Adsterra

কারা এই হুথি বিদ্রোহী

কারা এই হুথি বিদ্রোহী, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News,ইয়েমেন, ফিলিস্তিনি, হামাস, ইসরাইল, হুসেন আল

হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধের ঢেউ পৌঁছেছে লোহিত সাগরে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানাতেই লোহিত সাগরে হামলা শুরু করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রবেশের দাবি তাদের। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই কৌতূহল জেগেছে কারা এই হুথি। কেনইবা তারা লোহিত সাগরের বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। কেনই বা তারা এই যুদ্ধে জড়ালো।


হুথি মুভমেন্ট প্রথম শুরু হয়েছে উত্তর ইয়েমেন থেকে। সেখানের অধিকাংশ মানুষই জায়েদিজম অনুসরণ করেন, যা শিয়া মুসলিমদের একটি শাখা। কয়েক শতাব্দী ধরে জায়েদি ইমামরা ওই অঞ্চলে নিজেদের আদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়েছে।


১৯১৮ সালে তারা এক সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এই ইমামরা ১৯৬২ সাল পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। সেসময় একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইয়েমেন আরব রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা হয়। পরে সুন্নি অধ্যুষিত এলাকার চেয়ে জায়েদি এলাকা তুলনামূলকভাবে গরিব হয়ে পড়ে। 


১৯৮০ সালের দিকে সৌদি ও ইয়েমেনের সরকার উত্তরাঞ্চলে সুন্নি মতবাদকে প্রচার শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে জোয়েদি মুভমেন্টের আবির্ভাব হয়।


১৯৯০ দশকের দিকে জায়েদি ধর্মগুরু হুসেন আল-হুথি সৌদি সমর্থিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০১ সালের দিকে এটি বিভক্ত হয়ে গেলেও তার অনুসারীরাই হুথি নামে পরিচিতি পায়।


ধীরে ধীরে হুথিদের বিরুদ্ধে সমর্থন বাড়তে থাকে, যা হুমকি হয়ে দাঁড়াতে শুরু করে ইয়েমেনের সরকারের জন্য। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলারও সমর্থন করেছিল ইয়েমেনের নেতারা, যা ভালোভাবে নেয়নি ইরাকের জনগণ। তাদের এই ক্ষোভকে পুঁজি করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেয় হুথি। আল-হুথি ইরানের ইসলামিক বিপ্লব ও লেবনানের হিজবুল্লাহ মুভমেন্টকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করেন। গোষ্ঠীটির মূল স্লোগান ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে নির্মূল।


ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে হুথি বিদ্রোহীদের প্রভাব বাড়তে থাকায় দেশটির সরকার দমনপীড়ন শুরু করে। ২০০৪ সালে সরকারি বাহিনী গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেন আল-হুথিকে হত্যা করে। হুথি বিদ্রোহীদের অস্ত্রের মূল উৎস কালোবাজার ও কিছু সামরিক বাহিনী।


২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক শাখা উত্তর ইয়েমেনের সাদা প্রদেশ দখল করে। নাম দেয়া হয় আনসার আল্লাহ বা আল্লাহর রক্ষক।


এরপর ২০১৪ সালে ইরানের সহায়তায় রাজধানী সানা দখলে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বো মনসুর হাদী সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ২০১৫ সালে তার অনুরোধে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে সৌদি আরব। 

শাহরিয়ার সোহাগ এর  নতুন উপন্যাস "মানুষ" - ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প

এরপর ২০২২ সালের এপ্রিলে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন হুথি যোদ্ধাদের মূল লক্ষ্য ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যু। তবে ইয়েমেনের বাইরে হামলা করার মতো তাদের তেমন কোনো সক্ষমতা নেই। সম্প্রতি তারা ইসরাইলে হামলা চালানোর মতো ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেয়েছে। যা এক হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানতে পারে।


এই পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্র খুব একটা উদ্বেগের না হলেও লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার বিষয়টি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের সহায়তা হুথিদেরকে একটি রাগট্যাগ সেনাবাহিনী থেকে একটি বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছে। হুথিদের অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির সরবরাহ করেছে ইরান।


বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলার ঘটনায় বেড়ে যেতে পারে পরিবহন খরচ। কারণ জাহাজগুলোকে আফ্রিকা ঘুরে ইউরোপে যেতে হবে। এতে দেশে দেশে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়তে পারে।

No comments

Powered by Blogger.