বারফি, রণবীর কাপুরকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে
আনুরাগ বসু পরিচালিত ‘বারফি’ সিনেমাটি ২০১২ সালে মুক্তি প্রাপ্ত একটি কমেডি রোমান্টিক মুভি। এই ছবির পরতে পরতে এক ধরনের ইমোশন লুকিয়ে আছে। এই সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রণবীর কাপুর, ইলিয়ানা ডি ক্রুজ, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং যিশু সেন গুপ্ত। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশিষ বিদ্যার্থী এবং সৌরভ শুক্লা।
বৃদ্ধ বয়সে একটি স্কুলে শিশুদের সাথে নিজের তরুণ জীবনে বারফির সাথে ঘটা গল্প শুনাচ্ছিলেন শ্রুতি। বারফি একজন বাকপ্রতিবন্ধি। বারফি তার পাশের বাড়ির আরেক বাকপ্রতিবন্ধি ঝিলমিলকে ভালোবাসে। বারফির বাবা মারা যাবার পর সে আর ঝিলমিল বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। দুজন বাকপ্রতিবন্ধি হলেও একে অপরের বোঝাপড়ায় তাদের সংসার দারুণ চলছিলো। স্ত্রীকে প্রচণ্ড ভালোবাসা বারফি দুবেলা খেয়ে পড়ে বাচার জন্য উদ্ভ্রান্তের মতো কাজের খোজে বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি করে এভাবে সে দার্জিলিং চলে যায়। দার্জিলিং গিয়ে ট্রেনে তার সাথে শ্রুতির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তারা একে অপরের সাথে মন দেওয়া নেওয়া শুরু করে কিন্তু শ্রুতির হঠাত মনে হয় যে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এবং বারফির একজন স্ত্রী আছে কাজেই সে অন্যায়বোধ থেকে সেই সম্পর্ককে আর এগিয়ে নিতে চায়না। অন্যদিকে বারফির খোজ না পেয়ে ঝিলমিল বাড়ি থেকে বের হয়ে পাগলের মতো তাঁকে খোজাখুজি শুরু করে। একদিন ঝিলমিলের বাড়ি থেকে বারফি এবং ঝিলমিলের দাম্পত্য জীবনের খোজ নিতে তার ভাই আসে কিন্তু বোন নিখোজ হওয়ায় সে থানায় গিয়ে মামলা করে বারফির নামে। এদিকে বারফির সাথে প্রেমের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট থাকায় বারফি তার বাড়িতে তার স্ত্রী ঝিলমিলের সাথে শ্রুতিকে পরিচয় করাতে নিয়ে আসে কিন্তু বাড়িতে এসে সে আর ঝিলমিলকে খুজে পায়না। ঠিক তখনই থানার ওসির বারফির বাড়িতে আগমন ঘটে এবং বারফি আর পুলিশের মধ্যে তখন চোর পুলিশের মতো খেলা চলতে থাকে। এরপর নানা ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে। সেজন্য বারফি মুভিটি আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে। এই প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার ক্যারিয়ার তখন তার নিভু নিভু অবস্থায় ছিলো কিন্তু এই ছবি তাঁকে পুনর্জীবন দিয়েছে। সিনেমায় ওসির চরিত্রে অভিনয় করা সৌরভ শুক্লা ছিলেন বলিউডের এক অন্যতম জাঁদরেল অভিনেতার আবিষ্কার। যিশু সেন গুপ্তকে কলকাতার সিনেমার বাহিরে দেখতে পেয়ে দর্শকদের মধ্যে এক অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হয়েছিলো। এই সিনেমার মাধ্যমেই যিশু সেন গুপ্ত বলিউডে পরিচিতি পেতে শুরু করলো। এই সিনেমার আগে এক সাক্ষাতকারে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেছিলেন,
‘ রণবীর কাপুরের সাথে একটি সিনেমাই আমার ক্যারিয়ার আবার চাঙ্গা করে দিতে পারে।’ এই সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছিলো অসাধারণ। সেই সাথে দুর্দান্ত স্ক্রিন প্লে বলিউডের একটা ক্লাসিক সিনেমায় পরিণত করেছিলো। রণবীর কাপুর যে শুধু একজন নায়ক নন তিনি যে একজন জাত অভিনেতা তা এই সিনেমার অভিনয় থেকেই বুঝা গিয়েছিলো। সিনেমার শুরুর অংশ হলিউডের
‘মোমেন্টো’ সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত মনে হতে পারে। কিন্তু না, সম্পূর্ণ সিনেমাটিই ছিলো একদম মৌলিক। চরিত্রের বিল্ডাপ ছিলো একদম ঠিকঠাক। সেই সাথে ১৯৭০ সালের সময়কার লোকেশন, সিনেমার কালার গ্রেডিং দারুণ আবহ তৈরি করেছিলো। সমালোচকদের কাছে এই সিনেমা বেশ প্রশংসিত হয়েছিলো। বেশ কিছু সিচুয়েশনাল কমেডি এই সিনেমাতে ছিলো। এই সিনেমার সাথে দর্শকদের
ইমোশনাল এটাচমেন্ট ছিলো। ১৫০ মিনিটের এই ছবিটি মন ভালো করার জন্য আপনি দেখতে পারেন।
লিখেছেন ঃ সাদ ধ্রুব
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments