শেষ দেখা || সুমাইয়া রিমি
শেষ দেখা || সুমাইয়া রিমি
আমাদের শেষ দেখা হয়েছিলো
নভেম্বরের কোন এক নিষ্ঠুরতম সন্ধ্যায়।
যে সন্ধ্যা হঠাৎই অনুভব করিয়েছিলো
নীরে ফেরার তাড়া।
যেখানে দাড়িয়ে থাকতে বলেছিলাম
ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলে তুমি।
হাজারো রমণীর ভিড়ে তোমার
উৎসুক চোখজোড়া সেদিন আমাকেই খুঁজেছিলো।
বিষন্নতা জাপটে ধরেছিলো সেদিন দুজনকেই।
ক্ষনিক মন খারাপ করে বলেছিলাম,
এরপর আর বহুদিন দেখা হবে না আমাদের।
বরাবরের মতোই মন খারাপের অভিব্যক্তি
আড়াল করতে মুখে কিঞ্চিৎ হাসি
ফুটিয়ে নিয়ে তুমি বলেছিলে,
দেখা হবে না বেশ হবে,
তোমার সঙ্গে দেখা না হওয়াই ভালো।
তোমার কথা ফুরোতেই ঈষৎ রাগান্বিত হয়ে
তোমাকে মারতে উদ্যত হতেই খেয়াল করলাম
আমার হাতভর্তি হয়ে আছে এক্সামের ফাইল
আর তোমার দেওয়া চিপসের প্যাকেট দিয়ে।
অগত্যা গাল ফুলিয়ে অভিমানী সুরে বলেছিলাম,
হাত আটকা আছে, এজন্য মারতে পারছি না।
এবারেরটা পাওনা থাকুক।
তুমি একটু হেসে আমাকে মারার সুযোগ
করে দেওয়ার জন্য, আমার থেকে
সেগুলো নিতে নিতে কথার তোড়ে আমার
রাগটাই ভুলিয়ে দিয়েছিলে সেদিন।
কি নিদারুণ মুগ্ধকরী ক্ষমতা নিয়েই না জন্মেছ তুমি!
আমার চলে যাওয়ার মুহুর্তটা ঘনিয়ে আসতেই
তুমি বলেছিলে, এখনই চলে যাবে?
আর কিছুক্ষণ থাকো।
তৎক্ষনাৎ তোমার মলিন কন্ঠের আকুতি
আমার ভেতরটা তোলপাড় করে দিয়েছিলো জানো?
মন তো চাইছিলো আরও কিছুক্ষণ
থাকি তোমার সঙ্গে।
আঙুলে আঙুল গুজে দিয়ে
তোমার তৃষ্ণার্ত চোখের দিকে তাকিয়ে বলি,
এইতো আছি ; তোমার কাছাকাছি।
খুব কাছে। যতটা কাছাকাছি থাকলে
হৃদপিণ্ডের তীব্র আন্দোলন অনুভব করা সম্ভব,
ঠিক ততটাই।
তবু নিষ্ঠুর সন্ধ্যার নিকট আমার ইচ্ছেরা
সহজেই পরাজয় বরণ করেছিলো সেদিন।
তারপর আর দেখা হয়নি আমাদের ;
কোন সন্ধ্যায়।
অথবা কোন নির্জন নিশিতে।
মুখোমুখি দাড়িয়ে গল্প করতে করতে
আকাশের বুকে লেপ্টে থাকা চাঁদের আলোয়,
নিজস্ব চাঁদ দেখার সৌভাগ্যটা
মেলেনি আর কখনো।
শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প
No comments