ফরাসি নাট্যকার রোমাঁ রোলাঁর
ফরাসি নাট্যকার রোমাঁ রোলাঁর জন্মগ্রহণ করেন ২৯ জানুয়ারি ১৮৬৬ সালে এবং তিনি মৃত্যুবরণ করে ৩০ ডিসেম্বর ১৯৪৪ সালে। ফ্রান্সের বার্গান্ডী প্রদেশের একটি ছোট শহর ক্লামেসি । ১৮৬৬ সালেন ২৯শে জানুয়ারি এই শহরেই জন্ম হয়েছিল সমান ফরাসী সাহিত্যিক মানবতার পূজারী রম্যা রোলার । জন্ম থেকেই ছিলেন রগ্ন অসুস্হ । জীবনের কোন আশা ছিল না । কিন্তু মায়ের স্নেহ ভালবাসা যন্তে মৃত্যুকে জয় করলেন রোলা । কিন্তু মা রক্ষা করতে পারলেন না তার কোলের মেয়েটিকে । দু বছর বয়েসে মারা গেল একমাত্র কন্যা । রোলার বয়স তখন পাচ । প্রথম মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করলনে ।
নিজের জীবনস্মৃতিতে লিখেছেন আমার শৈশব যেন মৃত্যুর ছায়াঘেরা এক বন্দীশালা । এই বন্দীশালার জগৎ থেকে যিনি রোলাকে মুক্তির জগতে নিয়ে এলেন তিনি রোলার মা । রোলার জীবনে মা বাবা দুজনেরই ছিল গুরুত্বপূণ প্রভাব । তবে মায়ের প্রভাব ছিল অনেকে বেশি । মা ছিলেন ধমপরায়ণ, সৎ পরিশ্রমী আর ছিল সঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগ । বাবা ছিলেন স্বাধীনচেতা আদশবাদী ধম সম্বন্ধে কোন মোহ ছিল না তার । পিতা মাতার এই পরস্পর বিরোধী মনোভাবের কারণেই সুদীঘকাল রোলোকে গভীর অন্তদ্বন্দ্বের মধ্যে অতিবাহিত করতে হয়েছে । রোলা ছিলেন রুগ্নদেহ । ঘরের বাইরে বড় একটা যেতেন না । চার দেওয়ালের নিঃসঙ্গতারকে ভোলবার জন্য মা তাকে সঙ্গীতের জগতে নিয়ে গেলেন । রোলার মা পিয়ানোতে ছিলেন দক্ষ শিল্পী ।
মায়ের পিয়ানে শুনতে শুনতে সঙ্গীতের মধ্যে তার এক সহজাত দক্ষতা ছিল । অল্পদিনের মধ্যেই মোৎসাট বিঠোফেনের সঙ্গীতের মধ্যে তিনি আত্নস্হ হলেন । এই প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন তাদের তাছে আমি ঈ । যখনই আমার মন সংশয় আর ব্যথতার ভারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে বিঠোফোনের সঙ্গীত আমার অন্তরে নবজীবনে দীপশিখা জালিয়ে । শুষ্ক জমিতে বৃষ্টিধারার মত জামান সঙ্গীত আমার হৃদয় শুষ্কতার বুকে বারিধারা এনে দিয়েছে মোৎসাট বিঠোফোন আমার জীবনে সাথে একায় হয়ে আছে । যখন শিশু ছিলাম প্রতিমুহূতে মনে হত মৃত্যু এসে আমাকে ঘিরে ফেলেছে । মোৎসাটের একটি সুর আমাকে যেন পাহারা দিত । রোলা শৈশবে পা দিলেন ক্লামেসি শহরে ভাল কোন স্কুল ছিল না । প্রথমে বাবা ঠিক করলেন রোলার বাবা ছিলেন শহরের নামকরা নোটারী ।
আথিক উপাজন ভালই হত । কিন্তু ছেলের কবিষ্যতের কথা ভেবে নোটারীর কাজে ইস্তফা দিয়ে প্যারিসে একটা ব্যাম্কে সাধারণ চাকরি নিয়ে বাস করলেন । রোলা ভতি হলেন প্যারিসের সবচেয়ে নামকরা স্কুল লিসেতে । কিন্তু স্কুলের নিয়মবাধা জীবন ভাল লাগত না তার । মাঝে মাঝে প্রাণ হাপিয়ে উঠত । এই স্কুলেই পরিচয় হল পল ক্লডেলের সাথে । উত্তরকালে দুজনেই হয়ে উঠোছিলেন ইউরোপের চিন্তাজগতে খ্যাতিমান পুরুষ । রোলা ছাত্র অবস্হাতেই আকৃষ্ট হলেন সঙ্গীতশিল্পী ভাগনারের প্রতি । তার মনে হয়েছিল তিনিও ভাগনারের মত শিল্পী হবেন । কিন্তু মা বাবা চাইলেন ছেলে যেন নিজের পায়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে । তার জন্যে এমন কিছু শিক্ষার প্রয়োজন যা অথ উপাজনে সাহায্যে করবে । লিসের স্কুলের পাঠ করে রোলা ভতি হলেন নমাল স্কুলে ।
এই স্কুল ছিল ফ্রান্সের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্কুল । এখানে নিয়ম শৃঙ্খলা পড়াশুনার মনোযোগের প্রতি জোর দেওয়া হত । এখানে সাহিত্য দশন ইতিহাসের মধ্যে প্রথম রোলা খুজে পেফেন কয়েকজন অন্তরঙ্গ বন্ধু এবং আদশ শিক্ষক । এই শিক্ষকদের কাছ থেকে রোলা পেয়েছিলেন এক উদার সংস্কারমুক্ত মানসিকতা । তার বন্ধুদের মধ্যে কয়েকজন পরবতীকালে হয়েছিলেন ফ্রান্সের মুক্তিদের মুক্তিপথের । দিশারী । নমাল স্কুলে পড়বার সময় রোলা ছিলেন গভীর মনোয়োগী ছাত্র । ক্লাসের পাঠ্য পুস্তকের বাইরে পড়তেন তলস্তয় শেকসপসীয়র হোমার শুনতে জাগনারের সঙ্গীত । সঙ্গীত আর সাহিত্য ধীরে ধীরে তার মধ্যে সৃষ্টি করছিল এক নতুন জগৎ । সঙ্গীতের সাথে সাহিত্যের প্রতিও ছিল তার আজন্ম আকষণ । যখনই সময় পেতেন কবিতা লিখতে ।
সাহিত্য সঙ্গীতের উপর প্রবন্ধ লিখতেন । এই সময় রোলার মানস জগতে ঘটল এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা । রোলার আদশ ছিলেন মহান রুশ লেখক তলস্তয় । তার রচনা সমস্ত তরুণদের উদ্দীপিত করত । প্রতিটি আদশ ছিলেন মহান রুশ লেখক তলস্তয়। "
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments