ইরান – জানা অজানা
ফেরদৌসের মহাকাব্য হাফিজ খৈয়মে
রুবায়েত কিংবা রুমির মুস্তাবি এসব ছাড়া
বিশ্ব সাহিত্য অচল। ইরানের স্থাপত্য আর চিত্রকলা হাজার বছর ধরে দিশা দেখাচ্ছে মানব
সভ্যতাকে। হালি নিউওয়েভ দ্যুতি ছড়াচ্ছে বিশ্ব চলচ্চিত্রে। গণিত, চিকিৎসা আর আকাশবিদ্যার এক অনন্য
পিঠস্থান ইরান।
ইরান দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার
একটি দেশ। দেশের বৃহত্তম শহর এবং রাজধানী তেহরান। এটি সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক
কেন্দ্র ও বটে।
দেশটির উত্তরে কাসফিয়ান সাগর এবং দক্ষিণে পার্সিয়ান ও উমান উপসাগর। বাংলাদেশ থেকে
প্রায় ৪০০০ দূরের দেশ ইরান। আয়তন ১৬ লক্ষ ৪৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার। ইরান বাংলাদেশ
থেকে প্রায় ১১ গুন বড়। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে প্রায় ৯ কোটি ও মানুষ
বসবাস করে।
ইরান নামের একটি ইতিহাস
রয়েছে। পারস্যের একটি এলাকার নাম ছিল পার্সা। পার্সা অর্থ জ্ঞানীদের ভুমি। এই নাম
থেকে বোঝা যায় যে একটা সময় এখানে জ্ঞানীগুণীরা বসবাস করত।
১৯৩৫ সালের আগ পর্যন্ত সারা
বিশ্বে ইরান পারস্য নামে পরিচিত ছিল। ইরানের ইতিহাস বলতে গেলে আমাদের অনেকটা পেছনে
যেতে হবে। প্রত্নতাত্ত্বিক
গবেষণা অনুযায়ী প্রায় ১ লক্ষ বছর আগে ধরে ইরানের মানব সভ্যতার সূচনা হয়। আর সেই
সময় থেকে ইরানে
আরবদের আগ্রাসন সমগ্র পশ্চিম প্রভাবিত করেছিল। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের মদিনা জয়ের পর তার জন্ম স্থান মক্কা আরব আন্দোলনের কেন্দ্রে পরিণত
হয়। আরব মুসলিমরা ইরান এবং বাইজেন্টাইন আঞ্চল জয়ের মাধ্যমে এটিকে বিশ্ব
আন্দোলনে পরিণত করেছিল। ৬২৩ সালে বাইজেন্টাইন সম্রাট হীরাক্লিয়াস রোমান অস্ত্রের উপর ভিত্তি করে পারস্যের
সফলতাকে একেবারেই পরিবর্তন করে দেন। উদাহরণ হিসেবে বলতে গেলে হীরাক্লিয়াস ৬১৪
সালে জেরুজালেম এবং ৬১৭ সালে দখল করে। আরো মুসলিমরা ৬৩৬
খ্রিস্টাব্দে পারস্য শাসনের সাম্রাজ্য আক্রমণ শুরু করে। ৬৫১ সালে শাসনের পতন
ঘটে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইরানের রাজবংশীর মাধ্যমে শাসন কার্য সম্পন্ন করা
হত। ১৯৭৯ সালে ১১ই ফেব্রুয়ারি গণভূত্থান মাধ্যমে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। সেই সময়
থেকে ইরানে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজতন্ত্র পতন ইরানীদের সামাজিকভাবে
করেছিল। ১৯৪১ সালে তখনকার শাসক মুহাম্মদ রেজাশাহকে নির্বাচনে পাঠিয়ে তার ছেলে
সিংহাসনে বসে।প্রায় ২ শতাব্দী ধরে ইরান আরব ইসলামিক সাম্রাজ্যে অধীনে ছিল।
সংবিধান অনুসারে ইরানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম শিয়া ইসলাম। এখানে শতকরা ৯৯ শতাংশ শিয়া
মুসলমান।
পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে পরিপূর্ণ দেশ হলো ইরান। যাকে বলা হয় সাংস্কৃতিক
মাধুরীদের দেশ। এছাড়া অসভ্যতার দোলনা নামের খ্যাত ইরানে রয়েছে ২৬ টি ইউনেস্কো
কর্তৃক স্বীকৃত স্থাপনা। সংস্কৃতি এবং সাহিত্যে ইরান সেরাদের সেরা।
লক্ষ বছরের সাংস্কৃতিক
ঐতিহ্যবাহী দেশ ইরান। যদিও দেশটিতে ব আর্মেনিয়ায়,আজারবাইজান ও ক্ষুদ্র জাতি গুষ্টি
সংখ্যালঘুদের নিজস্ব সাহিত্য ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে। পার্শিয়ান সংগীতের
বিকাশের ইতিহাস
প্রাগৈতিহাসিক যুগের কিংবদন্তী রাজা জামশিদ এই সংগীত
আবিষ্কার করেন। ইতিহাসের
বিভিন্ন সময়ে নথি থেকে জানা যায় প্রাচীন বার্ষিকদের একটি বিস্তৃত সঙ্গীত
সাংস্কৃতি ছিল। খ্রিষ্টীয় ৭ম শতকে ইসলাম ধর্মের সম্পর্কায়নের
সাথে সাথে পারস্য সংগীত ও অন্যান্য সংস্কৃতিতে ইসলামের ভাবধারা যুক্ত হতে থাকে।
ফারাবি ইবনে সিনহা রাজি ও সিরাজী এবং মারাকি প্রাথমিক ইসলামী যুগে পারস্য সংগীত
পন্ডিতের মধ্যে অন্যতম।
শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প
ইরানের দীর্ঘ সংগীত ইতিহাসে
বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হতো। যেমন টার সেতার উৎ, কামান ইত্যাদি পারস্য সংগীতে
সুর সৃষ্টি করে যাচ্ছে। পার্শিয়ান শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রধান তাল বাদ্যযন্ত্রের
নাম ছিল ডোমব্যাক। সুফিবাদের উত্তরণের সাথে সাথে ফার্সি সঙ্গিতে
নতুন ধারা সৃষ্টি হয়েছে। রুমি হাফেজ, শেখ সাদী, আক্তার ও উমর খৈয়াম এর মত
বহুমাত্রিক গুণ সম্পন্ন সুফিগণ এ ধারা ভিত্তি তৈরি করেছেন। হাজার বছরের পারসিয়ান স্থাপত্য ও শৈলী বিশ্ব
স্থাপত্য বিদ্যার অনন্যা উপাদান। যেমন প্রেমের মতো ছড়ানো নয়নাভিরাম প্রাকৃতির সাথে
অতুলনীয় পার্সিয়ান বাগান। পার্সি সাহিত্যে বাগান মানে
প্যারাডাইস বা প্রাচীর বেসঠিত উদ্যান।
ইরানের নিউ রিওলিজম আজ
বিষ্ময়। প্রবাদ প্রতিম চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তমির হাত ধরে শুরু হওয়া এই
ঘরানা মাজেদ মাজিদি, অজগর
ফরহাদির সংযুক্তির মধ্য দিয়ে ইরানের সিনেমাকে শিকড়ে নিয়ে গেছে।
বিশ্বের উচ্চমানের গালিচা
প্রসঙ্গ আসলে পার্সিয়ান কার্পেট নামটি সবার সামনে আসে। ইরানে দক্ষিণ পশ্চিমে
অবস্থিত অঞ্চলের কার্পেট তাঁতিতা বিশিষ্ট শিল্পী হিসেবে পরিচিত। পারস্য সাম্রাজ্য
জুড়ে শিল্পের মধ্যে ক্যালিগ্রাফি, আর্কিটেকচার, পেইন্টিং ও ভাস্কর্য
অন্তর্ভুক্ত ছিল। এগুলোর প্রত্যেকের জন্য ছিল স্টাইলটি অন্যান্য সংস্কৃতি এবং
দেশগুলিতে বিশাল প্রভাব ফেলেছিল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও
পার্সিয়ানদের মধ্যে ছিল নানামুখি ফ্যাশন বৈচিত্র্যতা।পোশাকের ক্ষেত্রে ইরানিদের
কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন : হিজাব কিংবা তাদের ইসলামিক পোশাকের কোড তাদের
ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। বর্তমানে অনেক ইরানি মেয়ে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরছে। তবে এর উপরে
লম্বা জাতীয় পোশাক পরা হয়ে থাকে।
পার্সিয়ান খাবারের গন্ধ
শুধু ইরানে নয়, সমগ্র
ভারত উপমহাদেশে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে। ইরানের অন্যতম খাবারের নাম দোলমা। এর
পাশাপাশি ইয়োগার্ট এবং মিড সস নামক কারি জাতীয় খাবার তাদের পছন্দের তালিকায়।
কাবাব মুরঘা ইরানিদের পছন্দের খাবার।
ইরানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার
অনেকগুলো কেন্দ্র রয়েছে। দেশটির শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী
খমীনি। তিনি ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। ১৯৭৯ সালে ইসলাম বিপ্লবের পর থেকে
দুইজন ব্যক্তি চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন।
প্রথমজন হলেন ইসলামী ইরানের
প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রোহুল্লা খামেনি আর দ্বিতীয় জন হলেন মিস্টার খামেনির
উত্তরসূরী আয়াতুল্লাহ
আলী খামেনি। ১৯৮৯ সালে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, তিনি শীর্ষ নেতা হন । তিনি
সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান। দেশের বিচার বিভাগের প্রধানকে নিয়োগ দেন
দেশের শীর্ষ নেতা।ইরানের প্রেসিডেন্টকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয়। তার ক্ষমতার
বয়স চার বছর। একজন প্রেসিডেন্ট পরপর দুইবারের বেশি নির্বাচন করতে পারে না। ইরানের
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি ইরানের সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট
দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তিনি সরকারের প্রধান এবং সংবিধানের
বাস্তবায়ন তার দায়িত্ব। দেশটির অভ্যন্তরীন ও প্রনয়নীতি বাস্তবায়ন প্রেসিডেন্টের
মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে রাষ্ট্রের কোন ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা
থাকে শীর্ষ নেতার হাতে। ইরানের মন্ত্রীসভা গঠন করেন প্রেসিডেন্ট। তবে তার জন্য
ইরানের পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগে। ইরানের পার্লামেন্টের নাম মজলিস। মজলিসের আসন
সংখ্যা ২৯০, প্রতি চার
বছর পর পর এ পার্লামেন্টে নির্বাচন হয়। আইন তৈরি এবং জাতীয় বাজেট অনুমোদন বা
প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা রয়েছে মজলিসের। ইরানের পার্লামেন্ট সরকারের মন্ত্রী এবং
প্রেসিডেন্টকে ইম্পিচ করতে পারে অর্থাৎ তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে পার্লামেন্টে
তাদের মুখে দাঁড় করাতে পারে। প্রতি চার বছর অন্তর মজলিসের নির্বাচন হয় কিন্তু
পার্লামেন্টে পাস করা আইন গার্ডিয়ান কাউন্সিলকে অনুমোদন করতে হয়। দেশটির সবচেয়ে
প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হয়েছে গার্ডিয়ান কাউন্সিল।
হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস, সংস্কৃতি আর সৌন্দর্যের এক
অপরূপ লীলাভূমি হল ইরান। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যা দেখতে
প্রতিবছর লাখো মানুষ ছুটে যায় ইরানে।
মনমুগ্ধকর প্রকৃতি ও দেশটির
বিভিন্ন আবহাওয়া পরিস্থিতিতে ইরানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। ইরান
ভ্রমণের আগে অবশ্যই আপনার প্ছন্দ অনুসারে জায়গা নির্ধারণ করে যাবেন। রাজধানী শহর তেহেরান একদিকে
সমতল অন্যদিকে পর্ব। তেহরানে আপনি হাজার বছরের পুরাতন অনেক স্থাপনা দেখতে পারবেন।
নান্দনিক এসব স্থাপনা আপনার মন কাড়বে।
তেহরানে সুউচ্চতার প্রতীক
হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজাদী টাওয়ার। এইটি পারস্য শাসনের ২৫০০ বছর উপলক্ষে বানানো
হয়েছে। তেহরানে এ আইকনিক ল্যান্ড মার্কের নিচে একটি জাদুঘর আছে।তেহরানের আর একটি
দর্শনীয় স্থান হচ্ছে গুলেস্তান প্যালেস। এর সুনিপুন কারুকার্যে মুগ্ধ হবেন।
ইরানের আরেকটি পর্যটন হচ্ছে
বাদাবিসুর্থ। বিশেষ করে
ভূতত্ত্বের আগ্রহ রয়েছে তারা এটি দেখতে যাবেন। উত্তর ইরানের সোনালী, কমলা এবং পলিলারের জন্য বিখ্যাত।ইরান যাবেন আর
ইরানের এথেন্স দেখবেন না তার কি হয়?
সিরাজ শহরকে বলা হয় এটির এথেন্স।
এটি ঐতিহাসিক ও জনপ্রিয় ও জনবহুল শহর। প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বে সিরাজ রাজধানী হওয়ার
গৌরব অর্জন করেন।
মহাকবি হাফিজ ও জগৎ বিখ্যাত
শেখ সাদির কবর ও রয়েছে সিরাজ শহরে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে
প্রায় দুই শো মেইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ডাস্টইলুট মরুভুমি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর
শুষ্ক ও উষ্ণ স্থান। এখানে দেখতে পারবেন বেশ কিছু সারিবদ্ধ হয়ে ক্ষয়ে যাওয়া
টাওয়ার ও দেয়াল।
ইরানে প্রাচীনকালের ঘরবাড়ি
ও শিল্পকলা নানা নিদর্শন দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবেই ইয়াজত শহরে। শিক্ষা সংস্কৃতি ও শিল্প ও
মনস্ক ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ইরানের শহরটি হয়ে উঠেছে একটি অন্যতম
দর্শনীয় স্থান। এই শহরটি আধুনিক শিল্পকলার রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত।
উচ্চ শিক্ষার জন্য ইরান এখন
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কারণ অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়
রয়েছে যারা বেশ ভালো মানের স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এজন্য প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ
থেকে শিক্ষার্থীরা ইরানে পাড়ি জমায়। বিশ্বে ভালো অবস্থানে আছে ইরানের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। তেহরান ইউনিভার্সিটি ও
শরিফ ইউনিভার্সিটি এর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।
চাকরির জন্য আপনি যদি ইরানে
যেতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তবে ইরানের
অভিবাসীদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা। ইরানি নাগরিকদের চাকরি পাওয়ার জন্য
কোনো ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হয় না। বেশির ভাগ জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে ওয়ার্ক
পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। তবে অভিবাসীদের ক্ষেত্রে চাকরির অফার পেলে নিয়োগ
কর্তার সাথে কথা বলে ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।
আর আপনি যদি ইরানে নাও থাকেন
তাও অ্যাম্বাবাসির মাধ্যমে আপনি ইরানে যাওয়াফ জন্য আবেদন করে
ভিসার পাবেন।
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এক
কথায় বিচ্ছিন্ন ইরান আর এটি ইরানের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় বাধা। বৈশ্বিক
নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের জাতীয় বাজার স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান শিল্প কারখানায় বেশ
উন্নত। অন্যান্য দেশ যেখানে ইউরোপ আমেরিকার উপর নির্ভর করে চলে সেখানে ইরান
আমেরিকা নিষেধাজ্ঞার পর ও এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এমনটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র তাদের
তেলের মজুদের কারণে। গ্যাসের মজুদেও দেওয়া পিছিয়ে নেই তারা। ইরানে জাফরান, মসলা, ডালিম, নাশপাতি, কাঠবাদাম ও পেস্তা বাদামের
খ্যাতি বিশ্বজুড়ে রয়েছে।
আপনি যদি কেবল এক ঘন্টার
জন্য বিয়ে করতে চান তবে আপনি অনায়াসে পারি জমাতে পারেব ইরানের। কারণ
সেখানে এই ধরনের বিয়ের প্রচলন আছে এবং সে ধরনের বিবাহকে বলে মুতাহ বিবাহ। ইরানের
চুক্তিভিত্তিক বিয়ের প্রচলন আছে।চাইলে এক ঘন্টার জন্য বিবাহ করতে
পারবে সেখানকার মানুষ। এ ধরনের বিবাহ বলা হয় মুতাহ বিবাহ। ইসলামে যেহেতু পতিতা বা বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক হারাম তাই তারা এই
মুতাহ বিবাহের মাধ্যমে শারীরিক সম্পর্কে হালাল করে।
পৃথিবীর সব থেকে বড় হাতে
বোনা কার্পেট বানিয়ে গ্রিনিজ বুক ওয়ার্ল্ডের নাম লিখেছেন ইরান প্রায় ষাট হাজার
স্কয়ার ফিডের এই কার্পেটটি বানিয়েছে ইরানের একটি কোম্পানি।২০০৭ সালে আবুধাবির
একটি মসজিদের জন্য কার্পেটটি তৈরি করা হয়েছিল।
বিয়ে নিয়ে অনেক অদ্ভুত নিয়ম
আছে ইরানে। ইরানে ১৩ বছরের মেয়ে ও ১৫ বছর বয়সের ছেলের বিয়ে দেয়া বৈধ। ইরানে বিয়ের
আগে কুমারিত্বের সার্টিফিকেট দিতে হয় মেয়েদের।মেয়ের ১৩ বছর হলে পালক মেয়েকে বিয়ে
করতে পারেন বাবা।
পশ্চিম মধ্য ইরানের হামাজন
প্রদেশে ছোট শহর তাজবাদ সোফলা। এই গ্রামের সকলেই আদতে বই পাগল। শুধু ইরানি বা আরবি নয়, সমস্ত ভাষার বই প্রাধান্য
পায় এই ছোট্ট গ্রামে। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবারের জন্য রয়েছে একটি আস্ত লাইব্রেরিও।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় বিভিন্ন ভাষার বই সংগ্রহে আছে।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments