ভূমিকম্পের সময় করণীয়
২ ডিসেম্বর ২০২৩ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। তবে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপূর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরপূর্ব এলাকায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
২ ডিসেম্বর ২০২৩ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। তবে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপূর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরপূর্ব এলাকায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে ভূমিকম্প হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বার বার এ ভূমিকম্প বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস বলছেন ভূতত্ত্ববিদরা।
শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প
বাংলাদেশ অন্যতম একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। এর মধ্যে ভূমিকম্প অন্যতম। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প বলয়ে অবস্থিত। বাংলাদেশকে ঘিরে আছে ইন্ডিয়া, বার্মা ও ইউরেশিয়ান প্লেট। ভূমিরূপ ও ভূ-অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত কারণে বাংলাদেশে ভূ-আলোড়নজনিত শক্তি কার্যকর এবং এর ফলে এখানে ভূমিকম্প হয়। আবহাওয়া অফিসের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্র বলছে বার বার ভূকম্পন ফ্রন্ট লাইনের সক্রিয়তার প্রমাণ দেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা বলছে, বার্মা প্লেট এবং ইন্ডিয়ান প্লেটের যে সংযোগস্থল এই সংযোগস্থলটি রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। দু'টার ইন্টারফেম ১০ কিলোমিটারের মধ্যে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে এটা আটকে রয়েছে। সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে অংশটা, সে অংশে প্রায় ১ হাজার বছর ধরে বৃহৎ ভূমিকম্প হয়নি। ফলে এখানে শক্তিটা সঞ্চিত আছে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন যে সমস্ত অঞ্চলে গত ১০০ বছরে ভূমিকম্প হয়নি অথচ সাধারণভাবে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত, সেখানে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা খুব বেশি। এছাড়া প্রতি ১০০ বছর পর পর টেকনিক্যাল প্লেটের একটা সঞ্চালন হয়ে থাকে। ফলে সামনে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ রজার বিলহ্যাম এর মতে, সিলেটের পাশে মেঘালয়ের ডাউকি ফল্টে ৮ মাত্রার অধিক ভূমিকম্প হওয়াটা শুধু সময়ের ব্যাপার। এদিকে এ ধরনের ভূমিকম্পের প্রভাবে দেশের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা জেলা। অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বিল্ডিং কোট না মেনে ভবন নির্মাণ করায় ৮ মাত্রার ভূ-কম্পনের ফলে ঢাকা শহরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অকল্পনীয় হবে বলে মনে করছেন ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভূমিকম্প হঠাৎ আঘাত হানলে কারো কিছুই করার থাকে না। তাই আগামী দিনগুলোতে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।
ভূমিকম্পের প্রস্তুতিস্বরূপ একজন ব্যক্তির করণীয়ঃ
১) প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা।
২) বাড়িতে একটি ব্যাটারিচালিত রেডিও ও টর্চ বাতি সব সময় রাখা।
৩) বাড়ির গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের মেইন সুইচ কোথায় তা জেনে রাখা এবং এগুলো কীভাবে বন্ধ করতে হয় তা শিখে রাখা।
৪) বাড়ির সুরক্ষিত স্থানটি চিহ্নিত করা।
৫) হাসপাতাল, ফায়ার ব্রিগেড প্রভৃতির ফোন নাম্বার সাথে রাখা।
৬) খেলার মাঠে থাকাকালীন সময়ে দালানকোঠা থেকে দূরে থাকা।
৭) ভূমিকম্পের সময় কী কী করতে হবে তা অন্যদের শিখিয়ে দেয়া ইত্যাদি।
ভূমিকম্প চলাকালীন সময়ে জনসাধারণের করণীয়ঃ
১) নিজেকে ধীরস্থির ও শান্ত রাখা; একতলা দালান হলে দৌড়ে বাইরে চলে যাওয়া এবং কোনো কিছুর লোভে ঘরে অবস্থান না করা।
২) বাইরে থাকলে ঘরে প্রবেশ না করা।
৩) বহুতল দালানের ভিতর থাকলে এবং রাত্রে ভূমিকম্প হলে টেবিল বা খাটের নিচে ঢুকে যাওয়া এবং কাঁচের জানালা থেকে দূরে থাকা।
৪) প্রয়োজনে ঘরের কোণে বা কলামের গোড়ায় আশ্রয় নেয়া।
৫) ঘরের বাইরে থাকলে দালান থেকে, বড় গাছ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন থেকে দূরে থাকা।
৬) উঁচু দালান থেকে, জানালা বা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নামার চেষ্টা না করা।
৭) রাস্তার উপর গাড়িতে থাকলে গাড়ি না চালিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করে রাখা।
৮) পাহাড়, উঁচু খাদ বা ঢালু জমিতে ভূমিধসের সম্ভাবনা থাকে, এ সব স্থান থেকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়া।
ভূমিকম্পের পর একজন সচেতন ব্যক্তির করণীয়ঃ
১) নিজের এবং অন্যদের আঘাত পরীক্ষা করা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া।
২) পানি, গ্যাস ও বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা।
৩) বাড়ির দরজা-জানালা খুলে দেওয়া।
৪) রেডিও অন রাখা, যাতে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে তথ্য প্রচার শোনা যায়।
৫) খালি পায়ে চলাফেরা না করা।
৬) লুটতরাজ থেকে সাবধান থাকা এবং অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শ মতো চলা ইত্যাদি।
তাই আতঙ্ক নয়, সচেতন থাকুন। ভূমিকম্পে করণীয় পদক্ষেপগুলো মেনে চলুন।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments