নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেলেন না যেসব তারকারা
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন একঝাঁক তারকা। রবিবার (২৬ নভেম্বর) দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নাম ঘোষণা শুরু করেন।
এর আগে কয়েক দফায় দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় প্রার্থী ঠিক করে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এবার নির্বাচনে অংশ নিতে প্রায় এক ডজন তারকা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। সেখান থেকে যাচাই-বাছাইয়ের পর কয়েকজন তারকার মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। তারা হলেন-
ঢাকা–১০ ও ঢাকা–১৮ আসন থেক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা করেছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ঢাকা-১০ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এই আসন থেকে মননোয়ন দেওয়া হয়েছে নায়ক ফেরদৌসকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন জনপ্রিয় ফোকসম্রাজ্ঞী এবং সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নীলফামারী-২ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বিশিষ্ট অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।
যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়ন থেকে যে তারকারা বাদ পড়েছেন তারা হলেন-
মাহিয়া মাহি
তারকাদের মধ্যে সবার আগে ১৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন মাহিয়া মাহি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী এই প্রার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যে আমার নির্বাচনী কর্মকা- শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছি। জনমানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বৃদ্ধি করছি। মনোনয়ন পাব কিনা জানি না। যদি পেয়ে যাই তাহলে কৃষিপ্রধান অঞ্চল চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকদের পক্ষে কাজ করব। প্রথমবারের মতো ফরম কিনে মনোনয়ন পাননি এই চিত্রতারকা।
শাকিল খান
১৮ নভেম্বর বাগেরহাট-৩ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চিত্রনায়ক শাকিল খান। গত নির্বাচনেও ‘বাগেরহাট-৩’ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। সেসময়ে মনোনয়ন না পেলেও এলাকায় তিনি নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন।
সিমলা
২১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন চিত্রনায়িকা শামসুন্নাহার সিমলা। ম্যাডাম ফুলি সিনেমার মাধ্যমে দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন তোলা এই নায়িকা ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন তিনি। মনোনয়ন পাননি তিনি।
রুবেল
বরিশাল-৩ আসনের মনোনয়ন কিনেছিলেন চিত্রনায়ক রুবেল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ কারণে অন্য কোনো দল বা আদর্শের কথা কখনো মাথায় আসে না। আর আমার জন্ম বরিশালের বাবুগঞ্জে। তাই বরিশাল-৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছি। মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন তিনিও।
সিদ্দিকুর রহমান
রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় কয়েকবারই মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান। এবারো সেই তালিকায় ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ঢাকা-১৭ এবং টাঙ্গাইল-১ আসনের ফরম সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো আসন থেকেই মনোনয়ন পাননি এই অভিনেতা।
ডিপজল
ঢাকা-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। মনোনয়ন মিলেনি তারাও।
শমী কায়সার
আরেক স্বনামধন্য অভিনেত্রী শমী কায়সারও ফেনী-৩ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে এর আগে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, ‘িগত কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করছি। সরাসরি দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত না থাকলেও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রয়েছি। সেই প্রেক্ষাপটে দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশা করছি।’ কিন্তু তার আশা পূরণ হয়নি। নির্বাচনে তিনিও মনোনয়ন পাননি।
আরশাদ আদনান
ঢাকাই ছবির প্রযোজক এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আরশাদ আদনান। তিনি পাবনা-৫ আসন থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। মনোনয়ন মিলেনি তারাও।
রোকেয়া প্রাচী
রোকেয়া প্রাচী (ফেনী-৩) আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনিও মনোনয়ন পাননি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ নভেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়। ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনে দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এতে ক্ষমতাসীন দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
চলতি মাসের ১৫ তারিখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নের আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments