সৈয়দ মুজতবা আলী
সৈয়দ মুজতবা আলী আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা। বহুভাষাবিদ এই মানুষটি একই সঙ্গে পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট ছিলেন।
তাঁর পৈতৃক ভিটা সিলেটের মৌলভীবাজারে। সিলেটের গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন। ১৯২১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। ১৯২৬ সালে এখান থেকে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। অতঃপর দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে। মিসরের কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফারসি, হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মান, ইতালীয়সহ মোট ১৫টি ভাষা জানা মুজতবা আলী ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। পাণ্ডিত্য আর হৃদয়বেত্তার মিশেলে তিনি হাস্যরসকে সাহিত্যের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, কিছুটা প্রতিষ্ঠানবিরোধী এই মানুষটির জীবন পুরোপুরি রবীন্দ্ররসে জারিত ছিল। তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘এ আমি নিশ্চয় করে জানি যে, আমার মনোজগৎ রবীন্দ্রনাথের গড়া..।’
ডা. আবিদা সুলতানার স্বাস্থ্যপরামর্শ বিষয়ক নতুন বই "মানসিক স্বাস্থ্য"। অর্ডার করতে 01745676929 নাম্বারে আপনার নাম, ঠিকানা, কনটাক্ট নাম্বার লিখে ক্ষুদেবার্তা পাঠান।সাহিত্যে তাঁর হাতেখড়ি হয়েছিল শান্তিনিকেতনে অধ্যয়নকালে। এ সময় সত্যপীর, ওমর খৈয়াম, টেকচাঁদ, প্রিয়দর্শীসহ নানা ছদ্মনামে দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী পত্রিকায় লিখেছেন তিনি।
বিশ্বভারতী থেকে পড়া শেষে আফগানিস্তানের কাবুল কৃষিবিজ্ঞান কলেজে ফরাসি ও ইংরেজি ভাষার প্রভাষক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন সৈয়দ মুজতবা আলী।
তিনি বাংলা সাহিত্যে সরস রচনায় এক নবদিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের ভীষণ জনপ্রিয় লেখক। এরপরও লেখালেখিতে তাঁর অনীহা ছিল। তিনি বলতেন, ‘হাঁড়িতে ভাত থাকলে সাঁওতাল কাজে যায় না। আর আমার ড্রয়ারে টাকা থাকলে আমি লিখি না!’
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের গুপ্তচর সন্দেহে পুলিশি হেনস্তার মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। শান্তিনিকেতন ছেড়ে যেতে চাননি। কিন্তু পরিহাস তাঁকে ছেড়ে আসতে হয়েছে শান্তিনিকেতন।
১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
No comments