গানের সুরে কুরআন তেলাওয়াত: ইসলাম কী বলে?
মহান রব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনকে আরবি ভাষায় অবতীর্ণ করেছেন। আরবি সঠিক উচ্চারণ মেনে তিলাওয়াত করা অপরিহার্য। শুদ্ধ ও তারতিলের (ধীরস্থিরতা) সঙ্গে কোরআন পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত, ৪)।
তারতিলের সঙ্গে সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াত করা প্রশংসনীয় কাজ। বিভিন্ন হাদিসে এ বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াত করতে গিয়ে অনেকেই গানের সুরে তিলাওয়াত করে থাকেন। হাদিসের আলোকে আলেমরা এ বিষয়টি থেকে অনুৎসাহিত করেন এবং একে নিষিদ্ধ বলে থাকেন।
এ বিষয়ে এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা আরবদের সুর ও উচ্চারণে কোরআন পড়। ফাসেক ও আল্লাহদ্রোহীদের সুর নকল করো না। কারণ, আমার পর অচিরেই এমন এক সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, যারা গানের সুরে ভাড়াটে ক্রন্দনকারীনীদের মতো বিলাপ করে কোরআন তিলাওয়াত করবে। কোরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তাদের ও তারা যাদের মুগ্ধ করবে তাদের অন্তর হবে ফেতনাময়।’ (শুআবুল ঈমান, হাদিস, ২৪০৬)
এছাড়া আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কোরআন পড়ে যাতে তোমরা (ঈমানদাররা) মনে করো, তারা কোরআন থেকেই তিলাওয়াত করছে। অথচ তারা যা পড়ছে তা আদৌ কোরআন নয়। আর তারা বলে এসব কথা আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহর প্রতিই মিথ্যারোপ করে।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ৭৮)
গানের সুরে কোরআন তিলাওয়াত করা কেয়ামতের অন্যতম আলামত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ছয়টি বিষয় আগমনের পূর্বে মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করো। তার মধ্যে একটি হলো, বাদ্যযন্ত্রের সুরে কোরআন তিলাওয়াত করা, গানের সুরে তিলাওয়াতের জন্য তাদের প্রাধান্য দেওয়া, যদিও তারা জ্ঞানে স্বল্প।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ১৬০৮৩)।
No comments