বাফুফে চায় ১০০ কোটি টাকা, যা বললেন পাপন
সরকারের কাছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের চাওয়ার শেষ নেই। সরকারের দেওয়া ২০ কোটি টাকা সিড মানি স্থায়ী আমানত না করে নানা খাতে খরচ করার দুর্নাম আছে এই ফেডারেশনের। এ নিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল কড়া সমালোচনা করেছিলেন বাফুফের। তারপরও বিগত সরকারের কাছে তারা ৪৮০ কোটি টাকার বিশাল প্রকল্প জমা দিয়েছিল। সেটা চাপা পড়ে গেছে অঙ্কটা আকাশ ছোঁয়া হওয়ায়। তারপরও হাল ছাড়েনি বাফুফে। বুধবার নয়া ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে বৈঠক করে ১০০ কোটি টাকা সিড মানি দাবী করেছে বাফুফে। মন্ত্রী অবশ্য কোন আশ্বাস দেননি বাফুফেকে। তবে সাময়িক কিছু সমস্যা সমাধানে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন পাপন।
আগের দিন নয়টি ফেডারেশন ও একটি সংস্থার সঙ্গে বসেছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী। তাদের চাওয়াগুলো জেনে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে আলাদা করে বসেছিলেন ফুটবল আর হকির কর্তাদের সঙ্গে। বাফুফের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। পাপন মন দিয়ে শুনেছেন তাদের কথা। জেনেছেন তাদের লক্ষ্য। বাফুফে মন্ত্রীকে এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে খেলার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছে। সেই লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রী যথাসাধ্য সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন, 'ফুটবল আগামী এশিয়ান কাপে খেলার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এটা হলে তো আমাদের ফুটবলের জন্য বিশাল ব্যপার হয়। এ ব্যপারে পূর্ন সহায়তা তারা পাবে।'
দেশের কয়েকটি স্টেডিয়ামকে শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধও পেয়েছেন বাফুফের কাছ থেকে। এর সঙ্গে একটা বড় অঙ্কের সিড মানির দাবী গেছে তার কাছে। এ ব্যাপারে অবশ্য কোন প্রতিশ্রুতি দেননি মন্ত্রী, ‘এ ব্যপারে এখনই আমি তাদের কোন প্রতিশ্রুতি দিতে পারেনি। আগামী ছয়মাসের মধ্যে কোন কিছু আশা করাই ঠিক হবে না। পরেও পারবো কীনা সেটাও এখন বলতে পারবো না। এটা নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। তবে আপাতত তাদের জন্য কোন স্পন্সরের ব্যবস্থা করা যায় কীনা, সেটা দেখবো।’
বাফুফে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ আগেভাগে শেষ করার অনুরোধ করে মন্ত্রীর কাছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'যতটুকু জানি, আগামী ডিসেম্বর লাগবে সংস্কার কাজ শেষ হতে। তবে আমি আগেই বলেছি, স্টেডিয়ামটি আমি নিজে পরিদর্শন করে দেখবো কী অবস্থায় আছে। তারপর বোঝা যাবে এটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কীনা। কিংবা আংশিকভাবে খেলা শুরু করা যায় কীনা, সেটাও দেখা হবে। তবে না দেখে কিছু বলতে পারছি না।' বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পাশাপাশি বাফুফে কমলাপুর স্টেডিয়ামের কিন্তু সংস্কারের অনুরোধ করেন মন্ত্রীকে। সেই স্টেডিয়ামও পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান পাপন। তার সঙ্গে সভা শেষে আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, 'নতুন মন্ত্রী আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের লোক। আমাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম দ্রুত পাওয়া, জেলা পর্যায়ে স্টেডিয়ামসহ আমাদের কার্যক্রম সব কিছু বিষয়ে অবহিত করেছি। যদিও ৩১ ডিসেম্বরের আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম মনে হয় পাওয়া যাবে না বলে মনে হলো মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে।’ নতুন করে সিড মানি চাওয়ার বিষয়টি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেন সালাম মুর্শেদী। তবে তার মুখের কথায় কতটা বিশ্বাস রাখবেন নতুন মন্ত্রী, সেটা সময়ই বলে দিবে।
এদিকে হকি ফেডারেশন থেকে ইনডোর সুবিধা চেয়েছে যাতে ফাইভ-এ-সাইড হকি চালু করা যায়। এই ফেডারেশনটি আপাতত ইনডোর বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগুতে চাইছে। তবে পাপন মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পরপরই হকি দলকে বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই স্বপ্ন পূরণে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এছাড়া তৃণমূল থেকে হকি খেলোয়াড় তুলে আনতে বিভিন্ন জায়গায় টার্ফ স্থাপনের দাবী জানিয়েছে ফেডারেশনটি। এটাকে যৌক্তিক দাবী মানছেন পাপন, 'এটি আসলেই প্রয়োজন। হকির অবকাঠামো ছাড়া খেলোয়াড় উঠে আসবে কোথা থেকে? আমরা তাই ওদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করব।’
No comments