিক করা হয়েছিল যে একসঙ্গে দু'জন শিখ
নিরাপত্তা-কর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি ডিউটি দেওয়া হবে না।
৩১শে অক্টোবর
সতবন্ত সিং বলেছিল যে তার পেট খারাপ। তাই তাকে শৌচালয়ের কাছাকাছি যেন ডিউটি
দেওয়া হয়। এইভাবেই বিয়ন্ত আর সতবন্ত সিংকে একই জায়গায় ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। যার
পরিণতিতে স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অপারেশন - 'অপারেশন ব্লুস্টার'এর
বদলা নিয়েছিল তারা প্রধানমন্ত্রীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments