সর্দি-কাশি হলে কি ওষুধের প্রয়োজন আছে?
ভাইরাসজনিত ব্যাধি হওয়ায় সর্দি-কাশিতে অ্যান্টিবায়োটিকও কোনো কাজ করে না। ওষুধ খেলে সর্দি-কাশি গড়ে ১৮ দিনে সারে, না খেলেও একই। এসব জানা সত্ত্বেও আমরা সর্দি-কাশির ওষুধের জন্য হন্যে হয়ে পড়ি।
সচরাচর প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন ও কাশির ওষুধ ব্যবহৃত হয় এ সমস্যায়। কখনো কফ-কাশির জন্য সিরাপজাতীয় ওষুধ ও মন্টিলুকাস্ট খান অনেকে, যা আসলে তেমন কোনো উপকার করে না। অনেকে এ সময় ভিটামিন সি বড়ি চুষে খান।
সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধে ভিটামিন সি কোনো কাজ করে কি না, তা নিয়ে বিগত সাত দশকের ওপর বিতর্ক চলছে। ভিটামিন সি-এর ব্যবহার সম্পর্কে ৭২টি গবেষণার ফলাফল আবার নতুন করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, ২০টি গবেষণায় ১১ হাজার রোগীর সর্দি-কাশি প্রতিরোধে ভিটামিন সি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এতে কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। মাত্র ৩ শতাংশ ক্ষেত্রে কিছু উপকার করেছে। তবে যারা প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন (যেমন, ম্যারাথন দৌড়বিদ, মরু এলাকায় কর্মরত সৈনিক), তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন সি ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে সর্দি-কাশির হার প্রায় অর্ধেক কমানো সম্ভব হয়েছে।
৩১টি গবেষণায় দেখা গেছে, রোগের সময়কাল কমানোর ক্ষেত্রেও ভিটামিন সি-এর তেমন কোনো ভূমিকা নেই। সবশেষে বিচার করা হয়েছে উপসর্গের তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন সি-এর ভূমিকা। সেখানেও কোনো ভালো ফল পাওয়া যায়নি।
দেখা যাচ্ছে, শিশুদের দৈনিক ১ থেকে ২ গ্রাম ভিটামিন সি খাওয়ালে তাদের সর্দি-কাশির তীব্রতা কিছু কমে। কিন্তু এতো উচ্চমাত্রায় ভিটামিন শিশুদের খাওয়ানো আবার কতটুকু নিরাপদ, সে প্রশ্ন রয়েই যায়। তবে আক্রান্ত হলে প্রচুর পানি পান করুন, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, বিশ্রাম নিন। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে চেষ্টা করুন। এ রোগ নিজে নিজেই সারে, তাই অধৈর্য হবেন না।
No comments