যে কারণে অবশ্যই খাবেন হলুদ দুধ
প্রাচীনকাল থেকেই হলুদমিশ্রিত দুধ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা, ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে এক গ্লাস হলুদদুধ হতে পারে প্রাকৃতিক সমাধান
দুধ অনেক স্বাস্থ্যকরী একটি উপাদান এটি আমরা কম-বেশি সবাই জানি। কিন্তু খুব সহজেই এটিকে আরও বেশি স্বাস্থ্যকর করে তোলা যেতে পরে তা জানেন না অনেকেই।
ঔষধি গুণাগুণসম্পন্ন হলুদ দুধের সঙ্গে মেশালে এর গুণাগুণ বেড়ে যায় অনেক বেশি। প্রাচীনকাল থেকেই হলুদমিশ্রিত দুধ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা, শারীরিক ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে এক গ্লাস হলুদমিশ্রিত দুধ হতে পারে প্রাকৃতিক সমাধান। এছাড়া যেকোন ধরনের সংক্রমণ সারাতেও হলুদমিশ্রিত দুধ বেশ উপকারী।
চলুন জেনে নেই নিয়মিত সন্তানকে হলুদ দুধ খাওয়ালে কী কী উপকার হয়,
১. রোগ-প্রতিরোধ বৃদ্ধি
হলুদে কারকিউমিন ভরপুর মাত্রায় থাকে। এই যৌগ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। হলুদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরের সব কোষকে নানা রকম ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা যেমন কমে, সংক্রমণ হলে তা সারেও সহজে।
২. প্রদাহ কমায়
হলুদ-দুধ শরীরে প্রদাহের প্রবণতা কমায়। ফলে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস এমনকি ক্যান্সারের আশঙ্কাও কমে নিয়মিত এই পানীয় খেলে।
৩. মস্তিষ্কের কার্য-ক্ষমতা বাড়ায়
নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ খেলে কারকিউমিনের প্রভাবে শরীরে ‘বিডিএনএফ’ নামে এক রাসায়নিকের পরিমাণ বাড়ে। এই যৌগ অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমায়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৪. সর্দি-কাশির প্রাকৃতিক সমাধান
শীতকালীন আবহাওয়ায় ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি লেগেই আছে। গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুলে খেলেই হবে সমস্যার সমাধান। তাই টানা কাশির হাত থেকে রেহাই পেতে রোজ রাতে ঘুমোনোর আগে গরম দুধে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে সন্তানকে খাওয়ালে ঠান্ডা থেকে দূরে রাখা যাবে। এ ছাড়া বড়রাও এই পানীয় খেলে উপকার পাবেন।
৫. ত্বকের উপকার
হলুদ-দুধ ত্বকে বয়েসের ছাপ পড়তেও বাধা দেয়। হলুদে থাকা বিভিন্ন যৌগ শরীরে কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এতে ভাল মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় ত্বকের জেল্লাও বাড়ে।
৬. ঘুমের সমস্যা দূর করে
হলুদের দুধ আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। তাই সন্তানের ভালো ঘুমের জন্য রোজ তাকে হলুদ দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। এছাড়া যাদের ইনসমনিয়া অথবা ঘুমের সমস্যা আছে তারাও হলুদমিশ্রিত দুধ পান করলে উপকার পাবেন।
৭. আঘাত ও রোগবালাই নিরাময় করে
দেহের বাইরের বা অভ্যন্তরীণ অংশে কোনো আঘাত থাকলে, হলুদমিশ্রিত দুধ পান করলে এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিরাময়ে সহায়তা করে। কারণ হলুদ দুধ অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যাকটিরিয়াকে বাড়তে দেয় না।
যেভাবে তৈরি করবেন হলুদমিশ্রিত দুধ
প্রয়োজনীয় উপকরণ
কাঁচা হলুদ: এক ইঞ্চি (টুকরা করা)
তরল দুধ: ২২০ মিলি
চিনি অথবা মধু: স্বাদমতো
গোলমরিচ গুঁড়া: এক চিমটি
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে একটি পাত্রে হলুদ কুঁচি ও দুধ একসঙ্গে ফুটিয়ে নিন। চুলা থেকে নামিয়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। গরম থাকতে থাকতেই ছেঁকে মধু অথবা চিনি মিশিয়ে নেবেন। গোলমরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে পরিবেশন করুন হলুদ-দিুধ। চাইলে কাঁচা হলুদের বদলে হলুদ গুঁড়া মিশিয়েও বানাতে পারেন হলুদমিশ্রিত দুধ।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
No comments