Adsterra

উত্তর কোরিয়ার অদ্ভুত সব নিয়ম




উত্তর কোরিয়ার অদ্ভুত সব নিয়ম, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, চোখ কপালে উঠবে উত্তর কোরিয়ার অদ্ভুত সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানলে, Today Viral News, Hot News

পৃথিবীর দুর্গম কয়েকটি দেশের নাম যদি বলা হয় তাহলে প্রথমে যে নামটি উঠে আসবে সেটি হলো উত্তর কোরিয়া। দেশটির ভেতরে কি ঘটছে তা বাইরের খুব কম মানুষই জানেন। সব কিছুই চরম গোপনীয়তার প্রাচীরে ঢাকা। বিশ্বের প্রায় সব দেশের জন্য দেশটিতে প্রবেশ এক রকম নিষিদ্ধ বলা যায়। এরপরেও
ফাঁক ফুকুর দিয়ে যতটুকু তথ্য বাইরে আসে তা শুনলে বিস্মিত হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। চোখ কপালে উঠবে উত্তর কোরিয়ার অদ্ভুত সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানলে। 

উত্তর কোরিয়া নিজেদের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবি করে থাকে। তবে তাদের গণতন্ত্রের নমুনা শুনলে যে কেউ অবাক হবেন। দেশটিতে পাঁচ বছর অন্তর ভোট হয় ঠিকই। কিন্তু সেখানে প্রার্থী পদে দাঁড়ান একজনই। তিনি হলেন কিম জং উন। আর সেই নির্বাচনে প্রাপ্ত বয়স্ক সকলেরই ভোট দেয়া বাধ্যতামূলক। আর এভাবে নির্বাচিত হয় গণতান্ত্রিক নেতা

মানুষ চুলের কত না স্টাইল। যার যেমন খুশি সেভাবে স্টাইল করে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের জন্য মাত্র ২৮ রকমের চুলের স্টাইল নির্ধারণ করা আছে।ছেলেদের জন্য ১০ ধরনের আর মেয়েদের জন্য ১৮ ধরনের। প্রায় সবাইকে এই নির্ধারিত স্টাইল গুলোর মধ্যে চুল কাটতে হয়। তবে যদি এর মধ্যে কারো কোনো স্টাইলই পছন্দ না হয় তবে তাদের কাছে একটাই বিকল্প উপায় থাকে। তা হলো মাথার সব চুল ফেলে দেওয়া। তবে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয় দেশটির শাসক কিম জং উন এর জন্য। তিনি নিজের ইচ্ছামতো চুলের স্টাইল করতে পারেন। তবে তার স্টাইল কেউ নকল করতে পারবে না। যদি করে সেই ব্যক্তির জন্য একটাই শাস্তি। আর তা হলো মৃত্যুদণ্ড ।

দেশে দেশে এখন শত শত স্যাটেলাইট চ্যানেল। দর্শক যা মন চায় তাই দেখতে পান। তবে উত্তর কোরিয়াতে মাত্র তিনটি টিভি চ্যানেল রয়েছে। আর রাজধানীতে রয়েছে চারটি চ্যানেল। আর ইচ্ছা হোক বা না হোক দেশটির নাগরিকদের এই কয়েকটি চ্যানেল দেখারই অনুমতি আছে। তাও নির্দিষ্ট কয়েক ঘন্টাই সম্প্রচার হয়। এটাও কিম জং উন এর গুণ গান।

আমরা চাইলেই বিদেশে যে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারি। কিন্তু উত্তর কোরিয়া নাগরিকেরা এই সুযোগ পায় না। এখানকার কেউই বাইরের দেশের কারো সাথে কথা বলতে পারে না। আর যদি বাইরে কারো সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তবে তার জন্য শাস্তি নির্ধারিত।

যেখানে বিশ্বের প্রতিটি দেশ ১০০ ভাগ সাক্ষরতা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে উত্তর কোরিয়ার শিশুরা পড়াশুনা সুযোগ পায় না। পৃথিবীতে পড়াশোনার খবর ব্যয়বহুল।

কারণ পৃথিবীর সব দেশে প্রায় বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করানোর পর তাদের বসার টেবিল চেয়ারের ব্যবস্থা স্কুল কর্তৃপক্ষ করে থাকে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার আগে বসার চেয়ার টেবিল অভিভাবকদের কিনে দিতে হয়। এছাড়া স্কুলের নির্ধারিত ফি তো থাকবেই। তাই দেশটিতে উচ্চ ধনীরা ছাড়া কেউ বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করতে সক্ষম হয় না। আবার এখানে বাচ্চাদের ইতিহাস হিসেবে পড়া হয় শুধুমাত্র কিম জং উন ও কিম ইয়ং সাং এর বীরত্বের কথা।

উত্তর কোরিয়াতে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করতে পারে না। এদেশে কেবল মিলিটারি অফিসার ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাই ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করতে পারে। এদেশের সরকার কখনোই চাই না তার দেশে জনগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরের দেশের খোঁজ খবর রাখুক।

দৈনন্দিন জীবনে আমরা মোবাইল দিয়ে হাজার ছবি তুলে থাকি। কিন্তু উত্তর কোরিয়ায় সেটি সম্ভব নয়। এ দেশের নাগরিকেরা চাইলেও ছবি তুলতে পারেন না। কোন টুরিস্ট বা ভ্রমণরত ব্যক্তি ও এদেশের মানুষের ছবি তুলতে পারে না

এমনকি এদেশে গরিব মানুষের সাথে কোন টুরিস্ট কথাও বলতে পারেনা। ভ্রমণরত অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করা এ দেশে একদম নিষিদ্ধ। টুরিস্ট এদেশে প্রবেশ করার সময় এয়ারপোর্ট থেকে তাদের মোবাইল ফোন জমা নেয়া হয়। ভ্রমণ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় আবার তাদের মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়া হয়। অর্থাৎ দেশের ভিতরে কোনো তথ্য আপনি বাইরে নিয়ে যেতে পারবেন না।

উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের জন্ম নিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। কারণ কিম জং উন এর ধারণা জনসংখ্যা বাড়লে তাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা বাড়বে। তাই কোনো ধরনের জন্মনিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ দেশটিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উত্তর কোরিয়াতে ৮ জুলাই এবং ৭ ডিসেম্বর কোনো ভাবেই দেশের কোনো নাগরিক চাইলেও কোনো রকম অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারে না। তা হোক সেটা জন্মদিন কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান। এমনকি এই দিন দুইটিতে কেউ হাসতেও পারবেনা। কারণ উত্তর কোরিয়া এই দুই দিনটিতে মহান নেতা কিম ইং সাং ও কিম জন ডিলের মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের মানুষ চাইলেই তাদের পছন্দের গাড়ি কিনতে পারে

কিন্তু উত্তর কোরিয়াতে কোনো সাধারণ মানুষ চাইলেও তাদের পছন্দের গাড়ি কিনতে পারে না। এদেশে সাধারণ মানুষের জন্য গাড়ি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন সরকার প্রধান কিম জং উন। দেশের শুধু সরকার, সেনাবাহিনী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে পারে। যার জন্য পুরো উত্তর কোরিয়াতে মাত্র ১০০ টির মত গাড়ি রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি কম থাকার ফলে এদেশের রাস্তাঘাট একদমই ফাঁকা থাকে

সাধারণ মানুষ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে বা পায়ে হেঁটে যাতায়াত করে। এ সকল নিয়ম মেনে চলা উত্তর কোরিয়ার জনগণের জন্য বাধ্যতামূলক। যেখানে পুরো বিশ্ব ছুটছে গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করে স্বাধীনতার পথে। সেখানে কিম জং উন এর উত্তর কোরিয়া যেন এক বিশাল পরাধীনতার কারাগার।

চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.