Adsterra

সূর্যোদয়ের দেশ জাপান


সূর্যোদয়ের দেশ জাপান, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, জাপানের ৯০ ভাগ মোবাইল ফোন ওয়াটার প্রুভ, Today Trending News, Today Viral News, Hot News, Top News

পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়াকে হার মানিয়ে মাত্র ৭০ বছরে হিরোশিমা নাগাসাকিতে সভ্যতার ফুল ফুটিয়েছিল যে দেশ সেটি হলো জাপান।
বোমার আঘাতে দেশটি যখন একেবারে ক্ষত-বিক্ষত, যখন গবেষকরা ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে, দেশটি আর কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।ঠিক তখনই নাগরিকদের পরিশ্রমে আজ জাপান পৃথিবীর অন্যতম একটি উন্নত রাষ্ট্র। আর সে কারণেই বোধ হয় সূর্য্যি মামা ও জাপানে উঁকি মারে প্রথমে। আর দেশটিকে বলা হয় সূর্যোদয়ের দেশ।

জাপান পূর্ব এশিয়ার সর্বাধুনিক রাষ্ট্র। ছোট বড় প্রায় ৩ হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে জাপান গঠিত। টোকিও জাপানের রাজধানী। জাপানি ভাষায় জাপানকে বলা নিপপন। আর ইংরেজিতে একে বলা হয় "ল্যান্ড অফ রাইস ইন সান"।

বাংলাদেশ থেকে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরের দেশে জাপান। আয়তনে বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বড়। জনসংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে জাপান পশ্চিমে জাপান সাগর দ্বারা বেষ্টিত। যা এটিকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকুল ও দক্ষিণ- পূর্ব সাইবেরিয়া থেকে পৃথক করেছে। এছাড়া দক্ষিণ- পশ্চিমে পূর্ব চীন সাগর যা এটিকে চীন থেকে পৃথক করেছে।

জাপানের প্রধান দুটি ধর্ম হলো শিন্তো ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম। প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের প্রাচীন উপাসনার বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী শিন্তো ধর্মের ভিত্তি। শিন্তো ধর্মে মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে কিছু বলা নেই বলে বৌদ্ধ ও শিন্তো ধর্ম বহু যুগ ধরে জাপানে সহাবস্থান করেছে। বেশিরভাগ মানুষেই জাপানের এই দুই ধর্মেএ অনুসারী। এছাড়াও জাপানে আরো বেশ কয়েকটি নতুন ধর্মের ও প্রচলন রয়েছে। দেশটিতে অন্যান্য ধর্মের লোক নেই বলেই চলে।

জাপানের ইতিহাস বলতে গেলে আমাদের অনেকটা পেছনে যেতে হবে। খ্রিস্টের জন্মে ৩০ হাজার বছর পূর্বে এখানে জনবসতি গড়ে উঠে। জাপানের প্রথম ঐতিহাসিক সময়কাল ছিল যমন পিরিয়ড। যা খ্রিস্টের জন্মের সাড়ে চৌদ্দ হাজার বছর আগে চালু ছিল। যমন পিরিয়ড সাধারণত সেই সময় উৎপাদিত স্বতন্ত্র মাটির পাত্র থেকে এসেছে। এটা বিশ্বে প্রাচীনতম পাত্র যার সাধারণ দড়ির মত সাজসজ্জা রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করা হয়েছে জাপানে কোন প্যালিওলিথিক দখল ছিল না। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের এই সময়ের সাথে সম্পর্কিত কোনো হার বা শিং শিল্পকর্ম এখনো জাপানে পাওয়া যায়নি।

সপ্তম দশকে জাপানি সম্রাটরা জাপান শাসন করতেন। ১২০০ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দি পর্যন্ত সবুর নামের এক ধরনের শাসক শ্রেণী জাপানকে শাসক করতেন। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন গৃহযুদ্ধের পর ১৮৬৮ মেইজি সম্রাট ক্ষমতায় এলে জাপান পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি ও আমেরিকার বিরুদ্ধে লিপ্ত হলে বিপত্তি বাঁধে জাপানে।মার্কিন পারমাণবিক হামলার কারণে দেশটির হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এর ফলে দেশের পরিবহন, শিক্ষা এবং অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেলে শিল্প কারখানা, নাগরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯৪৫ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত আমেরিকা ও তার মিত্র রাষ্ট জাপান দখল করে রেখেছিল। তবে যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে জাপান নিজেদেরকে চমৎকার ভাবে বদলে ফেলে। তারা ভঙ্গপ্রায় অবকাঠামোর মধ্যেই একটি নতুন প্রজন্ম গঠন করে তোলে। যার ফলে কয়েক দশকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয় দেশটি।

কোনো রকম প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়া যেসব দেশ নিজেদের বড় অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, জাপান তাদের মধ্যে অন্যতম। শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছ এই দুইয়ের এক অনন্য উদাহরণ জাপান। শুধুমাত্র কাজ, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে জাপান আজ এ অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। জাপানে গেলে আপনি নানা ধরনের জাপানি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য দেখতে পারবেন। ধরুন জাপানে গিয়ে আপনি কাউকে স্বাগত জানালেন। সেক্ষেত্রে জাপানিরা প্রত্ত্যুতরে প্ আপনাকে মাথা নিচু করে শান্ত জানাবে। এটা তাদের এক ধরনের সংস্কৃতির অংশ। চলুন জাপানের সংস্কৃতি সম্পর্কে এরকম আরো কিছু তথ্য জেনে আসি।

মানুষ হিসেবে জাপানিজরা অত্যন্ত কর্মঠ এবং নিয়ম মেনে চলতে পছন্দ করে। স্কুলে বাচ্চাদের দেয়া হয় নিজের কাজ নিজে করার প্রশিক্ষণ। অত্যন্ত বিনয়ী জাতি জাপানিরা সাধারণত আইন ভাঙতে চান না। কাজকে খুব নিষ্ঠার সাথে করতে ভালোবাসেন। জাপানের বেশিরভাগ মানুষ শিন্তো ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। প্রাকৃতিক শক্তি ও বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী এই শিন্তো ধর্মের ভিত্তি। এই ধর্মে মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে কিছু বলা নেই। তাই বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি সহাবস্থানে কোনো সমস্যা হয় না। সরকারি হিসেবে ৪৮ শতাংশের বেশি মানুষ শিন্তো ৪৬ শতাংশের বেশি মানুষ বৌদ্ধ ধর্ম পালন করেন।

এক শতাংশ খ্রিষ্টান ও সাত শতাংশে বিভিন্ন ধরনের মানুষ জাপানে বসবাস করে থাকে।

কিমানো জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক এর অর্থ কাঁধে পড়ার বস্তু। সাধারণত গোড়ালি পর্যন্ত পড়া হয় পোশাকটি। কলার ভাঁজ করা এবং সব সময় বাম কলার ডান কলারের উপরে অবস্থান করে। বৈচিত্র্যময় ও নান্দনিক নির্মাণ শৈলীর পোশাক কিমানো প্রায়শী গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ছুটি ও উৎসবে পড়া হয়।

নুডুলস, স্যুপ, ভাত এই তিনটি জাপানের প্রধান খাবার। তবে নুডুলসের মধ্যে অনেক প্রকারভেদ রয়েছে। এসব খাবারের সাথে প্রচুর আচার ও সস মিশিয়ে খায় জাপানিজরা। অন্যতম জনপ্রিয় খাবার রামেন।যা মাংস, মাছ, নুডুলস ও বিভিন্ন শাক সবজির সমন্বয়ে রান্না করা হয়ে থাকে

এছাড়াও জাপানীয় খাবার বলতে চলে আসে সুশির কথা। মাছ, শাকসবজি, ভাত ডিম ও সামুদ্রিক শ্যাওলা দিয়ে রান্না হয় এ খাবারটি। খাবারে কোন বাছবিচার নেই জাপানদের। পুষ্টি গুনের নিশ্চয়তা পেলে পোকা থেকে শুরু করে সরীসৃপ, সবকিছুই স্থান পায় জাপানিজদের ডাইনিং টেবিলে।

এছাড়াও দেশটির রয়েছে প্রাচীন চলচ্চিত্রের ইতিহাস যা হাজার ১০০ বছরের বেশি পুরনো। একই সাথে জাপান বিভিন্ন রকম কার্টুন ও এ্যানিমেশন ফিল্মের জন্য বিখ্যাত।

জাপান একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্র দেশ। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। জাপানে রয়েছে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র, ক্ষমতার দিক থেকে ভিত্তি করে রয়েছে ভিন্ন সংসদীয় ব্যবস্থা। জাপানের যিনি সম্রাট তিনি কোনো রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করে না। শুধু আনুষ্ঠানিক দায়িত্বগুলো পালন করে থাকে।

জাতীয় আইনসভা জাপানে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট একটি আইনসভা। এটি নির্মিত হয়েছে নিম্নকক্ষের দ্বারা, যাকে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ বলা হয়।

এবং একটি উচ্চ কক্ষ দ্বারা যাকে হাউজ অফ কাউন্সিলরস বলা হয়।জাপানের আইনসভার নাম ডায়েট। যদিও দুটি চেম্বার আইন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ভাগ করে নেয়। নিম্ন কক্ষ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিরাজ করে এবং বাজেট ও আন্তর্জাতিক চুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখে।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা সুগা ইয়োশিহিদে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ।শিল্প উন্নত দেশ হিসেবে জাপান বাজার ভিত্তিক অর্থনীতিতে আছে একদম প্রথম সারিতে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে সম্পর্কিত এর বিভিন্ন খাত গুলো যেমন দক্ষ তেমনি প্রতিযোগিতাশীল। তবে সুরক্ষিত খাত যেমন :- কৃষি, বিতরণ এবং বিভিন্ন পরিসেবা উৎপাদনশীলতা তুলনামূলক ভাবে কম।

প্রযুক্তিতে জাপান নিজেদের এমন অবস্থানে নিয়ে গেছে যে তাদের দেশের রয়েছে বড় বড় ইলেকট্রনিক ও গাড়ি কোম্পানি।

সনি, হোন্ডা, নিশানা ইত্যাদি জাপানিজ কোম্পানি। জীবনকে গতিশীল করতে গিয়ে যে যে গতিশীল প্রযুক্তি লাগে তাই সবগুলোই তারা তৈরি করেছে।

আমাদের দেশে হুট করে যদি একটু ভূমিকম্প হয় আমরা কেমন যেন একটা আতংকিত হয়ে পড়ি। সবাই মিলে ছুটে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে জাপানিদের এই নিয়ে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।

প্রশান্ত মহাসাগরের কাছাকাছি হওয়ায় জাপানে অনেক বেশি ভুমিকম্প হয়। দেশটির বেশির ভাগ দ্বীপগুলি ভুমিকম্পন প্রবণ এলাকা স্পেসিফিক রিং অফ ফায়েরে অবস্থিত । স্পেসিফিক রিং অফ ফায়ের হলো প্রশান্ত মহাসাগরের একটি এলাকা যেখানে ছোট বড় আকারের অনেক আগ্নেয়গিরি রয়েছে। সেখানে প্রায় ১০৮টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। জাপানে প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৬ বার ভূমিকম্প হয়। জাপানে প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গায়ই বসবাসের অযোগ্য। সেখানে রয়েছে ঘন ঘন জঙ্গল, পাহাড়-পর্বত। তাই দেশের অধিকাংশ জনসংখ্যাকে উপকূলবর্তী এলাকায় দেখা যায়।

পর্যটন শিল্পে পিছিয়ে নেই জাপান। প্রাচীন স্থাপত্য ওর পাশাপাশি রয়েছে আধুনিক সব স্থাপনা। সেখানে সব নিদর্শনগুলো পর্যটকদেরকে বিশেষভাবে আকর্ষিত করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর জাপান। জাপানের নাগরিকদের পর্যটকদের প্রতি মুগ্ধসুলভ আচরণ তাদের পর্যটনশিল্পকে আরো উন্নত করে চলেছে।

জাপান এমন একটি দেশ যার প্রতিটি কোনায় অ্যানিমি থেকে কেটে নেয়ার মত সুন্দর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জাপানের যেমন আছে তেমনি আছে বিভিন্ন স্থাপত্য শৈলি আর প্রতিটি শহর যেন চোখে আরাম লাগার মত ঝকঝকে সুন্দর।

জাপানের ছমিরোয় অবস্থান টোকিও স্কাইট্রি একটি সম্প্রচার ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। ৬৩৪ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই টাওয়ারটি ২০১১ সালের মার্চ মাসের বিশ্বের সর্বোচ্চ স্বয়ংসম্পূর্ণ টাওয়ার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এখান থেকে আসাকুসা এরিয়া ও ছমিরা রিভার এর দৃশ্য সবচেয়ে সুন্দর ভাবে দেখা যায়।

এই টাওয়ারে রয়েছে পর্যটকদের জন্য দুটি লেক। এছাড়াও এই টাওয়ারে একটি অ্যাকুরিয়াম ও থিয়েটার আছে। এটি ঘুরে দেখার জন্য এন্ট্রি ফি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ইয়েন গুণতে হবে।

টোকিওর আসাকুসার মধ্যে প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির দেশটির জনপ্রিয় মন্দিরের মধ্যে অন্যতম। সপ্তম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির বিভিন্ন ধরনের লাল লন্ঠনে সাজানো। ছবি তোলার জন্য এই জায়গা পর্যটকদের বিশেষ পছন্দ।

আরো রয়েছে ইচ্ছে পূরণের মন্দির। শিবোয়ায় অবস্থি মেঞ্জিজিংগু, এটি সম্রাট মেইজি ও স্ত্রীকে উৎসর্গ করে নির্মাণ করা হয়েছে। গাছগাছালিতে এ মন্দিরে নির্দিষ্ট গাছের কাঠের বোর্ডে অনেকেই নিজেকে ইচ্ছাগুলোকে লিখে রাখতে দেখা যায়। যা মূলত এক ধরনের বিশ্বাস থেকে এটি করা হয়। তবে তার জন্য 500 ইয়ার খরচ করে কাঠের বোর্ড ও গুডলাক পাউচ কিনতে হয়।

পর্যটকরা আরো দেখতে পারেন, জাপানের সম্রাটের প্রধান বাসস্থান। যার নাম ইম্পেরিয়াল প্যালেস। পার্কের মত বিশাল এরিয়ে নিয়ে গড়ে তোলা এই প্যালেসের ব্যক্তিগত আবাসস্থল, সংরক্ষনাগার, জাদুঘর ও প্রশাসনিক কবর রয়েছে। ১৮৭২ সালে নির্মিত টোকিও ন্যাশনাল মিউজিয়াম জাপানের সবচেয়ে পুরোনো জাদুঘর।

জাপানের আগ্নেয়গিরি দ্বীপের মধ্যে ইউ আইল্যান্ড অন্যতম। এখানে স্ক্রু বা ড্রাইভিং করার সাথে সাথে আগ্নেয়গিরি ও পাহাড়ে দেখা মিলবে। হাইকিং এর জন্য আদর্শ গন্তব্য মাউন্ট মিটাকে।এখানে পাহাড়ে ঢালের পাশাপাশি পাথরের বাগানে ঝর্ণার দেখা ও মিলবে। এছাড়া ওবাইদাবেতে পাবেন সমুদ্র সৈকতে অবগাহনের সুযোগ ।

শিক্ষা ব্যবস্থায় জাপান অনেক উন্নতবাংলাদেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চায়, সেক্ষেত্রে জাপানের মতো ভালো গন্তব্য খুবই কম হবে। জাপানে বেশ ভালো মানের ইউনিভার্সিটি রয়েছে। বিশেষ করে যারা আইটি সেক্টরে পড়াশোনা করতে চান এবং গবেষণা কাজের জন্য জাপানের ইউনিভার্সিটির পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বেশ সমাদৃত।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য জাপান সরকার অনেক ধরনের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এজন্য প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী জাপানে পাড়ি জমায়। বিনামূল্যে পড়তে রয়েছে বেশ কিছু স্কলারশিপ। মোস্ট গ্রাজুয়েট জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য জাপান সরকার স্কলারশিপ দেয়। তবে এখানে থাকা খাওয়ার খরচ একটু বেশি আর শিক্ষার্থীদের কাজ সুযোগ ও কম।

আপনার যদি আইসিটি সংশ্লিষ্ট কোন বিশেষ স্নাতক ডিগ্রি থাকে, তবে আপনি বিনা খরচে জাপানে চাকরি করতে যেতে পারবেন। প্রতিবছর জাপান বাংলাদেশ জাপান আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার ট্রেনিং এর অধীনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী জাপানে চাকরি করতে যাচ্ছেন। আইসিটি ট্রেনিং ও নানা বিষয়ে নিয়্র ট্রেনিং দিয়ে থাকে। এই ট্রেনিং সম্পন্ন করে একেবারে এক টাকা খরচ না করেও জাপানের কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও লিংকটিন ও অন্যান্য ওয়েবসাইটে এপ্লাই করে জব নিয়ে জাপানে আসতে পারবেন।

আচ্ছা ডাস্টবিন ছাড়া কোন দেশকে ভাবা যায়? জাপানে কিন্তু কোন ডাস্টবিন নেই। এরকম আরো মজার কিছু তথ্য রয়েছে জাপান সম্পর্কে।

জাপানের রাস্তায় কোনো ডাস্টবিন থাকে না। এমনকি দেশটির কোথাও অন্যান্য দেশের মতো বর্জের ভাগার পর্যন্ত নেই। কারণ জাপানিরা সব রকম বর্জ্য রিসাইকেল করে ফেলে। যেগুলো রিসাইকেল করা সম্ভব না সেগুলো খুব সুশৃঙ্খল একটি পদ্ধতিতে ধ্বংস করে ফেলা হয়।

নির্ধারিত সময়ের পরও কাজ করা 'ওভারটাইম' নামে একটি শব্দ প্রচলিত দুনিয়া জুড়ে। শুধুমাত্র জাপানে এই শব্দটি কোনো অর্থ পাবেন না। জাপানিরা সাধারণত অফিসের সময় শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে কাজ নিয়ে। জাপানিদের আত্মসম্মানবোধ টনটনে। সম্মানের খাতিরে জীবন বিলিয়ে দেয়ার ভুরি ভুরি নজির রয়েছে দেশটিতে। জাপানে বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী অল্প কয়েকটি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ার সেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। কথা দিয়ে কথা দিয়ে সে কথা রক্ষার ব্যাপারে তারা এতটাই কঠোর।

জাপানি ভাষায় কারসি নামক গুরুতর শব্দ রয়েছে। যার অর্থ অতিরিক্ত কাজের চাপে মৃত্যু। এই ব্যাপারটি শুনতে আজব মনে হলেও, জাপানের প্রেক্ষাপটে এটি খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। সেখানে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যায় শুধুমাত্র অতিরিক্ত কাজের চাপে। তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয় কারসি।

জাপানের রেস্টুরেন্ট ও ট্রেনে মোবাইল ফোন ইউজ করা নিষেধ। মোবাইল ফোন ব্যবহার করার পরিবর্তে ট্রাভেল করার সময় তারা বই পড়েন। এছাড়া জাপানের ট্রেনগুলো পৃথিবীর দ্রুতগামী ট্রেনগুলোর মধ্যে অন্যতম।

জাপানে মোট প্রকাশিত বইয়ের ২০ পার্সেন্ট হচ্ছে কমিক্স বই। কারণ জাপানিরা কমিক্স বই পড়তে খুবই ভালোবাসে।

তাদের পত্রিকায় আমাদের দেশের মতো দুর্ঘটনার, রাজনীতি, সিনেমার সংবাদ, দেশবিরোধী ও অসামাজিক সংবাদ ইত্যাদি ছাপানো হয় না। সেখানে শুধু প্রয়োজনীয় ও আধুনিক জগৎ সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশন করা হয়।

জাপানের ৯০ ভাগ মোবাইল ফোন ওয়াটার প্রুভ। কারণ জাপানের যুবক যুবতীরা স্নান করতেও মোবাইল ব্যবহার করতে পছন্দ করে।

  চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

follow our Facebook page DHAKA Voice

follow our Twitter account Dhaka Voice 

No comments

Powered by Blogger.