eeb allay oo; যে সিনেমাটা দেখে আপনার বুকের মধ্যে মোচড় দিতে বাধ্য করবে
ভারতে
বানরকে ভগবানের সাথে তুলনা করা হয় এবং বিভিন্ন
মন্দিরে তাদেরকে প্রসাদও খাওয়ানো হয়। এমন ভগবান তুল্য প্রানীকে লাথি মারলেও নাকি পায়ের উপর কোনো আশির্বাদ থাকেনা। সম্প্রতি দিল্লিতে বায়ু দূষন, অত্যন্ত গরম, বন নিধন হয়ে
বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিতে বানরদের আবাসস্থল সংকটে পড়েছে। অনেক বানর না খেয়ে মারা
যাচ্ছে আবার দিল্লির দূষিত পানি বানরদের শরীরে নানা ক্ষতি করছে তাই তারা পুরো শহরে বিভিন্ন দোকান পাটে, অফিস আদালতের সামনে কিংবা কারও বাড়ির ছাদে সামান্য পানির জন্য হলেও উৎপাত সৃষ্টি করছে।এই সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য সরকার কিছু মানুষকে নিয়োগ দেয় যাদের কাজ এই বানরগুলোকে কোনো
প্রকার শারীরিক আঘাত না করে এরকম
অদ্ভুত শব্দের মাধ্যমে তাদেরকে তাড়ানো কিন্তু বিষয়টা তো আর হ্যামিলনের
বাঁশিওয়ালার মতো রূপকথার গল্প নয়! এই সামান্য কাজটুকু
করতে যে পরিমান ধৈর্য
আর দক্ষতার প্রয়োজন তা আসলে যারা
করেন তারা ছাড়া কারও পক্ষেই বুঝা সম্ভবনা। বানর তাড়কেরা মূলত ২ ধরনের বানরের
দৃষ্টি আকর্ষন করে ভয় দেখাতে ৩
টা সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে 'eeb হলো ছোট বানরদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য পরপর ২ বার ডাকতে
হয়। আর বড় ( langur) বানরদের
জন্য ডাকতে হয় Oo,Oo এবং মানুষ পরিচয় দিয়ে ভয় দেখাতে গলার
কণ্ঠস্বর অত্যন্ত চিকন করে allay বলতে হয়।
অঞ্জনি
প্রসাদ নামে এক যুবক যে
দিল্লির এক বস্তিতে তার
বোন এবং দুলাভাইয়ের সাথে থাকে যে তেমন কোনো
কাজ করতে আগ্রহী নয় তাকে তার
দুলাভাই এই সরকারি চাকরিটি
দেয়। সরকারি চাকরি ,এমনিতেই তো দূর্নীতি এর
প্রতিটি রন্ধ্রে কাজ করে তার মধ্যে গরীব মানুষ তাও মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে চাকরিটা যোগাড় করে দেওয়া চাইলেও তো চাকরি ছেড়ে
আসার উপায় নেই। তার মধ্যে পান থেকে চুন খসলেই বড় কর্তাদের দ্বারা
অপমান এমনকি মারও পর্যন্ত খেতে হয়।সিনেমায় ঘটেছেও এমন! যখন বানরের উপর অঞ্জনি বাটুল দিয়ে আঘাত করে তখন তাকে যেমন শারিরীক নির্যাতন করা হয় সেই সাথে
তাকে আইনের ভয়ও দেখানো হয়।( ভারতে বন্য প্রানী আক্রমনে নাকি শাস্তির বিধান রয়েছে)। নিজের বোন
দুলাভাইয়ের মান রাখতে, প্রেমিকার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে প্রসাদ চাকরিটি টিকিয়ে রাখতে প্রচন্ড চেষ্টা করে। কখনো বানরদের হাত তালি দিয়ে কিংবা কখনো বানরের মুখোশ পরে বানরদের নিয়ন্ত্রনে চেষ্টা করে। মাঝে অবশ্য সে বানরের ছবি
বিভিন্ন জায়গায় টানিয়ে বানরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা
করে কিন্তু ওই যে বলেছিলাম
বানর যে ভারতীয়দের চোখে
ভগবান তুল্য! কাজেই ভগবানের ছবি এভাবে সবখানে টানিয়ে ভয়ের প্রতীক করে ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত হানেন প্রসাদ।সরকারী কর্মকর্তাদের যে গরীবদের উপর
নিষ্পেষন, তা দেখা যায়
যখন প্রসাদের ২ মাসের বকেয়া
বেতন চাইতে যাওয়া নিয়ে কিংবা তার গর্ভবতী বোনের চিকিৎসার অবহেলার দৃশ্য দেখে।
সিনেমার
শেষাংশে একটা কথা প্রসাদের বোন বলেন , 'god says that if
one prays,one is rewarded.' আসলে
প্রসাদ তো চেয়েছিলো সম্মান
নিয়ে সমাজে টিকে থাকতে কিন্তু এত্ত ভাইরাল ,এত স্টারডম হুট
করে পাওয়ার পরও প্রসাদের কি সমাজের মানুষদের
কাছ থেকে জোকার উপাধিই প্রাপ্য নাকি এই মহৎ শ্রমের
গুরুত্ব তার সমাজ রাষ্ট্র পরবর্তীতে দিতে পেরেছিলো? নাকি প্রসাদ তার ন্যায্য অধিকার পেতে প্রতিবাদের মুখোশ পরে রাস্তায় নামতে পেরেছিলো।সিনেমার এই এবস্ট্রাক্ট এন্ডিংটা
আপনারা আপনাদের চোখ দিয়ে দেখে অবশ্যই মন দিয়ে ভাববেন
আশা করি।
No comments