বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা, নারীদের অগ্রাধিকার
মন্ত্রিসভার আকার বাড়ছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে বরাতের ছুটির পর এই আকার বাড়তে পারে। আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভায় তিন-চারজন যুক্ত হচ্ছেন। এতে অগ্রাধিকার পাবেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্যরা। তবে ১৪ দলের শরিকদের কারও জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
সূত্র বলেছে, নতুনদের মধ্যে একজন আসতে পারেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। যিনি প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আগের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া একজনও ফিরতে পারেন সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হয়ে। এ ছাড়া সংসদের নতুন মুখের কেউ যুক্ত হতে পারেন মন্ত্রিসভায়। আলোচনায় আছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এবং রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার আকার বাড়ার আভাস দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার আকার বাড়ছে কি না–সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সচিবালয়ে তিনি বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন। তবে কিছু জায়গায়, যেমন শ্রম মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে কোনো না কোনো সময় মন্ত্রী আসবে। আমার মনে হয় সংরক্ষিত মহিলা আসনগুলো আসার পর মন্ত্রী আসতে পারে। সেখানে মহিলাও আসতে পারেন।’
আওয়ামী লীগ গত ১১ জানুয়ারি টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৬ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। যাঁদের মধ্যে সাতজন মন্ত্রী ও সাতজন প্রতিমন্ত্রী নতুন মুখ। আগের মন্ত্রিসভার ১৪ মন্ত্রী, ১২ প্রতিমন্ত্রী ও ২ উপমন্ত্রী বাদ পড়েন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে রাখা হয়।
আওয়ামী লীগের সূত্র বলেছে, মন্ত্রিসভার আকার বাড়লে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হবে। এর সঙ্গে আরও দু-একটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হবেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়া সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত করে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে। ওয়াসিকা আয়শা খান ও রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকেও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি করে মন্ত্রিসভায় যুক্ত করা হতে পারে। আহমদ কায়কাউস বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে তিন বছরের চুক্তিতে ছিলেন। তবে ৮ ফেব্রুয়ারি চুক্তি বাতিল করে তাঁকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁকে মন্ত্রিসভার সদস্য বা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করা হতে পারে।
সূত্র আরও বলেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কেবল মন্ত্রী রয়েছেন। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হলে এসব মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী পেতে পারে। আগের সরকারের মন্ত্রিসভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে মন্ত্রী এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে প্রতিমন্ত্রী ছিল। এবার এই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে। আগের মতো ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে টেকনোক্র্যাট পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনেকের নামই শোনা যাচ্ছে। তাঁদের কারও থাকার সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনি নাও হতে পারেন।
সূত্র বলেছে, পবিত্র শবে বরাতের পর মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে। কারণ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন আগামী ১৪ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি। সংরক্ষিত মহিলা আসনে সাধারণত দলীয়ভাবে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে না। ফলে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত যেতে হয় না।
জাতীয় সংসদের একজন হুইপ জানান, তিনজন নারীর প্রতিমন্ত্রী হওয়ার কথা শুনছেন। সংসদের আসনবিন্যাসের সময় গুরুত্বপূর্ণ তিনটি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। যেখানে সচরাচর প্রতিমন্ত্রীরা বসেন। তবে তিনজন, দুজন নাকি একজন হবেন, তা বুঝতে পারছেন না।
No comments