Adsterra

ভোলার ঐতিহ্য আব্দুল জব্বার মিয়া জমিদার বাড়ি

 
ভোলার ঐতিহ্য আব্দুল জব্বার মিয়া জমিদার বাড়ি, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, আব্দুল জব্বার মিয়া মৃত্যুবরণ করেন ৯৬ বছর বয়সে ১৩৪১ সালে, Today Trending News

ভোলার ঐতিহ্য আব্দুল জব্বার মিয়া জমিদার বাড়ি।

বোরহানউদ্দিন , ভোলা।
ইলিশের নগর ভোলা ,সৌন্দর্য্যের নগরী অথবা দ্বীপ রাজ্য ভোলা আপনারা যাই বলে একে পরিচয় করিয়ে দেন তাতেই এই জেলা পরিচিত লাভ করবে।ভোলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কারনে যতটা পরিচিত ততটা ঐতিহাসিক ভাবে পরিচিত লাভ করতে পারেনি। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই দ্বীপময় ভোলায় শতশত বছরের পুরাতন ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে।আজ আপনাদের সামনে তেমনই একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি নিয়ে আলোচনা করবো।
ভোলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বোরহানউদ্দিন উপজেলা, যা এক সময় কালীগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। এখানেই দেখা মেলে ইতিহাস ঐতিহ্যের এক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা ‘আব্দুল জব্বার মিয়া বাড়ি’ (জব্বার আলয়)।
এ জমিদার বাড়িটির দালান কোঠার দিকে তাকালে মনে হবে একেকটি শহর। বাড়িটির প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল জব্বার চৌধুরীর নাম ছড়িয়ে রয়েছে সমগ্র জেলাজুড়ে।
জেলার বিশিষ্ট পরিবারগুলোর মধ্যে এ পরিবারটি অন্যতম। প্রায় চার হাজার একর সম্পত্তির মালিক ছিলেন জমিদার আব্দুল জব্বার মিয়া।
১২৫৫ সালে জম্মগ্রহণ করেন তিনি। পুরো এলাকায় সমাজ সেবক ও দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত আব্দুল জব্বার মিয়া মৃত্যুবরণ করেন ৯৬ বছর বয়সে ১৩৪১ সালে। দীর্ঘ বছর জমিদারি করে গেছেন তিনি। ১৩৩৭ সালের দিকে তিনি তার জমিদারির সব সম্পত্তি ওয়াকফ করে দেন।
তার চার ছেলের মধ্যে মজিবুল হক চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সাবেক সংসদ সদস্য কৃষক প্রজা পার্টির ভোলা মহকুমার প্রধান নেতা ও বরিশাল জেলা বোর্ডের সদস্য ছিলেন। মজিবুল হকের ছেলে রেজা-এ-করিম চৌধুরী (চুন্নু মিয়া) ছিলেন ভাষা সৈনিক ও এমএলএ। এ বাড়িতে এখন তাদের পরবর্তী বংশধররা বসবাস করে আসছেন। অতিথেয়তা এ পরিবারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
আব্দুল জব্বার মিয়া বাড়িটি বোরহানউদ্দিন তথা পুরো জেলার ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। বাড়িতে দুই/তিনতলা দৃষ্টিনন্দন ১২টি ঘর রয়েছে। যা ইট, সুরকি, লোহা ও কাঠ দিয়ে তৈরি। প্রতিটি ঘরই দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য খচিত। বাংলা ১৩১৯ সাল থেকে ১৩৫১ সালের বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ করা হয় ঘরগুলো। বাড়ির সামনেই রয়েছে বৈঠকখানা। সেখানে এখনো ‘টানা পাখা’ জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য বহন করছে। বাড়ির পেছনেই রয়েছে বিশাল দীঘি ও ঘাট।
বর্তমানে আব্দুল জব্বার মিয়া বাড়ি বা কুতবা মিয়া বাড়ি নামে পরিচিত এ জমিদার বাড়িতে তাদের বংশধররাই বসবাস করে আসছেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও পুরো বাড়িটি এখনো সেই জমিদারির গৌরব বহন করে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রাচীনতম এ জমিদার বাড়িতে মাঝে মধ্যেই দর্শনাথীদের ভীড় দেখা যায়। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন বাড়িটি দেখতে। জমিদার আব্দুল জব্বার মিয়া মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জমিদারি করেছেন।
জমিদার বাড়িটি দেখতে হলে যেতে হবে ভোলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। সরাসরি বাসে বোরহানউদ্দিন যেতে হবে। এরপর রিকশা বা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে জমিদার বাড়িতে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কেউ আসতে চাইলে সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠে সরাসরি বোরহানউদ্দিন শহরে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে টেম্পো, অটোরিকশার বা রিকশায় জমিদার বাড়িতে যাওয়া যাবে। এছাড়া ঢাকার সদরঘাট থেকে সরাসরি ভোলা শহরের লঞ্চঘাটে নেমে যাওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে টেম্পো বা অটোরিকশায় করে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে নামতে হবে। তারপর বাসে বোরহানউদ্দিন গিয়ে তিন চাকার কোনো গাড়িতে যাওয়া যাবে জমিদার বাড়িতে।

চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com 

No comments

Powered by Blogger.