Adsterra

কোন পাঁচটি পরিবার এশিয়ার শীর্ষ ধনী

ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Today Trending News, Today Viral News, Top News, Hot News, bangla news,


এশিয়ার শীর্ষ পাঁচ ধনী পরিবারের মধ্যে দুটিই ভারতের। এ ছাড়া এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং থাইল্যান্ডের তিনটি পরিবার। সম্মিলিত ভাবে এই পাঁচটি পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ২৪৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ব্লুমবার্গের প্রকাশিত সম্পদের বিবরণ অনুযায়ী, তালিকাটিতে একবার চোখ রাখা যাক—



আম্বানি পরিবার, ভারত

তালিকার এক নম্বরেই আছে ভারতের আম্বানি পরিবার। এই পরিবারের সম্পদ এসেছে সমষ্টিগতভাবে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে। পেট্রোকেমিক্যাল, টেলিকম, খুচরা এবং আর্থিক পরিষেবাসহ অসংখ্য খাতে এই কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে।

মূলত সুতা ব্যবসায়ী ধীরুভাই আম্বানির হাতে ১৯৬৬ সালে ছোট টেক্সটাইল কারখানার মধ্য দিয়ে রিলায়েন্স গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। ২০০২ সালে ধীরুভাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র মুকেশ ও অনিল আম্বানি পারিবারিক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ভাগ করে নেন। এর মধ্যে ছোট ভাই অনিল ব্যবসায় বিপুল লোকসান দিয়ে একপর্যায়ে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। তবে বড়ভাই মুকেশ আম্বানি তাঁর ব্যবসাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান এবং পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ঠাঁই পান।

রিলায়েন্স গ্রুপের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের মার্চ অর্থাৎ চলতি মাসে ২৩৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন বাজারমূল্য নিয়ে এটি এখন ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি করপোরেশন। আর ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আম্বানি পরিবারের সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। মুকেশ আম্বানির দুই ছেলে—আকাশ ও অনন্ত আম্বানি এবং এক মেয়ে ইশা আম্বানি।

সম্প্রতি অনন্ত আম্বানি ও তাঁর বাগ্‌দত্তা রাধিকা মার্চেন্টের বিবাহপূর্ব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গসহ বিশ্বের নামি–দামি বহু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠান সফল করতে আম্বানি পরিবার ১৫১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকারও বেশি।



দ্য হরটোনোস পরিবার, ইন্দোনেশিয়া

তালিকার দুই নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার হরটোনোস পরিবারের বিপুল সম্পদের সূচনা হয়েছিল ওয়েই–উই–গনের হাত ধরে। ১৯৩০–এর দশকে তিনি একটি আতশবাজির কারখানা চালাতেন। পরবর্তীতে ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ক্রেটেক সিগারেট ব্র্যান্ড কিনে নেন। ১৯৫০ সালে সেই সিগারেট ব্র্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখেন জারুম। এই সিগারেট দ্রুত বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

১৯৬৩ সালে ওয়েই–উই–গনের মৃত্যুর পর তাঁর সব সম্পদের মালিক হন দুই ছেলে রবার্ট বুদি হরটোনো এবং মাইকেল বামবাং হরটোনো। সিগারেট ব্যবসার পুঁজিকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে হরটোনো ভাইয়েরা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ‘সেন্ট্রাল ব্যাংক এশিয়া’ অধিগ্রহণ করেন। এটিই এখন তাঁদের সম্পদের প্রাথমিক উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি তাঁরা অনলাইন মল ব্লিব্লি–এর সঙ্গে ই–কমার্স খাতেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন।

ব্লুমবার্গের তথ্য মতে, গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত হরটোনো পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।



মিস্ত্রি পরিবার, ভারত

এই পরিবারের অর্থের উৎস শাপুরজি পালোনজি (এসপি) গ্রুপ। ১৮৬৫ সালে এই উদ্যোগের সূচনা করেন ভারতের প্রয়াত বিলিয়নিয়ার পালোনজি মিস্ত্রির দাদা। এই কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নির্মাণসহ একাধিক খাতে বিনিয়োগ রয়েছে।

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের টাটা গ্রুপের সঙ্গে এসপি গ্রুপের কয়েক দশকের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং আইনি জটিলতার কারণে মিস্ত্রি পরিবারের এসপি গ্রুপ ১৫০ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের টাটা গ্রুপের ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ অংশীদারত্ব পেতে ব্যর্থ হয়।

২০২২ সালে ৯৩ বছর বয়সে মারা যান পালোনজি মিস্ত্রি। তাঁর বড় ছেলে শাপুর মিস্ত্রি বর্তমানে পারিবারিক ব্যবসার চেয়ারম্যান। গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মিস্ত্রি পরিবারের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ছিল বলে ধারণা করা হয়।



কোওক পরিবার, হংকং

কোওক পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছিল কোওক তাক–সেংয়ের হাত ধরে। ১৯৬৩ সালে তিনি ‘সান হাং কাই’ এন্টারপ্রাইজ সহ–প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৭২ সালে ওই প্রতিষ্ঠানটি সান হাং কাই প্রপার্টিজ নামে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বেশ কয়েক দশক পাড়ি দিয়ে সেই কোম্পানি এখন হংকংয়ের অন্যতম বড় লাভজনক প্রতিষ্ঠান।

কোওক তাক–সেংয়ের তিন পুত্র: ওয়াল্টার, থমাস এবং রেমন্ড কোওক। ১৯৯০ সাল থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে তাঁরা পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন। তবে পারিবারিক কলহের কারণে বর্তমানে রেমন্ড কোওক সান হাং কাই প্রপার্টিজের একমাত্র চেয়ারম্যান।

ব্লুমবার্গের মতে, গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত কোওক পরিবারের সম্মিলিত সম্পদ ছিল ৩২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।



শেরাভানন্ত পরিবার, থাইল্যান্ড

চীনা বংশোদ্ভূত চিয়া–এক–শোর ১৯২১ সালে থাইল্যান্ডে চলে এসেছিলেন এবং তাঁর ভাইকে সঙ্গে নিয়ে সবজির বীজ বিক্রির একটি দোকান দেন। সেদিনের সেই ছোট্ট ব্যবসাটি ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের ব্যবধানে আজ চারোয়েন পোকফান্ড গ্রুপ (সিপি) হয়ে উঠেছে। এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম পশুখাদ্য এবং পশুসম্পদ উৎপাদনকারী। পাশাপাশি চীনা এবং হংকংয়ের বিমা ও টেলিকম খাতেও এই গ্রুপের বিনিয়োগ রয়েছে। তারা থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় খুচরা চেইনশপ টেস্কোরও মালিক।

বর্তমানে চিয়ার ছেলে ধানিন শেরাভানন্ত সিপি গ্রুপের সিনিয়র চেয়ারম্যান। ব্লুমবার্গের মতে, গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শেরাভানন্তের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

No comments

Powered by Blogger.