Adsterra

আত্রলিতা || সাদিয়া শাহরিণ শিফা || পর্ব : ০১

আত্রলিতা, সাদিয়া শাহরিণ শিফা, পর্ব ০১ , ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice,  প্রেমের উপন্যাস, romantic bangla story, bangla story for love, short bangla story


উপন্যাস : আত্রলিতা
লেখিকা : সাদিয়া শাহরিণ শিফা
পর্ব : ০১


বাইরে থেকে বন্ধ করা আছে রুমের দরজা। দরজার হ্যাসবোর্ডের সিটকিনিতে মোটামুটি মাঝারি মতন গোল্ডেন রঙের একটা তালা ঝোলানো। তালায় লেখা "হেভি ডিউটি"। সত্যিই হেভি ডিউটি করছে তালাটা। কারণ ভেতর থেকে অনবরত একটা মেয়ের আকাশ ফাটানো চিৎকার শোনা যাচ্ছে। তারপরেও কেউ খুলছে না তালাটা। মাঝেমাঝে মেয়েটা চেঁচিয়ে কিছু বলছে, সেটাও বোধগম্য নয়। কিছু কিছু বোঝা যায়, তা থেকে মনে হচ্ছে মেয়েটা কারো সাথে কথা বলছে‌। তবে তালাবদ্ধ রুমে যে চিৎকার করে কান্নাকাটি করে সে নিশ্চয়ই কারো সাথে স্বাভাবিক কথা বলতে পারে না। তাহলে কি রুমের ভেতরে দুটো মানুষ? 

প্রথমদিন টিউশনে এবাসায় পড়াতে এসে সোফায় বসে ছিল আহিল। হঠাৎ করেই ড্রয়িং রুমের পেছনের বারান্দার পাশের রুম থেকে দুমদাম আওয়াজ। তার খানিক পর থেকেই ওই রুমের মধ্যে থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে হতভম্ব হয়ে গেছে আহিল। এর আগে তার সাথে কখনও এমন হয়নি। সে দুটো টিউশন পড়ায় এবং দুটো বাসার পরিবেশই বেশ নিরিবিলি। শান্ত পরিবেশ ছাড়া পড়ানো যায়? তার উপরে প্রথম দিন। অবশ্য এসব অশান্তি শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রের বাবার সাথে কথা হয়ে গেছে। সপ্তাহে চারদিন পড়াবে, মাসিক বেতন চার হাজার টাকা। তবে আহিল আরো কিছু বেশি বেতন আশা করেছিল, সে মাস্টার্স কমপ্লিট করা ছাত্র। যেন তেন অনার্স পড়ুয়া ছোকরা নয় যে চার হাজার টাকায় পড়াবে। নেহাৎ চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না, চাকরি খুঁজতে হচ্ছে তাই মাঝখান দিয়ে হাত খরচ তুলবার জন্য এই টিউশন পড়ানো। তবে আহিলের পড়াতে ভালোই লাগে। ছোটবেলায় তার বাবাকে দেখে শখ ছিল কোনো কলেজের প্রফেসর হবার‌। এখনও সেই শখ কিঞ্চিত রয়ে গেছে।

রুমের মধ্য থেকে চিৎকার বেড়েই চলেছে। কতবার মনে হচ্ছে কেউ দরজাই ভেঙে ফেলবে। এত জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে। ড্রয়িংরুমের সোফার পাশেই বারান্দার বড় থাই গ্লাস লাগানো দরজাটাও খোলা। তাই সোফায় বসলে পুরো বারান্দা এমনকি বারান্দার সাথে লাগোয়া ওই একটামাত্র রুমও স্পষ্ট চোখে পড়ে। এমনকি দরজায় লাগানো তালাটাও যে দরজা ধাক্কায় প্রচন্ডভাবে ঝাঁকুনি খাচ্ছে তাও স্পষ্ট। সোফায় বসে এসব দেখে কি যে অস্বস্তি হচ্ছে আহিলের! এদিকে ছাত্রও যে বইখাতা নিয়ে আসছি বলে সেই ভেতরে চলে গেল আর আসবার জো নেই। 

বিকট চেঁচামেচির শব্দে কানে তালা লেগে যাবার উপক্রম। একটু পর পর ঘড়ি দেখছে আহিল। মনে মনে একটা কথাই ভাবছে যে কখন এখান থেকে বেরোনো যায়। চার হাজার টাকা দিয়ে যেখানে একটা তালাবদ্ধ ঘর থেকে এত চিৎকার আসে, এবং সে রুম কেউ খোলেও না এমন রহস্যময় একটা বাসায় পড়ানোর ঝুঁকি নেয়া ঠিক না। খুঁজলে আরেকটা টিউশন ঠিক পাওয়া যাবে। আজকের দিনটা বেরোতে পারলে হয়। ঘড়ি জানান দিচ্ছে তার এখানে আসার আধঘন্টা হলো।



চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.