Adsterra

আত্রলিতা || সাদিয়া শাহরিণ শিফা || পর্ব : ১০

আত্রলিতা, সাদিয়া শাহরিণ শিফা, পর্ব ১০ , ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice,  প্রেমের উপন্যাস, romantic bangla story, bangla story for love, short bangla story


উপন্যাস : আত্রলিতা
লেখিকা : সাদিয়া শাহরিণ শিফা
পর্ব : ১০


দুপুরে খাওয়া শেষে বারান্দায় বসে আছে আত্রলিতা।

অহমকে শুইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে এসেছে। ছোট ভাইটার জন্য ওর খুব মায়া হয়। একেতো ও অবুঝ থাকতেই মা চলে গেছে। মায়ের আদর ও পায়নি। দ্বিতীয়ত আত্রলিতার অসুস্থতা, পাগলামির জন্য বোনের আদর, সান্নিধ্য থেকেও বঞ্চিত হয় ছেলেটা।  আদর পেয়েছে আত্রলিতা। মায়ের চোখের মণি ছিল সে। মায়ের কথা ভাবতেই গা শিউরে ওঠে আত্রলিতার। দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকায় ও। মাকে কি মানুষের কখনও ভয় পাওয়া উচিত? কিন্তু মৃত্যুর পর কেউ ফিরে এলে! সেটা যদি নিজের মা হয় তাহলেও কি উচিত না? 

বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা, আত্রলিতা দূরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে রয়। ভাবে, সবার জীবন চলমান, কেউ থেমে নেই, এমনকি মাথার উপরে মেঘগুলোও চলছে... তাহলে ওর জীবনটা হঠাৎ করে এমন থেমে গেল কেন!

তখন ই কলিংবেল বাজলো। আত্রলিতা ভাবলো বাবা অফিস থেকে ফিরেছে। উঠে দরজা খুলে দিতে গেল সে, তবে জোরে হাঁটতে ও পারছে না। গতকাল থেকেই গা হাত-পা খুব ব্যথা। যেন তাকে শূন্যে তুলে মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলেছে কেউ। মানুষের তথাকথিত পাগলামির পরের দিনগুলোতে এমন প্রচন্ড ব্যথা হয়। তবে সেই সময় ঠিক কি হয়েছিল মনে করতে পারে না সে। সেই সময়ের স্মৃতিগুলো ঝাপসা, দুর্বোধ্য।


দরজা খুলতেই আত্রলিতা দেখতে পেল আহিল দাঁড়িয়ে। নীল রঙের টিশার্টে দারুণ লাগছে তাকে। ওর দিকে তাকিয়েই আহিল সৌজন্যের হাসি হেসে বললো,“আজ কি ভেতরে আসতে দেয়া যাবে?” 

আত্রলিতাও হেসে স্বাভাবিকভাবেই বললো,” হ্যাঁ আসুন, ভেতরে আসুন।“

দরজা ছেড়ে দিয়ে সোফার পাশে এসে দাঁড়ালো আত্রলিতা। আহিল এসে ওপাশের সোফায় বসতে বসতে বললো,

“আজ সময়ের আগেই চলে এলাম। সন্ধ্যার পরে আসবার কথা বিকেলেই এলাম। আসলে এদিকে আরেকটা স্টুডেন্টের বাসায় এসেছিলাম, ভাবলাম একবারে অহমকে পড়িয়ে যাই।”

- “ওহ আচ্ছা। আপনার ছাত্র তো ঘুমাচ্ছে। বসুন, আমি ডেকে দিই” বেশ স্বাভাবিক পরিচিতর মতই কথা বলছে আত্রলিতা।

- “সমস্যা নেই। আপনি ব্যস্ত হবেন না। ও উঠুক ধীরে সুস্থে। আমি বসি।”

- “ঠিক আছে। চা খাবেন?”

- “না না। আপনিও ব্যস্ত হবেন না। চা না হলেও চলবে।“

“আচ্ছা” বলেই আত্রলিতা চলে যাচ্ছিল। কি মনে করে পরমুহূর্তেই বললো,

“আমি এখন নিজের জন্য চা বানাবো। আপনি খেলে বলতে পারেন। একান্তই না খেতে ইচ্ছা করলে জোর করবনা”

আহিল মুচকি হেসে বললো,”ঠিক আছে, খাওয়া যায়। আমার একদম ইচ্ছা করছে না তা কিন্তু নয়। আপনার বানাতে আবার কষ্ট হবে তাই বললাম। তবে যেহেতু বানাচ্ছেনই, দিয়েন” 

মাথা নেড়ে ভেতরে চলে গেল আত্রলিতা। 

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক নতুন বই  "মানসিক স্বাস্থ্য"। অর্ডার করতে 01745676929 নাম্বারে আপনার নাম, ঠিকানা, কনটাক্ট নাম্বার লিখে ক্ষুদেবার্তা পাঠান।

ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক নতুন বই  "মানসিক স্বাস্থ্য"। অর্ডার করতে 01745676929 নাম্বারে আপনার নাম, ঠিকানা, কনটাক্ট নাম্বার লিখে ক্ষুদেবার্তা পাঠান।

আহিলের আজ খুব ভালো লাগছে আত্রলিতার সাথে এটুকু কথা বলতে পেরেই। তবে সে দুটো মিথ্যা কথা বলেছে। এক, সে অন্য কোনো স্টুডেন্টকে পড়ায় বলে তাড়াতাড়ি আসেনি, সে দুপুরের পর থেকেই এই পাড়ার রাস্তার মাথায় টংয়ের দোকানে বসে ছিল। কেন ছিল তার ব্যাখ্যা সে নিজেও জানে না। তবে সেদিন আত্রলিতাকে দেখার পর থেকেই তার মধ্যে একটা অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে। আজ সকাল থেকেই কেন যেন আহিলের মনে হচ্ছিল দ্রুত গেলেই আত্রলিতাকে দেখতে পাওয়া যাবে। অস্থিরতা কাজ করছিল একটা। তাই আগে আগেই চলে এসেছে। দেখা পেয়েও গেছে। বেগুনী রঙের থ্রিপিসে আত্রলিতাকে আজ আরও সুন্দর লাগছে, একদম ফুটে থাকা জারুল ফুলের মতো। আর দ্বিতীয় মিথ্যা আহিল বলেছে চা খাওয়া নিয়ে। এখন তার চা খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। টংয়ের দোকানে এতক্ষণ বসে থেকে বেশ কয়েক কাপ চা খাওয়া হয়ে গেছে তার। দুপুরে খাবারের পর এত চা খেয়ে এখন একদম ভালো লাগছে না। তবে আত্রলিতা দ্বিতীয়বার বলায় আহিলের আর না করতে ইচ্ছা করেনি। তাই মিথ্যা বলেছে। এর পেছনে অবশ্য আরও একটা কারণ আছে। চা খেতে খেতে যদি আত্রলিতার সাথে গল্প করা যায়? 

মেয়েটাকে অসাধারণ রহস্যময়ী মনে হয় আহিলের। ওর চোখের মাঝেই যেন না বলা একশো উপন্যাস! তাই ওর সাথে এক মুহুর্ত কাটাতেও আহিলের ভীষণ লোভ হয়। আর অসাধারণ কিছু পাওয়ার আশায় মিথ্যা বলা কি দোষের ?


চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.