নিজে স্মার্ট হলে দেশও স্মার্ট হবে
স্মার্ট বা আধুনিক হতে কে না চায়! স্মার্ট হওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করেন। অন্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকেই নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে চান। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ কীভাবে অন্য মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয় সে বিষয়ে জানেন না। স্মার্ট হয়ে কথা বলার মাধ্যমে অন্যদের সহজেই প্রভাবিত করা যায়।
চিন্তা-চেতনা সুন্দর হলে আর সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে সেটা অবশ্যই স্মার্ট। যেসব মানুষের ভালো কাজ অন্যের জন্য উপকার বয়ে নিয়ে আসে তারাই প্রকৃত স্মার্ট। পোশাকে ও সাজসজ্জায় স্মার্টনেস থাকে না। পোশাকে-সাজসজ্জায় স্মার্ট ফুটিয়ে তুলতে হয়। পোশাক পুরান হতে পারে, ননব্র্যান্ড হতে পারে কিন্তু স্মার্ট হলে তা পরিষ্কার থাকতে হবে। আনস্মার্ট হলে অপরিষ্কার থাকবে। মানুষের সামনে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করার সবচেয়ে বড় দিক হলো চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার অর্থ হলো আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাসী মানুষকে সবাই পছন্দ করেন। তাই বলে কিন্তু আবার একনাগাড়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকবেন না।
মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় বিভিন্ন প্রসঙ্গ সামনে আসতে থাকে। আপনার কোনো প্রসঙ্গ সামনে এলে মানুষের কাছে নির্ভুল থাকুন। সব সময় নির্ভুল তথ্য দিন। এতে আপনার সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ দ্বিগুণ বাড়বে।
কথা বলার সময় শরীরের অঙ্গভঙ্গী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের অঙ্গভঙ্গীর কারণে অনেকে আপনাকে পছন্দ করতে পারে। শরীরের অঙ্গভঙ্গীর মাধ্যমে নিজেকে আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়।
কথা বলার সময় হাসির মাধ্যমে নিজেকে উপস্থাপন করলে মানুষ অনেক বেশি পছন্দ করে। হাসি বন্ধুত্বের নিদর্শন। হাসির মাধ্যমে নিজের ভেতরের সরলতা প্রকাশ করা যায়। তাই সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলার চেষ্টা করুন।
সহযোগিতা করার মানসিকতা থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে। শহুরে জীবনে মনে রাখা দরকার- আপনি যে ময়লা ফেলছেন সেটি কীভাবে ফেলছেন? রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে যে ময়লা ফেলেন সেটি কোথায় ফেলছেন? একটু খেয়াল করলে দেখবেন কোথায় ভুল হচ্ছে। ভুলটি শুধরাতে পারলেই আমরা স্মার্ট রাস্তাঘাট পাব এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পাব। এমন প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে সংশোধন করতে পারলে দেশ স্মার্ট হবে।
নিজের জ্ঞান বাড়াতে হবে। জ্ঞান বাড়ানোর জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। স্কুল-কলেজের বই হয়তো পড়তে ভালো লাগে না আপনার, তবে স্মার্ট হতে আপনাকে পড়তে হবে বই। আপনাকে জানতে ও শিখতে হবে। শুধু গল্পের বই নয়, পড়তে হবে ক্লাসিক বই, যা থেকে আপনি ইতিহাস, যুদ্ধ, টেকনোলজি ইত্যাদির ধারণা পাবেন। সব বিষয়ে না হোক, কোনো এক বিষয়ে আপনার বিস্তারিত জ্ঞান আপনাকে স্মার্ট প্রমাণ করবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে বুদ্ধিও ঝরঝরে থাকে। শরীর ফিট থাকলে চলাফেরায় আপনিই স্মার্টনেস এসে যায়।
নিজের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোও জরুরি। প্রতিদিন কিছুটা সময় নিজেকে দেবেন। সারা দিনে কী কী ভুল করলেন সেগুলো নিজেই নিজেকে বলবেন যাতে পরে আর সেই ভুলগুলো না হয়। টেকনোলজিকালি চ্যালেঞ্জড হয়ে থাকবেন না। অন্তত নিজের স্মার্টফোনটি স্মার্টলি ব্যবহার করতে শিখুন। সব সময় ফিটফাট থাকুন। এতে কনফিডেন্স বাড়বে যা স্মার্ট হওয়ার পূর্বশর্ত।
স্মার্ট হওয়ার ক্ষেত্রে মানুষ সাধারণত শর্টকাট পথই বেছে নেয়। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক বগদান এমন করেই বলেছেন। এর কারণ হলো মানুষ খুব জলদি ও সহজ বিষয়ের ওপরে অন্যকে বিচার করে। তবে এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মানসিকতা বা মতামত এক হতে হবে। ‘আয়ারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিক’-এর মনোবিজ্ঞানী এরিক বলেন, যদি অন্যপক্ষের চিন্তাধারা বা স্মার্টনেসের সংজ্ঞা এক না হয় তাহলে প্রথম ইম্প্রেসনের এই জাদু নাও কাজ করতে পারে।
একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত, মানুষ নিজেকে অন্যের সামনে স্মার্ট বা বুদ্ধিমান দেখাতে নানা কৌশল প্রয়োগ করে থাকেন। তবে হ্যাঁ, নিজে থেকে প্রয়োগ করা কৌশলগুলো অনেক সময় তাদের স্মার্টের পরিবর্তে বোকা হিসেবে প্রমাণ করেছে। ঘাবড়াবেন না! আপনার সঙ্গে যেন এমন কোনো ভুল না হয়।
No comments