Adsterra

আইপিএল যেভাবে বদলে দিচ্ছে ভারতের অর্থনীতি


আইপিএল যেভাবে বদলে দিচ্ছে ভারতের অর্থনীতি, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, ২০১৬ সালে আইপিএল টুর্নামেন্টে ভারতের আয় ৪.১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার, Hot News, Top News

সারা পৃথিবীতে ক্রিকেট খেলে মোট ১০৪ টি দেশ। কিন্তু জনপ্রিয়তার মানদন্ডে ক্রিকেটের জোয়ার চলে শুধুমাত্র
ভারতীয় উপমহাদেশে। গোটা দুনিয়ায় ক্রিকেট ভক্ত আছে মোট ১০০ কোটি। মানুষ তার ভেতরে ৯০% কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের। ক্রিকেটের শর্টার ফরমেট টি-টোয়েন্টিকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে ভারতের আইপিএল। আপনি জেনে অবাক হবেন, ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্ট গত পাঁচ বছরে তাদের ব্র্যান্ডভ্যালু বাড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। আইপিএল কিভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি টাকার টুর্নামেন্ট বনে গেল, এত এত টাকা কোথা থেকে আসে, টাকার বৃষ্টি কোথা থেকেই বা হয়। এইসব কিছুর খুঁটিনাটি জানবো আজকের প্রতিবেদনে।
 

ভারতে আইপিএল ছাড়াও কিন্তু অনেক টুর্নামেন্ট আছে। কিন্তু সবচেয়ে সফল লীগ বলতে এই ২০০৭ সালে শুরু হওয়া আইপিএল। আইপিএল এর পিছনে যে নামটি সবার আগে বলতে হয় সেই নামটি হলো ললিত মোদি। জি নেটওয়ার্ক ও ললিত মোদির কোম্পানির মাঝেই ইন্ডিয়ার খেলাগুলোর সম্প্রচার শর্ত নিয়ে রেশারেশির ভিত্তিতে শুরু হয় আইপিএল যাত্রা। তখন ইএসপিএন এর ইন্ডিয়ান প্রোমোটার ছিলেন ললিত মোদি। এবং তার আগ্রহতেই ইএসপিএন এর সাথে ১৯৯৭ সালে ৫ বছরের চুক্তি হয়। এদিকে এসএল গ্রুপের CO সুভাষচন্দ্র Zee sports চালু করেন শুধুমাত্র খেলাধুলায় বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে। ললিত মোদির কোম্পানির জন্য তার এই ইচ্ছাটা পূরণ হয় না। ঐদিকে জগমোহন কালমিয়ার "জি স্পোর্টস" কে অভিজ্ঞতার কথা বলে ব্রকাস্টিস রাইট দিতে মানা করেন। জি স্পোর্টস ঠিকই অন্যদের সাথে ক্রিকেট ম্যাচ দেখাচ্ছিল। এসএল গ্রুপের কর্ণধার সুভাষচন্দ্র তখন টোপিল গেটকে দায়িত্ব দেন টুর্নামেন্টের। আর তখন সেন বন্ড, ব্রেন লারা সহ অনেক প্লেয়ারকে সাইনও করিয়ে ফেলে। ব্যাপারটি বিসিসিআই। ভালোভাবে নিতে পারেনি। তারা প্লেয়ারদের কে প্রাইজ মানি বাড়িয়ে ঘরোয়াতে যেন তারা যেন আইসিএল না খেলে সেই পদক্ষেপ নেয়। এরপর ও যখন প্লেয়াররা যখন আইসিএল এ যোগ দিচ্ছিল তখন বিসিসিআই একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ললিত মোদি তখন নতুন প্ল্যান নিয়ে হাজির হয়। ট্রাজেডি ভিত্তিক ক্রিকেট টিম বা আইপিএল ৮ টি দলের বলিউড

তারকা এবং বিনেসম্যানদের জড়ো করে। শুরু হয় আইপিএল যাত্রা।

আইপিএল এর ব্র্যান্ড ভ্যালু টাকার হিসেবে ছাড়িয়ে যাচ্ছে অতীতের সব রেকর্ড। আইপিএলের আকাশ চুম্বন জনপ্রিয়তার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আইসিসি ও তাদের এফটিবিতে আইপি চলাকালীন সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে।

২০১৬ সালে আইপিএল টুর্নামেন্টে ভারতের আয় ৪.১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭ সালে আইপিএল টুর্নামেন্ট থেকে ভারতের আয় ৫.৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। এবং ২০১৮ সালে এই টুর্নামেন্ট থেকে আয় হয় বাংলাদেশি টাকায় ৫১ হাজার কোটি টাকা।

আইপিএল ২০১৯ থেকে ভারতীয় ক্রিকেট সংস্থা আনুমানিক ৬২ হাজার কোটি টাকা আয়ের হিসাব করছে। যা তার আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। আইপিএল টুর্নামেন্টের আয়ের প্রধান উৎস হল মিডিয়া স্পন্সরশিপ। ২০০৮ সালে যখন কর্তৃপক্ষ সিঙ্গাপুর মার্কেটিং এজেন্সি ওয়াল্ড স্পোর্টস এর কাছে শর্র বিক্রি করে তারা ভারতের চ্যানেল সনি ম্যাক্স এ খেলা সম্প্রচার করত। এবং ঔ চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ম্যাচে ১০ কোটি টাকা আয় হতো তাদের। এরপরে ২০০৮- ২০১৭ শুধুমাত্র সম্প্রচার শর্ত বিক্রি করে আইপিএল পেয়েছে ৯ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। এরপর ওয়াল্ড স্পোর্টস এর সাথে চুক্তি শেষ হবার পর সারা বিশ্বের বড় বড় মিডিয়ায় তোরজোর পড়ে যায়। নিলাম বসে। ফেসবুক আইপিএলকে ২০১৮ থেকে ২০২২ এই চার বছরের জন্য ৬৩০০ কোটি টাকা অফার করে। ২০১৭ সালে স্টার ইন্ডিয়া কাছে আইপিএল পাঁচ বছরের জন্য সম্প্রচার শর্ত বিক্রি করে। যার মূল্য প্রায় ২.৫৫ বিলিয়ন ডলার। যার বাংলাদেশি টাকা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার।

সহজ করে বলতে গেলে ২০০৮ সালে আইপিএল এর প্রতি ম্যাচে আইপিএল এর ইনকাম ছিল ১০ কোটি টাকা এবং ২০১৮ তে এসে তা দাঁড়ায় ৮৫ কোটি টাকা। ভারতের জিডিপিতেও আইপিএল এর বিশাল অবদান। ২০০৩ সালে শুরু হয় টুয়েন্টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের এই ফর্মুলাটি। এরপর থেকেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে তুমুল বেগে। আইপিএল এর জনপ্রিয়তা দেখে পশ্চিমা বিশ্ব পাগলের মত খুঁজছে কিভাবে তারাও স্রোতে গা ভাসাবে। আর এদিকে তরতর করে বাড়িছে আইপিএলে জনপ্রিয়তা। এবারের উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখলেই কিন্তু বোঝা যায়, আইপিএল ঠিক কোন উচ্চতায় উঠে গেছে। সুতরাং এটাই বলা যায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই ঝড় সামনে আরও বড় হতে যাচ্ছে নিঃসন্দেহে।

চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.