এক বছরে কর্মক্ষেত্রে প্রাণ ঝরেছে ৮৭৫ শ্রমিকের
কর্মক্ষেত্রে ২০২৩ সালে সারাদেশে ৭১২টি দুর্ঘটনায় ৮৭৫ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে পরিবহন খাতে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি শ্রমিক ক্ষতিপূরণ পাননি। বেসরকারি সংস্থা সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস) রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরেন এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২২ সালে ৫৪৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭১২ শ্রমিক। ২০২৩ সালে মারা যান ৮৭৫ জন। এ বছর পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৩২৯ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এর পরই রয়েছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান (ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান), যেখানে ১৮৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নির্মাণ খাতে ১৭৩ জন, কলকারখানা ও অন্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে ৯৬ জন এবং কৃষি খাতে ৮২ শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৫৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩০ জনের তথ্য নিয়ে এসআরএস দেখেছে, সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ১২ জন, আংশিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ৮ জন এবং ক্ষতিপূরণ পাননি ১০ জন শ্রমিক। ২৯ জন আহত শ্রমিকের তথ্য থেকে দেখা যায়, দু’জন শ্রমিক সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, আংশিক পেয়েছেন ৯ জন এবং ক্ষতিপূরণ পাননি ১৮ শ্রমিক।
এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, মালিক এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর যথাযথ পরিদর্শনে অবহেলা এবং দায় এড়ানোর প্রবণতা দুর্ঘটনা বৃদ্ধির কারণ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন এসআরএসের লিগ্যাল অফিসার অ্যাডভোকেট হাসিনা খানম ও প্রকল্প কর্মকর্তা বি-আম্মা মল্লিকা।
এদিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এক প্রতিবেদনে জানায়, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২০২৩ সালে ৭০৯ শ্রমিক নিহত এবং ৪৮২ শ্রমিক আহত হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫৩ শ্রমিক নিহত ও ১২৬ শ্রমিক আহত হন। কর্মক্ষেত্রের বাইরে নির্যাতনের শিকার হন ১৮৮ শ্রমিক। তাদের মধ্যে ১৪২ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে ৪০ শ্রমিক নিহত এবং ৩১ শ্রমিক আহত হয়েছেন। বিভিন্ন সেক্টরে ১৬৯টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে ১০৮টি ঘটে তৈরি পোশাক খাতে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্রভিত্তিক বিলস জরিপ-২০২৩’-এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments