নবীজী (সাঃ) কে ছায়াদানকারী সেই গাছ আজও দাঁড়িয়ে আছে
মরুভূমিতে একটি গাছ বাঁচিয়ে রাখা যেখানে দুঃসাধ্য সেখানে হাজার বছরের পর একটি
গাছ বেঁচে থাকার সত্যি অবাক করার মতো বিষয়। ইংরেজিতে এই গাছটিকে The Blessed Tree বলা হয়। পৃথিবীতে এত পুরনো গাছ এখনো বেঁচে
আছে তা বিশ্বাসযোগ্য না হলেও সত্য মুসলিমরা এটিকে মুসলিমরা এটিকে 'সাহাবী গাছ' বলে থাকেন।
অবিশ্বস্য হলেও সত্য যে , আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে যে গাছটির নিচে
মহানবী (সা) বিশ্রাম নিয়েছিলেন জর্ডানের মূরুভূমির অভ্যন্তরে সাফাঈ এলাকায় সেই
গাছটি আজো দাঁড়িয়ে আছে। জর্ডানের বাদশাহ আব্দুল্লাহ সর্বপ্রথম এই স্থানটিকে পবিত্র
স্থান হিসেবে ঘোষণা দেন।
পৃথিবীতে এত পুরনো কোনো গাছ এখনো বেঁচে আছে তা বিশ্বাসযোগ্য না হলেও সত্যি।
মরুভূমির পরিবেশের কারণে জন্ম থেকেই গাছটি ছিল পাতাহীন শুকনো কিন্তু একসময় আল্লাহর
হুকুমে গাছটি সবুজ পাতায় ভরে উঠে এবং আজ পর্যন্ত গাছটি সবুজ শ্যামল অবস্থায়
দাঁড়িয়ে আছে।
অবিশ্বাস্য এই গাছটি জর্ডানের মরুভূমির অভ্যন্তরে সাফাঈ এলাকায় দন্ডায়মান।
৫৮২ খ্রিস্টাব্দে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স তখন ১২ বছর, তিনি তার চাচা আবু তালিবের সঙ্গে বাণিজ্য উপলে মক্কা থেকে তৎকালীন শাম বা
সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
যাত্রাপথে তারা সিরিয়ার অদূরে জর্ডানে এসে উপস্থিত হন। জর্ডানের সেই এলাকাটি
ছিল শত শত মাইলব্যাপী বিস্তৃত উত্তপ্ত বালুকাময় এক মরুভূমি। মুহাম্মদ (সাঃ) এবং
তার চাচা আবু তালিব মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময় কান্ত হয়ে পড়েন।
তখন তারা একটু বিশ্রামের জায়গা খুঁজছিলেন। কিন্তু আশপাশে তারা কোনো বসার জায়গা
খুঁজে পাচ্ছিলেন না। চারদিকে যত দূর চোখ যায় কোনো বৃরাজির সন্ধান পাচ্ছিলেন না।
কিন্তু দূরে একটি মৃতপ্রায় গাছ দেখতে পেলেন তারা। উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝে গাছটি
ছিল লতাপাতাহীন শীর্ণ ও মৃতপ্রায়। উপায় না পেয়ে তারা মরুভূমির উত্তাপে শীর্ণ
পাতাহীন সেই গাছটির তলায় বিশ্রাম নিতে বসেন।
উল্লেখ্য, রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) যখন পথ চলতেন তখন
আল্লাহর নির্দেশে মেঘমালা তাকে ছায়া দিত এবং বৃরাজি তার দিকে হেলে পড়ে ছায়া দিত।
মুহাম্মদ (সাঃ) তার চাচাকে নিয়ে যখন গাছের তলায় বসেছিলেন তখন তাদের ছায়া দিতে
আল্লাহর নির্দেশে মৃতপ্রায় গাছটি সজীব হয়ে উঠে এবং গাছটির সমস্ত ডালপালা সবুজ
পাতায় ভরে যায়।
সেই গাছটিই বর্তমানে 'সাহাবি গাছ' নামে পরিচিত।
এ ঘটনা দূরে দাঁড়িয়ে জারজিস ওরফে বুহাইরা নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রি সবকিছু
দেখছিলেন।
আবু তালিব, মুহাম্মদ (সাঃ) নিয়ে পাদ্রীর কাছে গেলে তিনি
বলেন, "আমি কোনোদিন এই গাছের নিচে কাউকে বসতে
দেখিনি।"
পাদ্রী বলেন, "গাছটিও ছিল পাতাহীন কিন্তু আজ গাছটি পাতায়
পরিপূর্ণ। এই ছেলেটির নাম কি? "
চাচা আবু তালিব উত্তর দিলেন " মুহাম্মদ!"
পাদ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলেন, "বাবার নাম কি? "
আব্দুল্লাহ।,
"মাতার নাম?"
আমিনা।
বালক মুহাম্মদ (সাঃ) দেখে এবং তার পরিচয় শুনে
দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পাদ্রীর চিনতে আর বাকি রইল না যে, এই সেই বহু
প্রতীতি শেষ নবী মুহাম্মদ।
চাচা আবু তালিবকে ডেকে পাদ্রী বললেন,
"তোমার সঙ্গে
বসা বালকটি সারা জগতের সর্দার, সারা বিশ্বের নেতা এবং এই জগতের শেষ
নবী।"
তিনি বলেন, "আমি তার সম্পর্কে বাইবেলে পড়েছি এবং আমি
ঘোষণা দিচ্ছি, এই বালকটিই শেষ নবী।"
চাচা আবু তালিব ও মহানবী (সাঃ) যেই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন সেই
গাছটি ১৫০০ বছর আগ যে অবস্থায় ছিল আজো সেই অবস্থায় জর্ডানের মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে
আছে।
গাছটি সবুজ লতা-পাতায় ভরা এবং সতেজ ও সবুজ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, গাছটি যেখানে অবস্থিত তেমন মরুদ্যানে কোনো গাছ বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। গাছটির
আশপাশের কয়েকশ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আর কোনো গাছ নেই।
গাছটির চারিদিকে দিগন্ত জোড়া শুধুই মরুভূমি আর মরুভূমি। উত্তপ্ত বালুকাময়
মরুভূমির মাঝে গাছটি দাঁড়িয়ে থেকে আল্লাহর অসীম ক্ষমতার মহিমা দেখিয়ে যাচ্ছে।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments