Adsterra

৩০০ বছরের পুরাতন যে জমিদার বাড়ির শাসন ছিলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনার বিস্তৃত হাওর জুড়ে।

 
৩০০ বছরের পুরাতন যে জমিদার বাড়ির শাসন ছিলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনার বিস্তৃত হাওর জুড়ে, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News

৩০০ বছরের পুরাতন যে জমিদার বাড়ির শাসন ছিলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনার বিস্তৃত হাওর জুড়ে।

সুখাইর জমিদার বাড়ি।
ধর্মপাশা,সুনামগঞ্জ।
এক দুর্দান্ত সমুদ্র কালিদহ। যা আজ সমুদ্র থেকে অনেক অনেক দূরে কালের গর্ভে হারানো। তবে একদা হাওর-বিলের একাকার রূপে কালিদহ ছিল, তারই তীরের স্থাপনা সুখাইড় জমিদার বাড়ি। বলা হয় ভাটিবাংলার রাজমহল।
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নে সুখাইড় গ্রামে বাড়িটির অবস্থান। সুখাইড় জমিদার বাড়ি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। প্রয়োজনীয় সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ ও সরকারি নজরদারির অভাবে মোগল আমলের এই স্থাপনাটি ধ্বংস হতে চলেছে। তবুও এ জমিদার বাড়ি দেখতে সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী-পর্যটকেরা ভিড় করেন।
স্থানীয় ইতিহাসে উল্লেখ আছে, ১৬৯১ সালে মোগল শাসনামলে মহামানিক্য দত্ত রায় চৌধুরী হুগলী থেকে আসাম যাওয়ার পথে কালিদহ সাগরের স্থলভূমি প্রাকৃতিক রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে সুখাইড়ে জায়গা কিনেন। ১৬৯৫ সালে জমিদার মোহনলাল ২৫ একর জমির ওপর এ বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। সুখাইড় জমিদার বাড়ি দৃষ্টিনন্দন নির্মাণ শৈলীর কারণে হাওর এলাকার রাজমহল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
জমিদারী প্রথা বিলীন হলেও এখনো তা বেশ আকর্ষণীয় এ জমিদার বাড়ি। বর্তমানে অযন্তে অবহেলায় প্রতœতত্বেরে সম্ভাবনাময় স্থান এবং মোগল আমলের নিদর্শনসমূহ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এককালে যে জমিদার বাড়িকে আবর্তিত করে পরিচালিত হতো প্রজাব্যবস্থা তার চার ভাগের মধ্যে এখনো বড়ো বাড়ি, মধ্যম বাড়ি ও ছোট বাড়ি টিকে আছে।
বাড়ি ঘিরে আছে নানা কাহিনি। কথিত আছে, জমিদারি বিলোপের পর বাড়িগুলোর অনেক বদ্ধ ঘর ও সিন্দুক রয়েছে যা আজো খোলা যায়নি। অযতেœ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাড়ির দেয়ালের নান্দনিক কারুকার্যসমূহ। কথিত আছে জমিদারি পরিদর্শন করতে এসেছিলেন ইংরেজ প্রশাসক মি. বেলেন্টিয়ার। তিনি বেরিয়েছিলেন অদূরবর্তী টাঙ্গুয়ার হাওরে শিকার করতে। সে সময়ই বেলেন্টিয়ারের হাতিকে তিনটি বাঘ আক্রমণ করে। মুহূর্তের মধ্যে বেলেন্টিয়ার জ্ঞান হারিয়েছিলেন। তখন সুখাইড়ের জমিদার মথুর চৌধুরী তিনটি বাঘকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর বেলেন্টিয়ার জমিদারকে নিজের রাইফেলটি উপহার দিয়ে দেন।
১৯২২-২৩ সালে সুখাইড়ে গড়ে ওঠা প্রবল নানকার বিদ্রোহ জমিদারী প্রথার ভিত্তি নাড়িয়ে দিয়েছিল। ইতিহাসের অনেক কাহিনি বিজড়িত এই জমিদার বাড়ি। ঐতিহ্যময় স্থাপত্যটি রক্ষায় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন সুখাইড়বাসী।
দর্শনার্থীরা বলছেন, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এক অপরূপ পর্যটন নগরীতে পরিণত হতে পারে হারানো কালিদহের স্মৃতিচিহ্নের সুখাইড় জমিদার বাড়ি।

চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com 

No comments

Powered by Blogger.