Adsterra

বিশ্বের ৪র্থ ক্ষুদ্রতম দেশ টুভালু


বিশ্বের ৪র্থ ক্ষুদ্রতম দেশ টুভালু, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, ওশেনিয়ার এই অত্যাশ্চর্য দেশ ব্রিটিশ গিলবার্ট ও এলিস দ্বীপপুঞ্জ উপনিবেশের অংশ ছিল

টুভালু- ওশেনিয়ার এই অত্যাশ্চর্য দেশ
, টুভালু পলিনেশিয়ায় বিশ্বের চতুর্থ ক্ষুদ্রতম দেশ। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত একটি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র। এটি হাওয়াইয়ের প্রায় ৪২০০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের প্রায় ৩৪০০ কিমি উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। টুভালুর নিকটতম প্রতিবেশী ফিজি দ্বীপপুঞ্জ প্রায় ১০৫০ কিমি দক্ষিণে এবং দক্ষিণ-পূর্বে প্রায় একই দূরত্বে সামোয়া অবস্থিত। টুভালু পূর্বে এলিস দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। এটি ব্রিটিশ গিলবার্ট ও এলিস দ্বীপপুঞ্জ উপনিবেশের অংশ ছিল। ১৯৭৫ সালে এটি গিলবার্ট দ্বীপপুঞ্জ বর্তমান কিরিবাস থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং ১৯৭৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। টুভালু কমনওয়েলথ অভ নেশনসের সদস্য। ফুনাফুতি অ্যাটলটি টুভালুর রাজধানী।

১৮১৯ সালে ক্যাপ্টেন আরেন ডি পেইস্টার ভালপারাইসো থেকে ভারতে আসার পথে ফুনাফুতি আবিষ্কার করেন যেখানে এখন টুভালুর রাজধানী অবস্থিত। ফুনাফুটি প্রায় ১৪টি ছোট ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। ডি পেইস্টার ব্রিটিশ আইনসভার সদস্য এডওয়ার্ড এলিসের নামে এই দ্বীপসমষ্টির নামকরণ করেন এলিসেস গ্রুপ। এলিসই ডি পেইস্টারকে জাহাজ জোগাড় করে দিয়েছিলেন যার নাম ছিল রেবেকা। ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযাত্রী দলের প্রধান চার্লস উইলকিস টুভালুর তিনটি দ্বীপে ভ্রমণ করেন এবং সেখানকার আগ্রহী পর্যটকদের স্বাগতম জানান। এরপর অনেকদিন পর্যন্তই টুভালুর সাথে বহির্বিশ্বের অন্য কোন দেশের তেমন যোগাযোগ হয়নি।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে যখন প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে বিভিন্ন দেশের অধিকারগত বিভাজন আসে তখন স্বাভাবিকভাবেই টুভালু ও পার্শ্ববর্তী দ্বীপাঞ্চলসমূহ যুক্তরাজ্যের অধিকারে আসে। ইংরেজরা ১৮৯২ সাল থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত এলিস দ্বীপপুঞ্জকে একটি প্রোটেক্টোরেট হিসেবে শাসন করে এবং এর পরে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত এটি ছিল গিলবার্ট এবং এলিস দ্বীপপুঞ্জ কলোনির একটি অংশ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দ্বীপগুলোতে হাজার হাজার মার্কিন সৈন্য মোতায়েন করা ছিলো। ১৯৪২ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে মার্কিন বাহিনী ফুনাফুটি, নানুমিয়া এবং নুকুফেটাউ নামক দ্বীপগুলোতে বিমান ঘাঁটি স্থাপন করে। ১৯৭৪ সালে টুভালুর অধিবাসীরা ইংরেজদের অধীনে একটি পৃথক রাষ্ট্রের সম্মানলাভের জন্য ভোট দেয়। তাদের দাবী ছিল গিলবার্ট দ্বীপপুঞ্জ, যা স্বাধীনতা পাবার পর কিরিবাতি নামে পরিচিত হয়ে আসছিল, থেকে টুভালুকে পৃথক করে একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা হোক। এই পৃথকীকরণ শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়েছিলো। কিন্তু টুভালু পূর্ণ স্বাধীনতা পায় ১৯৭৮ সালে। ১৯৭৯ সালে টুভালু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরুপ একটি চুক্তি সম্পাদন করে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ৪টি দ্বীপ টুভালুর অধীনে ছেড়ে দেয় এবং সেগুলোর উপর টুভালুর প্রকৃত অধীকার মেনে নেয়।

২০০২ সালের জুলাই মাসে টুভালুতে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং মুক্তভাবে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ১৫ জন আইনসভার সদস্য হন যাদের মধ্যে ৫জনই ছিলেন সম্পূর্ণ নতুন।

টুভালুর ঐতিহ্যবাহি খেলা হলো কিলকিটি যেটা অনেকটা ক্রিকেটের মত। এছাড়াও এখানে ফুটবল, ভলিবল ও অন্যান্য খেলা প্রচলিত আছে।

ভ্রমন করতে অনেক কম লোকের দেখাই পাওয়া যায় এখানে, তবে কেউ ভ্রমনে গেলে তাকে অবাক হতে বাধ্য করে টুভ্যালু তার সৌন্দর্য দিয়ে। এখানকার একমাত্র এয়ারপোর্টটি বিকালবেলা হয়ে যায় সবার খেলার মাঠ। সামনে সাগরের গর্জন, আর পড়ন্ত বিকালে একটু ফুটবল খেলা রানওয়েতে, ভাবতেই কেমন শিহরন অনুভব করা যায়।

সর্পিল আকৃতির এই দ্বীপ দেশটির নয়নাভিরাম দৃশ্য যে কোন ভ্রমন পিপাসুদের জন্য স্বর্গ মনে হতে পারে। তবে দুঃসংবাদ হলো এই যে, আমরা মানবজাতী এতটাই শিল্পায়নের দিকে এগিয়েছি যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর বিষয়টা যে কতটা ভয়াবহ তা আমরা বুঝতে পারি না। এই ছোট্ট সুন্দর দেশটি গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার জীবন্ত উদাহরণ।

উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের বরফ প্রতি বছর গলে যে অনেক এলাকা সমুদ্র পৃষ্ঠে বিলিন হয়ে যাচ্ছে তা হয়তো আমরা চার দেয়ালের ভিতর বসে বুঝতে পারি না। এদেশের মানুষ এর বাস্তব উদাহরণ দেখছে ও ভয়াবহতা বুঝতে পারছে।

মাত্র সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৪.৫ মিটার উঁচু এই দেশের অনেক এলাকা ইতিমধ্যে সমুদ্রের পৃষ্ঠে বিলীন হয়ে গেছে। ধারনা করা হয় আগামী ৩০-৫০ বছরে পুরো দেশটাই হয়তো বিলীন হয়ে যাবে। হয়তো বিশ্ব ম্যাপে আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা এই নয়নাভিরাম দেশটাকে।

চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

follow our Facebook page DHAKA Voice

follow our Twitter account Dhaka Voice 

No comments

Powered by Blogger.