ইন্দোনেশিয়া : বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ
প্রকৃতি কখনো অপার্থিব সুন্দর, কখনো নীরব। একই সাথে প্রকৃতির এই তান্ডব ও সৌন্দর্য ধারণ করে রেখেছে যে দেশের নাম ইন্দোনেশিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র এটি। একই সাথে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন মানুষকে বিমোহিত করে তেমনি লাগাতার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, ভূমিধস, কিংবা ঘূর্ণিঝড় এর মতো প্রাকৃতিক তান্ডব মানুষকে স্তদ্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশ থেকে সাত হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্র। ছোট বড় সতেরো হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে এর গঠন। আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে ১৩ গুণ বড়। তবে জনসংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে মাত্র ১০ কোটি বেশি। জনসংখ্যা দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম দেশ ইন্দোনেশিয়া।
সেই সাথে বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এটি।
ইন্দোনেশিয়ার পৃথিবীর অন্যতম পুরাতনের সভ্যতার একটি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। প্রায় ১৫ লাখ বছর আগে জাভাম্যানদের উপস্থিতি ছিল এই ইন্দোনেশিয়ায়। তবে আধুনিক সভ্যতা শুরু হয় এখানে দুই হাজার বছর আগে। ইন্দোনেশিয়ার আধুনিক সভ্যতার সূচনা হয় দুই হাজার বছর আগে থেকে। এ সময় তাইওয়ান থেকে কিছু মানুষ অঞ্চল দিতে আসেন এবং এখানকার আদিবাসীদের সাথে মিশে যায়। পরবর্তী ১০০ বছরে নতুন একটি সভ্যতার জন্ম হয় অঞ্চলটিতে। সপ্তম শতাব্দীতে এই অঞ্চলটিতে প্রসার ঘটে হিন্দু আর বৌদ্ধ ধর্মের। এখানে মুসলিমদের আগমন হয় ১৩ শতকে। পরবর্তী ৩০০ বছরে এই অঞ্চলটিতে প্রধান ধর্ম হয়ে উঠে ইসলাম।
ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘ দিন ডাচ দের অধীনে ছিল। ১৬০২ সালে এখানে ওলন্দাজ শাসনের শুরু হয়।এরপর প্রায় ৩০০ বছর এ শাসন অব্যাহত থাকে।এর মাঝে কিছু সময় ইন্দোনেশিয়ার কিছু অঞ্চল পুর্তগিজ
ও জাপানরা ও নিয়ন্ত্রণ করে।১৯৪৯ সালে দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নেদারল্যান্ডস এর শাসনের অবসান হয়।
১৯৫০ সালে ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের ৬০ তম সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয় শুকর্ণ। তবে সংবিধানে পরিবর্তন এনে পরবর্তী ১০ বছরের দেশটিতে একনায়কতন্ত্র সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলেন তিনি। এরপর ১৯৬৫ সালে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। এতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। গৃহবন্দী হয়ে পড়ে সুকর্ণ আর ১৯৬৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জেনারেল সৌহার্দ্য এর কাছে। পরবর্তী ৩১ বছরে অঞ্চলটি শাসনকর্তা ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে পতন হয় তার ও।
নানা জাতি আর ভাষার মিশ্র সংস্কৃতি রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা এর যোগ হয়েছে ডাচ, পুর্তগিজ, আর মুসলিম ঐতিহ্য। এর প্রভাব ও পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার মানুষের জীবনযাত্রায়। ইন্দোনেশিয়া রীতিনীতি খাবার ও পোশাক নিয়ে আরো বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।
যে অঞ্চলে একসময় হেঁটে ছিল জাভাম্যানেরা সে অঞ্চলই আজ নানা প্রযুক্তি আর হালের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের এক মিশ্র গোলকধাঁধা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ান।
ইন্দোনেশিয়ার সরকারি ভাষা বাহাসা ইন্দোনেশিয়া।ইন্দোনেশীয় ভাষাটি মালয় ভাষার একটি প্রমিত রূপ, যেটি বহু শতাব্দী ধরে ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জে লিংগুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। দেশটির বেশিরভাগ মানুষ কথা বলে জাভানীয় ভাষায়। দেশটিতে প্রচলিত আছে ৭৪২টি ভাষা
যার মধ্যে ৭৩৭টি জীবিত। তাই এক মিশ্র ভাষাভাষীদের দেশ বলা চলে ইন্দোনেশিয়াকে।আর এই ভাষার বৈচিত্র্যতা ইন্দোনেশিয়ার মানুষকে দিয়েছে পারস্পরিক সম্প্রীতি।
ইন্দোনেশিয়া একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটিতে প্রায় ৮৬ শতাংশের ও বেশি মানুষ মুসলিম। যাদের সিংহ ভাগ মুসলিম গোত্রের অন্তর্গত। নারীদের হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক না হলেও বেশিরভাগ নারীকেই হিজাব পরিধান করতে দেখা যায়। পুরুষদের রয়েছে প্রথম স্ত্রীতে সম্মতিতে দ্বিতীয় বিয়ের রেওয়াজ ও আছে দেশটিতে।
পুর্তগিজদের হাত ধরে খ্রিস্টান ধর্মের প্রসার ঘটেছিল ইন্দোনেশিয়ায়। ১১ শতাংশ ক্যাথোলিড বর্তমানে বাস করে ইন্দোনেশিয়ার। ৩ শতাংশ মানুষ হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
ইন্দোনেশিয়ায় সবাই পশ্চিমা পোশাকে অভ্যস্ত। তবে পাশাপাশি ধরে রেখেছে নিজেদের ঐতিহ্য ও। বাটিকের কাপড় দেশটিতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। নারীদের প্রধান ঐতিহ্যবাহী পোশাক হলো কেবায়া ও সারো, বিশেষ দিবসে এই পোশাকে সাজেন জাভাম্যানেরা। আর পুরুষদের পোশাক রানকোন ও বাজোকুরু।
এছাড়াও পেছি নামক ভেলভেটের এক ধরনের টুপি ও এই অঞ্চলটিতে জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার মানুষ ও ভাত খায়। তবে সেই সাথে মাংস ও শাকসবজিও থাকে পাতে। তবে রান্নায় নারিকেল, দুধ ও বিচিত্র হরেক মশলার ব্যবহার এদের খাবারের স্বাদকে আরো করেছে অনন্য।
দীর্ঘদিন ভিনদেশী শাসনের অধীনে ও থাকার পরেও দেশটি রয়েছে নিজস্ব রীতিনীতি। এখানকার বাসিন্দারা খুবই অতিথি পরায়ণ, মিশুক সাথে হাস্যজ্জল। ঘরে প্রবেশের সময় জুতা খুলে রাখা ভদ্রতা। ডান হাত খাবারের কাজে ব্যবহৃত হয়। ও বাম হাত তুচ্ছ কাজে। তব সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বা কাউকে কিছু দেয়ার সময় ডান হাতের উপর বাম হাত রাখতে দেখা যায় এখানকার মানুষদের।
তাদের মতে মাথা শরীরের সবচেয়ে পবিত্র অংশ, তাই মাথায় হাত দেয়াটাকে ভালো চোখে দেখা হয় না দেশটিতে।
ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করতে যায় তাহলে প্রথমে আসে, দেশটি হলো একটি প্রেসিডেন্ট শাসিত রাষ্ট্র। বহুদলীয় গণতন্ত্র থাকায় এখানে প্রেসিডেন্টের হাতেই রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা থাকে। ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছে জোকো উইদোদো। ২০১৯ সালে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দেশটির সপ্তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
ইন্দোনেশিয়া রয়েছে দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট। যার প্রথম কক্ষের নাম হচ্ছে পিপলস কনসালটেটিভ এসেম্বলি এর সদস্য সংখ্যা ৫৭৫। আর রিজিওনাল রিপ্রেজেনটেটিভ কাউন্সিলের রয়েছে ১৩৬ সদস্য।
বিশ্ব রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থানে ইন্দোনেশিয়া। সামরিক শক্তি দিক থেকে বিশ্বে ১৩ তম দেশের বাইরে এর ৯৫ টি দূতাবাস রয়েছে এশিয়ার।
ছোটবেলা থেকে সাধারণ জ্ঞান বয়ে যারা পড়েছেন ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। তারা কিন্তু এবার হোঁচট খেতে পারেন। কারণ রাজধানী সরিয়ে নেয়ার মত নজির দেখিয়েছে এই দেশ। সম্প্রতি জাকার্তা থেকে নুসানতারা তে রাজধানী বদল করেছে এই দেশ। রাজধানীর বদলানোর বিরল নজির রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। দেশটির সবচেয়ে বড় শহর জাকার্তা। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল শহর ও এটি। তবে এক কোটি মানুষ শহরটির মাটির নিচ থেকে তোলা পানি ব্যবহার করে। তাই দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে শহরটির মাটির স্তর। তাই গেল বছর রাজধানী সরিয়ে নুসানতারা তে সরিয়ে নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
পর্যটন যে দেশে অন্যতম খাত সে দেশ ও ভ্রমণের তালিকায় থাকতেই পারে। বাংলাদেশ থেকে যারা কম খরচে চমৎকার একটি চমৎকার ট্রিপ দিতে চান, তাদের অন্যতম ডেসটিনেশন হতে পারে ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণের খরচ মোটামুটি হাতের নাগালেই। বাজেটের মধ্যে এখানে আলিশান সব হোটেল আর রিসোর্ট পেয়ে যাবেন। আপনি যদি ইতিহাস পছন্দ করেন তাহলে এখানে শত বছরের অনেক মন্দির রয়েছে। আর যারা এক্টিভিটিস পছন্দ করে তারা এখানে পেয়ে যাবেন রিভার রাফটিং, ওয়াটার রাফটিং এর অসংখ্য একটিভিটিস
ইন্দোনেশিয়া পর্যটকদের জন্য অন্যতম স্থান। ১৭ হাজার দ্বীপ পাশাপাশি ৫৭ শতাংশ নিবির অরণ্য ও পর্বতমালা। পর্যটকদের সব রকমের তৃষ্ণা খোরাক মেটাতে একাই এই দেশ ইন্দোনেশিয়া। তাপমাত্রা সহনীয় থাকায় জুলাই কিংবা আগস্টের দিকে পর্যটন করা যথেষ্ট সময়।
বালি অন্বেষণ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন স্থান বালি। থেকে ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ সুন্দর মন্দির, রোমাঞ্চকর নাইটলাইফ থেকে মুগ্ধকর জলের খেলা, বালিতে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। অনন্য সংস্কৃতি, মশলার সুগন্ধ এবং অত্যাশ্চর্য সবুজ আপনাকে অনুভব করবে যেন আপনি স্বর্গে আছেন।
ওয়াটার রাফটিং, ব্লু লেগুন স্নরকেলিং, বালিনিজ ম্যাসেজ, বালি সুইং, বালি সাফারি, সানরাইজ ট্রেকিং, প্যারাগ্লাইডিং ইত্যাদি বালিতে করতে পারবেন।
উবুদ হল বালির একটি শহর যা গিয়ানিয়ার রিজেন্সির পাদদেশে ধানের ধান এবং খাড়া উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত। ঐতিহ্যগত শিল্প ও সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক বিস্ময় এবং চিত্তাকর্ষক স্থাপত্যের কারণে এটি কয়েক বছর ধরে ইন্দোনেশিয়ার পর্যটনকে বিকশিত করেছে। দুর্দান্ত খাবার, দর্শনীয় স্থান এবং আধ্যাত্মিকতার সাথে সুস্থতা এবং দুঃসাহসিক অভিযানে ইন্দোনেশিয়ার উবুদ একটি দারুণ জায়গা।
এখানে রাইস টেরেস দেখতে পারবেন, পাপুরা তির্তা এম্পুলের পবিত্র ঝর্না,মাঙ্কি ফরেস্ট, ক্যাম্পুহান রিজ ওয়াক, কান্টো ল্যাম্পো এবং টিবুমানা জলপ্রপাত দেখতে পারবেন।
কমোডো জাতীয় উদ্যান অন্যতম বিখ্যাত ছুটির গন্তব্য ইন্দোনেশিয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং সামুদ্রিক জীবন অন্বেষণ করতে। এটি অঞ্চলের সমগ্র জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বন্যপ্রাণী এবং সামুদ্রিক উভয়ই। এর আগে এটি বিপন্ন প্রজাতির কমোডো ড্রাগন সংরক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। ড্রাগনদের মুখোমুখি দেখা ছাড়াও, আপনি কালং দ্বীপে উড়ন্ত শিয়াল দেখতে পারবেন, গোলাপী সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে পারবেন। পান্তাই মেরাহ, কোমোডো দ্বীপে স্কুবা ডাইভিং উপভোগ করতে পারবেন এবং মেসা গ্রামে স্থানীয়দের সাথে দেখা করতে পারবেন।
যোগকার্তা হল একটি প্রাণবন্ত শহর যা শাস্ত্রীয় জাভানিজ শিল্প ও সংস্কৃতির গর্ব করে। শহরের নামের অর্থ এমন একটি শহর যা উন্নতির জন্য উপযুক্ত।
অ্যাডভেঞ্চার উৎসাহী থেকে শুরু করে ব্যাকপ্যাকার, সমুদ্র সৈকত প্রেমী থেকে পার্টি প্রাণী, গিলি দ্বীপপুঞ্জ সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এটি তিনটি ছোট দ্বীপের একটি গ্রুপ , গিলি ট্রাওয়ানগান, গিলি এয়ার এবং গিলি মেনো। সামুদ্রিক জীবন এবং প্রবাল গঠনের প্রাচুর্য এটিকে স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। সুস্বাদু স্থানীয় খাবার, জোরে পার্টির দৃশ্য এবং স্যুভেনির হিসাবে পুরোপুরি ফ্রেম করা ফটোগ্রাফে ক্লিক করার জন্য এই স্বর্গ ইন্দোনেশিয়ার একটি ভ্রমণের গন্তব্যস্থল।
নুসা দুয়ার অর্থ 'দুটি দ্বীপ' কারণ বালি উপসাগরে দুটি দ্বীপ রয়েছে - দক্ষিণ দিকে উপদ্বীপ দ্বীপ এবং উত্তর দিকে নুসা ধর্ম দ্বীপ। স্বচ্ছ জল এবং বালুকাময় সৈকতের জন্য পরিচিত, নুসা দুয়া বিলাসবহুল রিসর্ট, প্রাচীন মন্দির এবং পার্কে পরিপূর্ণ।
ডিয়েং মানে 'দেবতার স্থান'। এটি একটি জলাভূমি মালভূমি যা প্রাউ পর্বতের অগ্ন্যুৎপাত দ্বারা গঠিত হয়েছিল। এটি একটি ক্যালডেরা কমপ্লেক্সের মেঝে তৈরি করে যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার মিটার উপরে বসে। ডিয়েং মালভূমি ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম সেরা আকর্ষণ যেখানে আপনি আগ্নেয়গিরির হ্রদ এবং পর্বত, প্রাচীন মন্দির,ধ্বংসাবশেষ, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ এবং ধানের টেরেসগুলি ঘুরে দেখতে পারেন। এলাকার শীতল জলবায়ু গরম ঋতুতে এটিকে একটি দুর্দান্ত আকর্ষণ করে তোলে।
জাকার্তা একটি প্রাণবন্ত শহর তার আধুনিক শহর জীবন, বিশ্বমানের খাবার, বোহেমিয়ান কফি শপ এবং উদীয়মান শিল্প সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। উন্নত জীবনের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ জাকার্তায় আসে।
রাজা আম্পাত ১৫০০ টিরও বেশি ছোট দ্বীপের একটি সংগ্রহ। স্ফটিক নীল জল, লুকানো উপহ্রদ, সাদা-বালির সৈকত এবং জঙ্গলে আচ্ছাদিত দ্বীপগুলি রাজা আম্পাতকে ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম প্রধান পর্যটন স্থান করে তোলে।
বাংলাদেশ থেকে যারা ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য কিছু তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। ইন্দোনেশিয়া অন অ্যারেভেল ভিসা রয়েছে বাংলাদেশের যাত্রীদের জন্য।
বিমান্দ যাতায়াত করতে হয় সময় লাগে ৬ ঘন্টা। যারা কম খরচে ইন্দোনেশিয়ার একটি ভালো ট্যুর দিতে চান তাদের শিখিয়ে দিচ্ছি কিছু ট্রিকস।
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণের এক দিন আগেই টিকিট কাটতে গেলে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কিংবা তার বেশি টাকা লাগবে। তাই কম খরচে ঘুরে আসতে চান, তারা টিকিট কাটবেন অন্তত মাস দুইয়েক আগে। তাহলে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকাতে পেয়ে যাবেন বিমানের টিকিট।
ট্যাক্সিতে চলাচলের সময় মিটার ব্যবহার করবেন । এতে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকায় চলে যেতে পারেন গন্তব্যে।
মোবাইলের সীম কিনতে গুণতে হবে ৬০০ টাকা। হোটেল ভাড়া নিতে পারেন বিভিন্ন রেঞ্জে। দেড় হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন পছন্দের মত থাকার জায়গা।
ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রার নাম রুপিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়ার একটি বাজার ভিত্তিক অর্থনীতি রয়েছে যেখানে সরকার কিছু মৌলিক পণ্য যেমন জ্বালানী, চাল এবং বিদ্যুতের মূল্য নিয়ন্ত্রণ সহ একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
ইন্দোনেশিয়ার মূল আয় পর্যটন হলেও কৃষি খাতে ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। চাল, বাদাম, কোকো, কফি, মাংস আর ডিম রপ্তানি করে দেশটি। পাম তেল রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে এই দেশে।
গোটা বিশ্বের চাহিদা অর্ধেক পাম তেলই আসে এই দেশটি থেকে।
ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। অর্থাৎ সারা বছরই এখানে কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। প্রশান্ত মহাসাগরে রিং অফ ফায়ারে অবস্থিত হাওয়ায় এখানে ব বেশ কয়েকটি আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এর কারণে সুনামি, ভূমিকম্প কিংবা বন্যা, সব সময় এই দেশটিতে লেগেই থাকে। প্রতিবছর গড়ে প্রায় দেড় হাজার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় ইন্দোনেশিয়া। ২০১৮ সালে পৃথক দুটি ভূমিকম্পে পাঁচ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছিল এই দেশটিতে। ২০২১ সালে প্রাণ যায় অন্তত ২০০ জনের।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতির এমন অনেক অনেক কিছু হয়তো আছে যা আমাদের অজানা। ইন্দোনেশিয়া অনেক মজার কিছু তথ্য।
সব থেকে বেশি তারুণ্যে জয়গান দেখা যায় ইন্দোনেশিয়ায়। দেশটির প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বয়স ৩০ এর নিচে। ৬০ ঊর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা মাত্র ৮ শতাংশ। তাই বলা হয়ে থাকে এই ১৬ কোটির বেশি মানুষ যদি সঠিকভাবে পরিবার পরিকল্পনা না করে তাহলে খুব শিঘ্রই হয়তো ইন্দোনেশিয়ার জনসংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে বিশ্বে যে কোন দেশকে।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমানদের আবাসস্থল হলেও ইন্দোনেশিয়ার রয়েছে প্রাচীন হিন্দু আর বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন স্থাপত্য। এমনকি বিশেষ বৃহত্তম বুদ্ধ মন্দির ও এই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। নয় শতকে নির্মিত বড় বুদের মন্দিরটি এই মন্দিরটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দির।
এক দেশ থেকে অন্য দেশে শিল্প, সংস্কৃতির মিল তো অনেকে আছে। তবে আশ্চর্যেএ ব্যাপার হলো, মনাকো ও ইন্দোনেশিয়ার পতাকা রয়েছে হুবহু মিল। উপরে লাল নিচের সাদা।
ইনস্টাগ্রামে এর সবচেয়ে বেশি বিচরণ করা শহর কিন্তু জাকার্তা। এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট হয় এশিয়ার এক নম্বর ও বিশ্বের আট নম্বর সহ এটি। এখন পর্যন্ত জাকার্তাকে নিয়ে ইনস্টাগ্রামে করা হয়েছে প্রায় ৯০ লাখের ও বেশি পোস্ট। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুলটির দেখা পাবেন ইন্দোনেশিয়াতে।
বৃহদাকৃতির লাল রঙের সাদা ছোপ ছোপ দাগযুক্ত ফুলটির নাম রাফলেসিয়া তুয়ান-মুদাই। এটি রাফলেসিয়া পরিবারভুক্ত একটি ফুল। এই ফুল আকৃতিতে ছাড়িয়ে যায় ৩ ফিট পর্যন্ত। আবার এক একটি ফুলের ওজন প্রায় ১০ কেজি। তবে এই ফুল বাঁচে মাত্র কয়দিন। আর ও একটি অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এর ফুল থেকে সুগন্ধের বদলে ভেসে আসে বিকট দুর্গন্ধ। তাই একে অনেকে পদ্মের মরদেহ বলে থাকে।
No comments