আত্রলিতা || সাদিয়া শাহরিণ শিফা || পর্ব : ১১
উপন্যাস : আত্রলিতা
লেখিকা : সাদিয়া শাহরিণ শিফা
পর্ব : ১১
লেখিকা : সাদিয়া শাহরিণ শিফা
পর্ব : ১১
- “আপনার চা”,
ট্রে টা আহিলের সামনে রেখে বললো আত্রলিতা। আহিল তাকিয়ে দেখলো ট্রে তে শুধু দুকাপ চা ই নয়, কমলা আপেল কাটা, বিস্কুট, চানাচুর সব রয়েছে।
- আরে এ তো বিশাল আয়োজন! আপনি এত সব করতে গেলেন কেন?
নিজের কাপটা তুলে নিতে নিতে আত্রলিতা বললো,
- “একজন মানুষ কে শুধু চা দেয়া যায়?! আর বেশি বেশি করে রেখে গেলাম, আপনার ছাত্র যতক্ষণ না আসছে আপনি খাবেন।”
হো হো করে হেসে উঠলো আহিল। আত্রলিতা কাপ হাতে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলো।
আহিলের এই ব্যাপারটা ভালো লাগলো না। সৌজন্যতা বোধ থেকে হলেও আত্রলিতা যদি তার সাথে বসে চা খেতো সেটা তার ভালো লাগতো। মোদ্দাকথা, সে ভেবেই রেখেছিল যে এমনটা হবে। তা না আত্রলিতা বারান্দায় চলে গেল। আহিলের একবার মনে হলো পাশেই তো বারান্দা, যেখানে সে বসে আছে সেখান থেকে স্পষ্ট দেখা যায়, তাহলে সেও উঠে যাক। পরমূহুর্তেই মনে হলো, দরকার নেই উপযাচক হয়ে সেখানে যাবার।
ইতোমধ্যে বারান্দা থেকে আত্রলিতার কণ্ঠ শোনা গেল-
“আপনি কি এখানে আসার জন্য ইতস্তত করছেন? তাহলে আসুন সমস্যা নেই, আমাদের বারান্দাটা বেশ বড় ”
আহিল নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছে না। এই মেয়ে কি মাইন্ড রিডার নাকি! মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকা কথা ধরে ফেলতে পারে!! তাহলে এতক্ষণ সে যা যা ভেবেছে সবকিছুই কি আত্রলিতা জানে?!
খানিকটা হতভম্ব হয়ে বারান্দায় ঢুকলো আহিল। আত্রলিতা বললো,“বসুন”
“না মানে”- কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না আহিল।
“আপনার চা আনেননি? ঠান্ডা হচ্ছে” ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে প্রশ্ন করলো আত্রলিতা।
“ভুলে গিয়েছি একদমই। এখনই আনছি!” বলেই উঠে দাঁড়াতে গেল আহিল। আত্রলিতা সেই মুহূর্তে গম্ভীর হয়ে বললো,“বসুন, আপনার চা খাওয়ার ইচ্ছে নেই। তখন এমনিতেই বলেছিলেন”
“না মানে“ খুব অস্বস্তি হচ্ছে আহিলের, ইতস্তত লাগছে।
”আপনি এত অবাক হচ্ছেন কেন?” স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নটা করলো আত্রলিতা।
“না আসলে আপনি কিভাবে সব বুঝতে পারেন? আপনি কি মাইন্ড রিড করতে পারেন? বুঝতে পারছি না..” মাথা চুলকে জবাব দিল আহিল।
ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক নতুন বই "মানসিক স্বাস্থ্য"। অর্ডার করতে 01745676929 নাম্বারে আপনার নাম, ঠিকানা, কনটাক্ট নাম্বার লিখে ক্ষুদেবার্তা পাঠান।
ভাষণ দেয়ার মত ভঙ্গিতে গলা উঁচু করে আত্রলিতা ভয়েসে খুব সুন্দর একটা টোন এনে বললো “উম, ওয়েল, আহিল সাহেব, আপনি কি আমার অসুস্থতার ব্যাপারে জানেন না? আমাদের মত পেসেন্ট রা অনেক কিছু জানতে পারে। মাইন্ড রিড ঠিক নয়, জানতে পারি আমরা কিছু মাধ্যমে। সেসব অন্য একদিন বলবো। কিন্তু আপনি খাবেন না জেনেও আমি চা বানালাম আপনার জন্য, এটা সৌজন্যতা। একত্রে বসে খাই না খাই তাতে কি আসে যায়! আর আমার মতন মানসিক রোগীর থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই ভালো।”
আহিলের মাথা পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গেল। ভেবে পেল না কি বলবে। সময় নিল। দুজনেই বেশ অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলো। আত্রলিতা চা খাওয়া শেষ করে উঠে যাবার সময় আহিল বললো,“মিস আত্রলিতা!”
ততক্ষণে দরজার কাছে চলে গেছে আত্রলিতা, ফিরে তাকালো। আহিল বেশ দৃঢ় কণ্ঠে স্পষ্টভাবে বললো,
“আপনি অসাধারণ একজন মানুষ। আমি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করবো যদি আপনার বন্ধু হতে পারি।“
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments