জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিল হামাস
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন প্রস্তাব পেশ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মধ্যস্থতাকারীদের এবং যুক্তরাষ্ট্রকে পাঠানো সেই প্রস্তাবে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
হামাস যেসব বন্দীর মুক্তি চেয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১০০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। হামাস বলেছে, তাদের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে মুক্তি দেওয়ার তালিকায় শুরুতেই রাখা হবে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের। প্রস্তাব অনুসারে, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ৭০০ থেকে ১ হাজার ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ‘অবাস্তব’ দাবির ওপর ভিত্তি করে প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় এবং পরে বর্ধিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে।
মধ্যস্থতাকারী মিসর ও কাতার ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা করছে। কারণ, বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার এক-চতুর্থাংশ মানুষই এখন দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। গাজাবাসী গভীরতর মানবিক সংকটের সম্মুখীন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে প্যারিসে অনুষ্ঠিত গাজার যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনা থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব পেয়েছিল হামাস। সেখানে বলা হয়েছিল, গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি হবে এবং এই সময়সীমার মধ্যে সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস; আর প্রতি একজন জিম্মির মুক্তির পরিবর্তে কারাগার থেকে ১০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
তবে হামাস-ইসরায়েল উভয়ই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। প্রস্তাবটি মেনে না নেওয়ার কারণ হিসেবে হামাসের মুখপাত্ররা তখন বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতির ৪০ দিন গাজা থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে, তাহলে চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে তারা। হামাস চায় যুদ্ধের সমাপ্তি।
গাজায় ত্রাণ সংগ্রহকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গুলি, নিহত বেড়ে ২০গাজায় ত্রাণ সংগ্রহকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গুলি, নিহত বেড়ে ২০
সর্বশেষ প্রস্তাবে হামাস বলেছে, জিম্মি ও বন্দীদের প্রাথমিক বিনিময়ের পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতির তারিখ নির্ধারণে আলোচনা হবে। পাশাপাশি গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের সময়সীমাও তখন নির্ধারণ করা হবে। হামাস আরও বলছে, পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ে উভয় পক্ষের সব আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের প্রধান লক্ষ্য হলো হামাসকে চিরতরে নির্মূল করা; তাই এমন কোনো শর্ত তারা অনুমোদন করবে না—যা এই লক্ষ্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে বিবৃতি দেওয়ার কিছু সময় পর পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছরগুলোর মতে এ বছরও এই মাসের পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।’
No comments