দেভ ডি, যে দেবদাসকে আপনি আগে কখনোই দেখেন নি
আনুরাগ ক্যাশপ পরিচালিত ‘দেভ ডি’’সিনেমাটি ২০০৯ সালে মুক্তি পায়। অভয় দেওল,
কল্কি কোচলিন এবং মাহি গিল অভিনীত এই সিনেমাটি একটি ডার্ক কমেডি জনরার সিনেমা। সেন্সরবোর্ডকে তোয়াক্কা না করে অনেক বেশি রগরগে দৃশ্য এবং মাদকের ব্যবহার হয়।
পারো এবং দেব একে অপরের সাথে সেই স্কুল জীবন থেকে প্রেমিক-প্রেমিকা সম্পর্কে আবদ্ধ। দেব পড়াশুনার সুবাধে ইংল্যান্ডে থাকে এবং তার মধ্যে এক ধরনের মাত্রাতিরিক্ত যৌন আকাঙ্ক্ষা থাকে। দেব দেশে ফিরলে পারো তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় কিন্তু সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসিতে থাকা দেব মোটেও কোনোরকম বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হতে চায়না। তাই এক প্রকার নিরুপায় হয়ে মনের বিরুদ্ধে পারো অন্য একজনকে বিয়ে করে। হঠাত দেবের নিজেকে অপরাধী মনে হয় এবং একাকিত্ব অনুভব করতে থাকে। হতাশ দেব ইংল্যান্ড থেকে কামানো প্রচুর অর্থ নিয়মিত মদের দোকানে গিয়ে উড়াতে থাকে এবং উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরাঘুরি করে আর ভবঘুরের মতো রাস্তায় পরে থাকে। পারো বিষয়টি জানতে পারে। প্রাক্তন প্রেমিকের প্রতি সেই আবেগ আবার ফিরিয়ে আনতে তারা হোটেলে রাত কাটায় কিন্তু দেবের মানসিকতার একদমই পরিবর্তন হয়না। এরপর দেবের সাথে চুন্নির পরিচয় হয়। যে কিনা হোটেলে স্কর্ট সার্ভিস দিয়ে থাকে এবং মাদক সাপ্লাই করে থাকে। সেখানে চন্দ্রা নামের একজন যুবতী পতিতার সাথে তার প্রণয় ঘটে। কিন্তু দেবের প্রায়ই পারোর কথা মনে পড়ে। তাই সে চন্দ্রার সাথে সম্পর্কে স্থির থাকতে পারেনা। অন্যদিকে প্রায়শই দেব মদ্যপানে অতিরিক্ত মাতাল অবস্থায় থেকে মানুষের সাথে মার পিট করে। এলিট শ্রেণীর দেব নিজেকে নিয়ে একদমই ভাবেনা। ড্যাম কেয়ার সে সবসময় মাদকের নেশায় আসক্ত থাকে। এর থেকে আসলে দেব পরিত্রাণ পায় কিনা কিংবা সেই চন্দ্রা বা পারোরই বা কি হয় তা জানতে হবে এই সিনেমাটি আপনাকে দেখতে হবে। এই সিনেমার বিষয়বস্তু বেশ ডার্ক। দেব খুব সিরিয়াস চরিত্র হলেও তার খামখেয়ালি কর্মকান্ড বেশ হাসায় এবং তাঁকে হ্যেয় করায়। আনুরাগ ক্যাশপ বরাবরই একটু ভিন্ন ধরনের এবং সাহসী সিনেমা বানান। এই সিনেমা মুক্তি দেবার জন্য তাঁকে বেশ সংগ্রাম করতে হয়। অনেক বেশি ডার্ক কমেডি ট্রিটমেন্ট এই সিনেমায় দেওয়া হয়েছে। অভয় দেওল এই সিনেমায় অভিনয়ের আগে বলেছিলেন,
‘তিনি হয়তো এমন সিনেমায় তার কখনো অভিনয়ের সুযোগই পাবেন না।’ পরিচালক আনুরাগ ক্যাশপ তখন স্ক্রিপ্ট নিয়ে প্রযোজকদের কাছে দ্বারে দ্বারে ঘুরতেন কিন্তু কেউ এমন স্ক্রিপ্টে কাজ করতে সাহস পাচ্ছিলেন না। তারপরেও প্রযোজক রনি স্ক্রিউয়ালা পরিচালক এবং তার টিমের প্রতি আস্থা রেখেই এই সিনেমার পিছনে খরচ করেছেন। সিনেমাটি ছিলো দুর্দান্ত টিম ওয়ার্কের ফল। এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট রাইটার বিক্রমাদিত্য মোতায়ানি বেশ দক্ষতার সাথে স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। একজন আধুনিক যুগের ছেলে তার প্রেমিকার সাথে অন্তরঙ্গ মূহুর্তে যে ধরনের সংলাপগুলো দিয়ে থাকে যেমন কিছুটা আপত্তিকর স্ল্যাং এডাল্ট দর্শকদের মুখ চেপে হাসার মতো ছিলো। এটা এডাল্ট সিনেমা। সিনেমার শুরুতেই সেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিলো। তারপরেও যারা বর্তমানে ধারার বিপরীতে গিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন বা বানান তারা এখনো এই সিনেমাটি মনযোগ দিয়ে দেখেন এবং এই সিনেমার কালারগ্রেডিং এত চমৎকার যে ডার্ক ব্যাপারটা সিনেমার কালারেই অনেকাংশে ফুটে উঠেছে। তারপরেও সিনেমাটি একটা জনরাকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
No comments