ব্যাংগালোর ডেইজঃ মালায়লাম সিনেমার সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমাগুলোর একটি
ব্যাংগালোর
ডেইজ অঞ্জলি মেনন নির্মিত ২০১৪ সালের ড্রামা-রোমান্টিক জনরার এক কমার্শিয়াল সিনেমা।
মাত্র ৮ কোটি টাকা ব্য়য়ে নির্মিত এই সিনেমাটি বক্স অফিস থেকে ৪ সপ্তাহেই আয় করে ৪৫
কোটি টাকা। সিনেমায় অভিনয় করেছেন মালায়লাম সুপার স্টার দুলকার সালমান, নিভিন পাওলি,
নাজরিয়া নাজিম, পার্ভতী থিরুভোথু, ফাহাদ ফাসিল সহ আরও অনেকেই। ৬২ তম ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড(সাউথ),
এশিয়ানেট ফিল্ম এওয়ার্ডসে সিনেমাটি একাধিক বিভাগে পুরষ্কার পায়।
কুট্টুন,
আজ্জু এবং কুঞ্জ তিনজন কাজিন। কুট্টুন পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বাবা-মায়ের বাধ্য
সন্তান কুট্টুন সহজ-সরল জীবনযাপন এবং বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। অপরদিকে আজ্জু একটা বাইক
সার্ভিস সেন্টারে চাকরি করে মেকানিস্ট হিসেবে। ডিভোর্সী বাবা-মায়ের সন্তান আজ্জু বোহেমিয়ান
জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার স্বপ্ন ব্যাঙ্গালোর গিয়ে সে বাইক রেস প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে।
অন্যদিকে কুঞ্জ একজন প্রাণোচ্ছ্বল তরুণী। কুঞ্জর বিয়ে ঠিক হয় শিবা নামক একজন ভদ্রলোকের
সাথে যে কিনা ব্যঙ্গালোরে কর্পোরেট চাকুরীজীবী। বিয়ের অনুষ্ঠানেই আমোদ-প্রমোদের সময়
আজ্জু, কুট্টুন এবং কুঞ্জ সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা প্রত্যেকেই একদিন ব্যঙ্গালোর যাবে
এবং প্রত্যেকেই তাদের স্বপ্ন পূরণ করবে। শিবার এটা দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর
শোক সে তখনো সামলে উঠতে পারেনি। ব্যাংগালোর গিয়ে সে তার স্ত্রী কুঞ্জকে তেমন কারও সাথে
মেলামেশা করতে দেয়না এমনকি নিজের কাজিন আজ্জুর বাইকেও তাঁকে উঠতে দেয়না। এদিকে কুঞ্জর
বিয়ের পর আজ্জু এবং কুট্টন তার বাড়িতে বেড়াতে আসে অর্থাৎ তারা তাদের স্বপ্নের ব্যাংগালোরে
এসে পৌঁছে। ব্যাংগালোরে তার সাথে কেবিন ক্রু ঈশা তালওয়ারের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে
প্রণয় ঘটে কিন্তু একদিন একটি নাচের স্কুলের পাশ দিয়ে যাবার পথে সে নৃত্য শিক্ষিকা মিশেলকে
প্রথম দর্শনে দেখেই পছন্দ করে ফেলে। এমন দোটানার মধ্যে থাকা কুট্টনের জীবন নানা ঘটনার
মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। ওদিকে নিয়মিত রেডিও শুনা বোহেমিয়ান আজ্জু শারীরিক প্রতিবন্ধী
রেডিও জকি সারার প্রেমে পড়ে যায়। সারার পরিবার বেশ আধুনিক এবং উচ্চাভিলাষী। শারীরিক
প্রতিবন্ধকতা স্বত্ত্বেও তারা তাদের মেয়েকে এমন বাউন্ডুলের হাতে তুলে দিতে চায়না। তারা
সিদ্ধান্ত নেয় যে তাঁকে অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়ে দেবে। আর আজ্জু নিজের পরিচয় তৈরির জন্য
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে উঠে, সে সারার পরিবারকে কথা দেয় যে সে বাইক রেস প্রতিযোগিতা জিতেই
যোগ্য পুরুষ হিসেবে সারাকে বিবাহ করবে। কুঞ্জ যখন তার স্বামীর অতীত জানতে পারে তখন
সে স্বামীর পাশে দাঁড়ানো শুরু করে। সে চেষ্টা করে স্বামীর পাশে থেকে তাঁকে নিয়ে একটা
সুখী জীবনযাপন করতে।
আজ্জু কি পারবে সারার পরিবারকে দেওয়া কথা রাখতে? কুঞ্জ আর শিবার সম্পর্ক কি আদর্শ স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে রূপ নিবে? ওদিকে কুট্টন আসলে কার কাছে যাবে ঈশা নাকি মিশেলের কাছে? এমন সব প্রশ্নের উত্তর সিনেমার শেষে গিয়ে মিলবে। লিনিয়ার একটা গল্প তবে সিনেমার মূল আকর্ষণ চমৎকার কালার গ্রেডিং, মনোমুগ্ধকর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং চোখ জুড়ানো সিনেমাটোগ্রাফি। সিনেমটিতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সঙ্গীত আয়োজন করেছেন গোপী সুন্দর। প্রতিটা দৃশ্যের সাথে যথাযথ ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর দর্শকের মনে গভীর অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। সিনেমায় যখন আনন্দদায়ক মূহুর্ত তখন সোনালী আভা স্ক্রিন জুড়ে ছড়িয়েছে, বেদনাদায়ক পরিস্থিতি পর্দায় ধূসর রঙ ছড়িয়েছে। সিনেমাটি ২০১৮ সালের ৩০ মে ২০৫ টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। যা সর্বাধিক মুক্তিপ্রাপ্ত মালায়লাম চলচ্চিত্রের একটি।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments